জাতীয়

পবিত্র ঈদুল ফিতর সোমবার

বাংলাদেশের আকাশে পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। আগামীকাল সোমবার (২৬ জুন) ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে।

যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে সারাদেশে মুসলমানরা তাদের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উদযাপন করবে।

রোববার (২৫ জুন) বায়তুল মুকাররমে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সভা শেষে চাঁদ দেখা কমিটির সভাপতি ও ধর্মমন্ত্রী মতিউর রহমান সাংবাদিকদের জানান, সকল জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, আবহাওয়া অধিদফতর, মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ও দূর অনুধাবন কেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের আকাশে হিজরি ১৪৩৮ সনের শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। সোমবার শাওয়াল মাসের প্রথম দিন দেশে ঈদুল ফিতর পালিত হবে।

এ সময় ‘ঈদ মোবারক’ বলে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানান তিনি।

এদিকে সৌদি আরবে গতকাল শনিবার চাঁদ দেখা যাওয়ায় আজ রবিবার সেখানে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে। সৌদি আরবের রমজান শুরুও হয়েছিল এক দিন আগে।

এক মাস সিয়াম সাধনার পর মুসলমানদের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। চাঁদ দেখার ওপর ভিত্তি করে দেশভেদে ঈদুল ফিতরের দিনক্ষণে তারতম্য হয়।

আজ সন্ধ্যায় চাঁদ দেখা যাওয়ার পর থেকেই সবার মাঝে বইতে শুরু করেছে আনন্দের বন্যা। শুধু রাতটা পোহালেই শুরু হবে মুসলমানদের মিলনের বন্ধন। রাজপ্রাসাদ থেকে কুঁড়ের ঘর পর্যন্ত খুশির আলোয় আলোকিত হবে। একে অন্যের সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় করবে, করবে কোলাকুলি। আর পায়েস-সেমাইয়ের পাশাপাশি থাকবে মুখরোচক সব খাবারের ধুম।

ঘুম থেকে ওঠার পরই শুরু হয়ে যাবে এসব ধুমধাম। ইতিমধ্যে সবাই ঈদের সব প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করেছে। প্রত্যেকেই জামাকাপড়সহ পছন্দের জিনিসপত্র কিনেছে এবং কিনছে। বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজনের মাঝে বিভিন্ন উপহারসামগ্রী বিতরণ করছে। পাশাপাশি ঈদ কার্ডে মনের কথা লিখে প্রিয়জনকে ঈদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছে অনেকেই। চলছে ই-মেইলের মাধ্যমেও ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়। ফেসবুক, টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ঈদের শুভেচ্ছা জানানো হচ্ছে।

পবিত্র ঈদ মুসলমানদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় করে এবং সম্প্রীতি বৃদ্ধি করে। বিশ্ব মুসলিম একই আত্মার বন্ধনে আবদ্ধ—এ কথা স্মরণ করিয়ে দেয় ঈদ। ধনী-গরিব ভেদাভেদ ভুলিয়ে দিয়ে এক কাতারে শামিল করিয়ে দেয় এ উৎসব। হিংসা-বিদ্বেষ ও অহংকারসহ সব অন্যায় ও পাপাচার মুছে দিয়ে নতুন করে সুখী পবিত্র জীবন যাপন শুরু করার তাগিদ দেয় ঈদ।

ঈদের দিন আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সবাই আনন্দে মেতে ওঠে। একেকজন একেকভাবে আনন্দ উপভোগ করে থাকে। বিশেষ করে ছোট ও তরুণ-তরুণীদের আনন্দ উপভোগটা সবারই নজরে পড়ে। তারা ঈদের দিন ভোরে গোসল করে নতুন জামা-কাপড় পরে মিষ্টিমুখ করে বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করে।

ঈদ শব্দের অর্থ আনন্দ। আর আল্লাহর পক্ষ থেকে ঈদ হচ্ছে বান্দার জন্য বিরাট আতিথেয়তা। তাই তিনি ঈদের দিন রোজা পালনকে হারাম করে দিয়েছেন। ফিতর মানে রোজা ভাঙা। ইফতার শব্দও ফিতর থেকে এসেছে। ঈদুল ফিতর মানে রোজা ভাঙার ঈদ। অন্য এক মত অনুযায়ী, ফিতর ফিতরাত শব্দ থেকে এসেছে। এর অর্থ স্বভাব প্রকৃতি। রমজানের দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনায় কষ্ট ও ক্লান্তির পর স্বাভাবিকভাবেই সুখ ভোগের বিষয়টি এসে যায়। ঈদুল ফিতর রোজাদারদের সেই স্বভাবসমেত সুখ উপহার দেয়।

ঈদের দিন ভোরে ঈদের নামাজের আগে ফিতরা আদায় করতে হয়। ঈদের নামাজ মাঠে আদায় করাই উত্তম। সম্ভব হলে পায়ে হেঁটে ঈদে যাওয়াও উত্তম। ভিন্ন পথে ঈদগাহে যাতায়াত এবং ভোরে উঠে খেজুর বা মিষ্টি কিছু খাওয়া রাসুল (সা.)-এর সুন্নাত। ঈদের দিন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কাপড় পরিধান করা উত্তম। নতুন পোশাক পরিধান করার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে।

নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৮ : ৪০ পিএম, ২৫ জুন ২০১৭, রোববার strong>
এইউ

Share