রাজনীতি

পরকীয়া বহুবিবাহ এবং বিড়ালের মন!

ঘরে দেবতার মতো স্বামী। দুটো ফুটফুটে বাচ্চা, বড়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে এবং ছোটটি একটি নামকরা স্কুলে। মহিলার বয়স প্রায় ৫০ হতে চলল। সারাক্ষণ ধর্মীয় লেবাসে থেকে মুখে বড় বড় নীতিকথা বলে বেড়ান এবং সুযোগ পেলেই প্রভাবশালী ও ধনাঢ্য পুরুষদের পিছু নেন। তার স্বামীদেবতা স্ত্রীর চরিত্র সম্পর্কে বেখবর নন, সন্তানরাও মায়ের অনৈতিক জীবন সম্পর্কে অবহিত কিন্তু সবাই মহিলার পিতার রেখে যাওয়া বিত্তের কাছে অসহায়। দীর্ঘদিন ঘরজামাই হিসেবে বসবাস করার পর স্বামীপ্রবরের মনমানসিকতা স্ত্রীর অনৈতিক চালচলনের সঙ্গে এমনভাবে খাপ খেয়ে গেছে যে, স্ত্রীর পরকীয়ার নতুন নতুন শিকারের হালনাগাদ তথ্য স্বয়ং স্ত্রীর মুখ থেকে না শুনলে স্বামীদেবতার পেটের ভাত ঠিকমতো হজম হয় না। সন্তানরাও মায়ের প্রেমিকদের সঙ্গে অবাধে মেলামেশা করে এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি করে তোলে যা দেখে বাইরের লোকের বোঝার উপায় নেই যে উধার মে কুছ গড়বড় হ্যায়!

এবার মহিলা বাদ দিয়ে অদ্ভুত এক বিয়েপাগলা লোকের কাহিনী বলি। ভদ্রলোকের বয়স প্রায় ৫০ বছর। কর্মজীবনে বিশেষ করে অর্থ উপার্জনে তার সফলতা রীতিমতো বিস্ময়কর। তিনিও সারাক্ষণ বাহারি নীতিকথা বলে বেড়ান। ভদ্রলোকের স্ত্রী এবং পরিণত বয়সের দুই কন্যা অবাক বিস্ময়ে সারাক্ষণ ভাবেন— লোকটি তো তেমন লেখাপড়া করেন না তবে এত নীতিকথা শিখলেন কোথায়। কিন্তু তারা স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেননি যে, তাদের সামনে নীতিকথা বলা মানুষটি গোপনে তিন-চারটি বিয়েথা করেও ক্ষান্ত হচ্ছেন না নিত্যনতুন মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন এবং নানা ফাঁদ ও প্রলোভনে ফেলে কন্যার বয়সী মেয়েদের বিয়ের জন্য নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

উল্লিখিত দুটি ঘটনার পূর্বাপর কাহিনী, পতি-পাতিদের মনমানসিকতা, পরিবারের লোকজনের আচরণ এবং সমাজ-রাষ্ট্রের নির্লিপ্ততা মূল্যায়ন করলে নারী-পুরুষের পরকীয়া অথবা তাদের বহুবিবাহের বাতিক সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ করা যাবে। মানুষ কীসের জন্য এবং কখন পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে অথবা কেন কিছু লোক বহুবিবাহে আসক্ত হয়ে নানামুখী ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন। এটা কি কেবল যৌনসুখের জন্য নাকি মানসিক বৈকল্যের কবলে পড়ে অদম্য লিপ্সায় তাড়িত হওয়ার কারণে। এরা কি এসব করে জীবনের সত্যিকার স্বাদ-আহ্লাদ এবং সুখ-শান্তি লাভ করতে পারেন নাকি সুখের লাগিয়া বাহির হইয়া অসুখে আক্রান্ত হওয়ার মাধ্যমে ভবলীলা সাঙ্গ করেন। এসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার আগে এককথায় বলে নিতে চাই যে, পরকীয়ার পাত্র-পাত্রী অথবা বহুবিবাহের স্বামী-স্ত্রী কখনো সুখী হতে পারেন না। কেন পারেন না তা অনুধাবন করার জন্য একটি বোকা বিড়াল ও তার মালিক সম্পর্কে বিড়ালের চিন্তাভাবনা নিয়ে সাম্প্রতিককালে প্রকাশিত একটি চাঞ্চল্যকর গবেষণা প্রতিবেদন সম্পর্কে কিছু বলা আবশ্যক।

