জাতীয়

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী আজ 

আজ মঙ্গলবার ১২ রবিউল আউয়াল পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও মৃত্যুর দিন। ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল আরবের মক্কা নগরীতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন বিশ্ববাসীর জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমতস্বরূপ সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ এই মহামানব। আইয়ামে জাহেলিয়াতের সেই অন্ধকার যুগে মানুষকে আলোর পথ দেখিয়ে ৬৩ বছর বয়সে একই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেন।

রসুল (সা.) বাল্যকাল থেকেই সততার জন্য তিনি আলআমিন বা বিশ্বাসী হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। হেরা গুহায় স্রষ্টার সন্ধানে ১২ বছরের মোরাকাবা বা একাগ্র সাধনায় আল্লাহপাক সন্তুষ্ট হয়ে ৪০ বছর বয়সে মুহাম্মদ (সা.)-কে নবুয়ত দান করেন।

এরপর কাফেরদের তীব্র বিরোধিতা ও নানা নির্যাতনের মধ্যেও মুহাম্মদ মুস্তফা আহমদ মুজতাবা (সা.) আল্লাহর একত্ববাদ ও ইসলাম প্রচার করতে থাকেন। তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করলে আল্লাহর নির্দেশে তিনি মাতুলালয় মদিনায় হিজরত করেন। মদিনায় গিয়ে তিনি সব ধর্মের মানুষের সঙ্গে মুসলমানদের শান্তি ও নিরাপদে বসবাসের জন্য ঐতিহাসিক মদিনা সনদ প্রণয়ন করেন। তারপরও নবীজীকে ঐতিহাসিক বদর যুদ্ধ, ওহুদ যুদ্ধসহ ২৭টি প্রতিরোধ যুদ্ধ মোকাবিলা করতে হয়।

রাসুল (সা.)-এর জন্ম ও মৃত্যুর এই দিনটি সারা বিশ্বের মুসলমানদের কাছে মর্যাদা ও তাৎপর্যপূর্ণ। মুসলমানরা এ দিনটি উদযাপন করে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে। বরাবরের মতো এবারও সারা দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমান ইবাদত-বন্দেগি, মিলাদ, জশনে জুলুস, আলোচনা, দোয়া মাহফিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করছেন।

বাংলাদেশে আজ সরকারি ছুটি। ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে সকালে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে জশনে জুলুস ও ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)-এর র‌্যালির আয়োজন করা হয়েছে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন এ উপলক্ষে মাসব্যাপী বইমেলা ও পক্ষকালব্যাপী নানা ধর্মীয় মাহফিলের আয়োজন করেছে। পক্ষকালব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বায়তুল মোকাররমে ওয়াজ মাহফিল, সেমিনার, ইসলামী ক্যালিগ্রাফি ও মহানবী (সা.)-এর জীবনীভিত্তিক পোস্টার ও গ্রন্থ প্রদর্শনী, ইসলামী বইমেলা, ইসলামী সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, কিরাত ও হামদ-নাত মাহফিল এবং রাসুল (সা.)-এর শানে স্বরচিত কবিতা পাঠের আসর।

বিভিন্ন রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠন দিনটি উপলক্ষে কোরআনখানি, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করছে।

ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা কোরআন শরিফ তেলাওয়াত, হাদিস শরিফ পাঠ, নফল নামাজ, ইবাদত বন্দেগি ও কবর জিয়ারত করে দিনটি পালন করছেন। ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে রাজধানীসহ সারা দেশের মসজিদগুলোতেও আয়োজন করা হয়েছে বিশেষ ইবাদত-বন্দেগি ও আলোচনা অনুষ্ঠান।

ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রধানরা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

জশনে জুলুস বের করবে ‘দাওয়াতে ইসলামী’। রাজধানীর সায়েদাবাদের জনপথ মোড়ে অবস্থিত সংগঠনটির কার্যালয়-সংলগ্ন মসজিদ থেকে বের হবে এই জশনে জুলুস। পরে সেখানে অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা সভা।

‘আঞ্জুমানে আসাদীয়া নূরীয়া সেহরিয়া’ মিরপুরের শাহ আলী দরবারের দক্ষিণ গেট থেকে জশনে জুলুস বের হয় সকাল ৯টায়। এ ছাড়া এ উপলক্ষে তারা রক্তদান কর্মসূচিরও আয়োজন করেছে। হযরত শাহ খাজা শরফুদ্দিন চিশতি (র.)-এর দরবারে কোরআন তেলাওয়াত, হাম্ দ ও না’তে রসুল (সা.) এবং বাদ মাগরিব ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। আজিমপুর দায়রা শরিফ প্রতিদিন বাদ মাগরিব থেকে এশা পর্যন্ত রসুল (সা.)-এর শানে দরূদ শরিফ, সালাম, ফাতেহা পাঠ ও মিলাদ মাহফিল।

এ ছাড়া ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আলোচনা সভা করবে তমদ্দুন মজলিশ।

নিউজ ডেস্ক ।। আপডটে, বাংলাদশে সময় ৮ : ০০ এএম, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৬ মঙ্গলবার
এইউ

Share