সম্পাদকীয়

পবিত্র মাহে রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ রাখুন

পবিত্র মাহে রমজান সমাগত। মুসলমানদের কাছে এ মাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ মাসের ইবাদতের সওয়াব অন্য মাসের চেয়ে অনেক বেশি। অন্য মাসে যারা ইবাদত-বন্দেগিতে অলসতা করেন তারাও এ মাসের ইবাদতে সক্রিয় থাকার চেষ্টা করেন। সব মাসের মধ্যে রমজানকে বছরের সরদার বলা হয়েছে।

আল্লাহর সৃষ্টির সেরা জীব মানুষকে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে অতি মুনাফা অর্জনের জন্যে পণ্য মূল্য বৃদ্ধি করা বড় অপরাধ। নিত্যপণ্যের কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে মানবতাকে সঙ্কটে ফেলা ভালো কাজ নয়।

রহমত,মাগফিরাত, নাজাতের রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করা একটি মারাত্মক অন্যায় কাজ। রহমত, নাজাত, বরকত আশা করলে কোনো মুসলমান ব্যবসায়ী এমন অন্যায় আচরণ করতে পারেন না। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পবিত্র রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখা হয় এবং রোজাদারদের সাথে ভালো ব্যবহার করা হয় ।

প্রতিটি পরিবারই পবিত্র মাহে রমজানে বাজেট করে থাকেন। সে মোতাবেক রমজানের প্রয়োজনীয় কেনাকটা করতে হয় ।অনাদিকাল থেকেই এদেশের মানুষ এভাবে চলে আসছে ।

ছোলা, চিনি, মাছ, গোশতসহ তরিতরকারীর বাজার স্থিতিশীল রাখা অপরিহার্য। অথচ আমাদের দেশের এক প্রকার অসাধু ব্যবসায়ী শুধুমাত্র নিজদের আরাম-আয়াসের কথা ভেবে অধিক মুনাফার চিন্তাই করে থাকেন।

৮৬ শতাংশ মুসলমানের দেশ বাংলাদেশ।এদেশে রমজান মাসে কোটি কোটি ধর্মপ্রাণ মুসলমান রোজা, নামাজ, ও তারাবিহ আদায় করে থাকেন। প্রশাসনিক কর্মকর্তা,ব্যবসায়ী,সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী,শিক্ষক, প্রফেসর, স্কুল,কলেজ,মাদ্রাসার শিক্ষার্থী,ব্যাংকার,কর্মকর্তা-কর্মচারী,কৃষক,মজুর,শ্রমিক,যানবাহনের চালক সবাই রোজার মাসকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করে সিয়াম পালন করেন।

অথচ এক শ্রেণির অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ী দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে নিজদের আখেরাত গোচাতে লিপ্ত হন। তাদের এ আয় অনৈতিক ও প্রশ্নবিদ্ধ। এ অপরাধ যারা করে তাদের শাস্তি ধর্মে ও প্রচলিত আইনে অবশ্যই আছে। ইসলামে ব্যবসাকে হালাল করা হয়েছে এবং নানা অজুহাতে মূল্য বৃদ্ধি ও মজুদদারি ব্যবসাকে অনৈতিক বলে আখ্যা দিয়ে হারাম করা হয়েছে।

ব্যবসায় বাণিজ্য,শিল্প কারখানা সব কিছু মানব কল্যাণের জন্যে সৃষ্টি। যে ব্যবসায় মানবতাবিরোধী সেটা ব্যবসায় হতে পারে না। ব্যবসায়ীদের উচিত ব্যবসার সঠিক নিয়মে পরিচালনা করা ।

সরকারের যত প্রচেষ্টাই থাকুক না কেন এ ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা এগিয়ে না এলে বাজার নিয়ন্ত্রণ সফল হবে না। তাই আশা করি,সরকারের সংশ্লিষ্ঠ কর্তা ব্যাক্তিরদের সাথে সমন্বয় করে ব্যবসায়ীরা রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ রাখতে এগিয়ে আসবেন।

সম্পাদকীয়
আপডেট,বাংলাদেশ সময় ৩:২৫ পিএম,২৬ মে ২০১৭,শুক্রবার
এজি

Share