অনাদিকাল থেকেই তাবৎ দুনিয়ায় বিড়াল একটি প্রিয় পোষা প্রাণী হিসেবে স্বীকৃত। অবোধ শিশু থেকে শুরু করে নানা বয়সের নারী-পুরুষ বিড়াল পুষতে ভালোবাসেন। বিশ্বের অনেক নামকরা রাজা-বাদশাহ, ধর্মপ্রচারক, কবি-সাহিত্যিক থেকে শুরু করে আন্ডারওয়ার্ল্ডের ডন, গহিন অরণ্যের দস্যুরাজ বা গভীর সমুদ্র-মহাসমুদ্রের ভয়ঙ্কর জলদস্যুর সরদাররা আদর করে বিড়াল পোষেন। সেই আদরের বিড়াল তার প্রভু সম্পর্কে কী ধারণা পোষণ করে তা জানার জন্য একদল বিজ্ঞানী দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করে আসছিলেন। তারা বিড়ালের মনের ওপর গবেষণা করে জানলেন যে, প্রতিটি পোষা বিড়াল তাদের মালিকদের মনে করে মালিকরাও তাদের মতোই বিড়াল। তবে পার্থক্য হলো মালিকরা একটু বড় আকৃতির বিড়াল। তাদের শক্তি ও ক্ষমতা পোষা বিড়ালদের থেকে সামান্য বেশি।

পোষা বিড়ালের মতোই পরকীয়া বা বহুবিবাহের পাত্র-পাত্রীরা একে-অন্যকে চরিত্রহীন, ব্যক্তিত্বহীন, বেইমান, মোনাফেক, স্বার্থপর ও লোভী মনে করে। তারা পরস্পরের কাছাকাছি হয় মূলত নিজের কতিপয় বিকৃত কামনা-বাসনা অথবা হতাশা নতুবা ভোগ করার সুতীব্র বাসনা চরিতার্থ করার জন্য। প্রথম উদাহরণটির পাত্র-পাত্রীদের চরিত্র বিশ্লেষণ করলে পরকীয়া সম্পর্কে একশ্রেণির মানুষের আগ্রহের কারণ খুঁজে পাওয়া যাবে। ভদ্রমহিলা যখন সবে ১৪-১৫ বছরের কিশোরী ঠিক তখনই তার বাবা জোর করে একজন বয়স্ক লোকের সঙ্গে কন্যার বিয়ে দিয়ে দেন। মেয়েটি মনে করতেন যে সে অনেক সুন্দরী। সুতরাং তার পাত্র হবে রাজপুত্র, মন্ত্রীপুত্র অথবা কোতোয়ালপুত্র প্রকৃতির। কিন্তু বাস্তবে যখন সে তার পিতার বয়সী শুশ্রূমণ্ডিত বেঢপ এক বয়স্ক লোককে স্বামী হিসেবে পেল তখন তার রূপসী মনের বর্ণিল আভিজাত্য ও উচ্চাশা মারাত্মকভাবে অপমানিত ও লাঞ্ছিত হতে থাকল। সে ধীরে ধীরে বড় হতে লাগল এবং আপন কামনা-বাসনা চরিতার্থ করার জন্য বিকল্প পথ খুঁজতে আরম্ভ করল।

মহিলাটির স্বামী তার বিয়ের প্রথম দিন থেকেই হীনমন্য ও হতোদ্যম ছিলেন। তিনি তার শ্বশুরের অর্থবিত্তের প্রতি যেমন লোভী ছিলেন তেমন স্ত্রীর কচি বয়সের রূপলাবণ্য এবং নিজের প্রবীণত্ব ও গ্লামারহীন অভিব্যক্তির কারণে মানসিকভাবে দুর্বল ছিলেন। তিনি স্ত্রী-তোষণের মাধ্যমে নিজের হীনমন্যতাকে আড়াল করতে গিয়ে এমন ব্যক্তিত্বহীন হয়ে পড়েন যে তার মধ্যে এবং একটি পোষা বিড়ালের মধ্যে চরিত্রগত দিক থেকে পার্থক্য নিরূপণ করা সত্যিকার অর্থে কঠিন হয়ে পড়ে। এভাবে বহু বছর কেটে যাওয়ার পর মহিলাটির পিতা মারা যান। মহিলা পিতার ব্যবসা-বাণিজ্য, ধনসম্পত্তি তদারক করতে গিয়ে অবাধে নানা পেশা ও শ্রেণির মানুষের সঙ্গে মিশতে গিয়ে নিজের মধ্যকার লুক্কায়িত কামনাকে চরিতার্থ করার মোক্ষম সুযোগ পেয়ে যান। প্রথম দিকে কিছুটা রাখঢাক ছিল। কিন্তু কিছুদিন পর তিনি প্রভাবশালী প্রেমিকদের ছত্রচ্ছায়া পেয়ে নিজের পরিবার, পরিবেশ ও প্রতিবেশকে তখন এমনই করায়ত্ত করে ফেললেন যে, তার কুকর্মগুলো দিব্যলোকে দৃশ্যমান হলেও লোকজন মেনে নিতে বাধ্য হলো।

এবার বিয়েপাগলা পুরুষটি সম্পর্কে কিছু বলি। ভদ্রলোকের শৈশবকালের দুটো স্মৃতি তাকে প্রথমে দ্বিতীয় বিবাহ এবং পরবর্তীতে বহুবিবাহে প্রলুব্ধ ও প্ররোচিত করতে থাকে। পুরুষের মাথার ঠিক মধ্যখানের চুলে এক ধরনের কুণ্ডলী থাকে যাকে স্থানীয় ভাষায় মোড়া বলা হয়। কারও মাথায় একটি মোড়া আবার কারও মাথায় দুটি মোড়া থাকে। স্থানীয় কুসংস্কারমতে, মুরব্বিরা কোনো শিশুর মাথায় দুটি মোড়া দেখলে তমসাচ্ছলে বলতেন, এই ছেলেটার দুটো বউ হবে। আমাদের নিবন্ধের নায়কের মাথায় দুটি মোড়া থাকার কারণে সে শৈশব থেকেই দুটি বিবি এবং বিয়ে নামক কথাটি শত সহস্রবার শুনতে শুনতে ওগুলোর প্রতি এক ধরনের আসক্তি অনুভব করতে থাকেন। ফলে সে ৯-১০ বছর বয়স থেকেই বিয়ে করার জন্য এবং একই সঙ্গে দুটি বিয়ে করার জন্য মনকে শক্ত বানিয়ে ফেলেন। পরবর্তীতে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার সমবয়সীরা যখন প্রেমের জন্য ইতিউতি করতেন ঠিক সেই সময়ে তিনি চলতে ফিরতে দুই পাশে সুন্দরী দুই বউ নিয়ে রংতামাশার স্বপ্ন নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন এবং চলতি পথে যদি কোনো পছন্দসই মেয়ে দেখতেন অমনি তাকে আপনমনে বউ বানিয়ে কল্পনার পানসীতে পাল উড়িয়ে সমুদ্রযাত্রার মাধ্যমে বাসর রচনা করতেন। ওই অবস্থায় নায়ক পারিবারিক পছন্দের প্রথম বিয়েটি করার বছরখানেকের মধ্যেই দ্বিতীয় বিয়ে করে ফেললেন।

ভদ্রলোকের দ্বিতীয় বিয়ে করার সাহস, শক্তি অর্জন ও লোভ-লালসায় জড়িত হওয়ার পেছনে শৈশবের একটি ঘটনা এবং পরিণত বয়সের একাধিক ঘটনা তার ওপর ভীষণ প্রভাব বিস্তার করে। তার বয়স যখন ১২-১৩ বছর সে তখন কোনো এক বর্ষাকালে গ্রামের ছোট একটি বাজারের মুদি দোকানে বসে কয়েকজন মুরব্বির কথা শুনছিলেন। হঠাৎ করে অঘোরে শুরু হলো রিমঝিম বৃষ্টি। একজন মুরব্বি সেই বৃষ্টি উপেক্ষা করে বাড়ির দিকে যেতে উদ্যত হতেই অন্যরা টিপ্পনি কেটে বললেন যাও-যাও বাড়ি যাও। বৃষ্টির মধ্যে দুই বউ নিয়ে মজা কর। লোকটি উচ্চৈঃস্বরে হেসে উঠলেন। তারপর গলায় একটা সুখী সুখী ভাব ফুটিয়ে তুলে বললেন, বৃষ্টির মধ্যে কাঁথার নিচে শুয়ে দুই বউ দুই দিক থেকে চাপ দিলে কেমন লাগে তা তোমরা কী করে বুঝবা। লোকটি বৃষ্টি উপেক্ষা করে গৃহাভিমুখে চললেন এবং পেছনে তার সমবয়স্ক লোকদের হাসি-বিদ্রূপের সঙ্গে একজন বালকের মনে অদ্ভুত লালসার সৃষ্টি করে গেলেন।

আজকের নিবন্ধের নায়ক তার বয়ঃসন্ধিক্ষণ থেকেই একাধিক বিয়ের কথা ভাবতে লাগলেন এবং যেসব পুরুষ একাধিক বিয়ে করেছেন তাদের সঙ্গে খায়-খাতির করে বহুবিবাহের দাম্পত্যসুখ অনুমানের চেষ্টা চালাতে লাগলেন। এ অবস্থায় পরিণত বয়সে এসে সে যখন সত্যি দুটো বিয়ে করলেন তখন উদ্ভূত নানা সমস্যা ও প্রতিকূলতার কারণে জিদ করে তিন নম্বর বিয়েটি করে বসলেন। এরপর লোকটিকে বিয়ে বাতিকে পেয়ে বসল। তার রুচিতে বিকৃতি দেখা দিল। চিন্তা-চেতনায় বিকলাঙ্গতা এবং মতি-গতি ও চরিত্রের অদ্ভুত সব বিষয় সংযুক্ত হলো। সে নারীকে কেবল ভোগের পণ্য এবং নারী অঙ্গের ভিন্নতর আকার-আকৃতির মধ্যে ভিন্নতর সুখ খুঁজতে গিয়ে নিজেকে বহুগামিতার এমন পর্যায়ে নামিয়ে আনল যার সঙ্গে সাধারণত ইতর প্রাণী ছাড়া অন্য কারও তুলনা বা মিল খুঁজে পাওয়া যাবে না।

আলোচনার এই পর্যায়ে আমরা পরকীয়া এবং বহুবিবাহের সুখ-দুঃখ ও ফেতনা-ফাসাদ নিয়ে আলোচনা করব। প্রথমত, মানবমনের এক জটিল রসায়নের কারণে নারী-পুরুষের মধ্যে বিবাহ বা বিবাহবহির্ভূত বহুগামিতার আকাঙ্ক্ষা জাগে। মানুষ দীর্ঘদিন ধরে বহুগামিতা নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে গিয়ে নিজেদের মস্তিষ্কে এক ধরনের হরমোন তৈরি করে ফেলে। এই হরমোনের সৃষ্টি এবং নিঃসরণের ফলে মানুষ তার স্বাভাবিক ব্যক্তিত্ববোধ, মান-অপমান এবং পরিমিতিবোধ হারিয়ে ফেলে। এ অবস্থায় লোকলজ্জা, নিন্দা ইত্যাদি বিষয়কে সে থোড়াই জ্ঞান করে। আপন অভীষ্টে পৌঁছানোর জন্য তারা মানবিক মূল্যবোধ, মায়াদয়া-নীতিবোধ ইত্যাদি কবর দিয়ে যা ইচ্ছা তাই করে বেড়ায়। আমরা যদি বহুগামী নারী-পুরুষের চরিত্র নিয়ে গবেষণা করি তবে তাদের তিনটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য আমাদের নজরে আসবে। প্রথমত, তারা খুবই নির্লজ্জ, বেহায়া ও বেপরোয়া হয়ে থাকে। দ্বিতীয়ত, তারা হয় নির্মম, নিষ্ঠুর, নির্দয় ও বিবেকহীন। তৃতীয়ত, তারা হয় অকৃতজ্ঞ, অবাধ্য, বেহিসাবি এবং অধার্মিক বা বকধার্মিক।

বহুগামিতা, পরকীয়া বা বহুবিবাহের অন্তর্নিহিত কারণ পর্যালোচনা করলেই বোঝা যায় কেন তারা এসব করে সুখী হতে পারে না। কোনো নৈতিক আদর্শ, প্রেমময়তা বা ভালো লাগার ঐন্দ্রজালিক মোহ থেকে তারা বহুগামী হয় না। কেবল কামভাব চরিতার্থ করার জন্য তারা বহুগামিতার পথ বেছে নেয়। ফলে নারী-পুরুষের স্বাভাবিক মিলনের শত সহস্র সুফল তারা কোনো দিন পায় না। নিজেদের পাশবিক লালসা চরিতার্থ করার সুযোগ লাভ করার কিয়ৎকাল পরে বহুগামীর পাত্র-পাত্রীরা একে অন্যের প্রতি আকর্ষণ হারিয়ে ফেলে এবং তখন তারা ক্ষেত্রবিশেষ পরস্পরের শত্রু হয়ে দাঁড়ায়। এ অবস্থায় তারা একে অন্যের জীবন-জীবিকা ও অস্তিত্বের জন্য হুমকিতে পরিণত হয়। সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশে পরকীয়া অথবা বহুবিবাহের নামে যেসব চাঞ্চল্যকর ঘটনা এবং সেই ঘটনা কেন্দ্র করে খুন-জখম, মারামারি, হানাহানি ইত্যাদি ঘটে যাচ্ছে তা পুরো জাতিকে ভাবিয়ে তুলছে। সরকারি প্রশাসনযন্ত্রের বড় বড় পদাধিকারী, সচ্ছল ও প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, সমাজপতি ইত্যাদি শ্রেণি-পেশার মানুষ যখন বহুগামিতায় আক্রান্ত হয়ে অপরাধ করে বসেন তখন সাধারণ মানুষের ভীতসন্ত্রস্ত হওয়া ছাড়া উপায় থাকে না।

আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থা, আইন-কানুন, সামাজিক নীতিবোধ এবং পারিবারিক বন্ধনের শৈথিল্যের কারণে পরকীয়া ও বহুবিবাহের মতো নীতিহীন কর্মকাণ্ড রীতিমতো জনপ্রিয় সামাজিক রোগবালাইতে পরিণত হতে বসেছে। এসব অনৈতিক ও গর্হিত কাজকে ঘৃণা করা ও প্রতিহত করার লোক আমাদের সমাজে নেই বললেই চলে। ফলে মন্দ লোকেরা রীতিমতো সিন্ডিকেট করে একে অন্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কুকর্ম করে বেড়াচ্ছে। সব মহলের ঘৃণা, বয়কট ও রাষ্ট্রশক্তির কঠোরতাই কেবল বহুগামিতার সর্বনাশ থেকে ব্যক্তি, দেশ, জাতি ও সমাজকে রক্ষা করতে পারে। সাম্প্রতিককালে ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডে জনৈক সাবেক ঊর্ধ্বতন কাস্টমস কর্মকর্তার পরকীয়ার বলি হয়ে একটি নির্মম মৃত্যু এবং জনৈক ঊর্ধ্বতন পুলিশকর্তার বহুবিবাহের বাতিকের চাঞ্চল্যকর খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর দেশের আপামর জনসাধারণের মতো আমার মনেও তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে এবং সেই বোধ থেকেই আজকের নিবন্ধটি লেখার প্রেরণা পেয়েছি।

লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য ও কলামিস্ট।

নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৫ : ৫৫ পিএম, ২০ জানুয়ারি ২০১৮, শনিবার
এএস

Share