অবশেষে পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিন। দেশটির সংবাদ মাধ্যম ফ্রি মালয়েশিয়া টুডে ও মালয়েশিয়াকিনির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
দেশটির মন্ত্রিসভার জ্যেষ্ঠমন্ত্রী মোহদ রেদজুয়ান মোহাম্মদ ইউসুফ রোববার ফ্রি-মালয়েশিয়া টুডেকে বলেন, আগামীকাল (সোমবার) মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে তিনি রাজা আল সুলতান আব্দুল্লাহ বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দেবেন।
মোহদ রেদজুয়ান আরও জানান, মন্ত্রিসভার সদস্য ও নিজের রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের ইতোমধ্যে পদত্যাগের বিষয়টি মৌখিকভাবে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিন।
২০২০ সালে মালয়েশিয়ার পার্লামেন্ট দেওয়ান রাকাইয়েতের সদস্যদের ভোটে জিতে দেশের প্রধানমন্ত্রীর পদে আসীন হন মুহিউদ্দিন ইয়াসিন। তবে তার পক্ষে ও বিপক্ষে পড়া ভোটের ব্যবধান অল্প থাকায় নিজের পদ ধরে রাখতে চাপের মুখে ছিলেন তিনি।
সম্প্রতি তার দলের কয়েকজন আইনপ্রণেতা বর্তমান ক্ষমতাসীন জোট সরকারের অন্যতম শরিক ও মালয়েশিয়ার বৃহত্তম রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড মালয়স ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনে (ইউএমএনও) যোগ দেওয়ার পর পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়।
এদিকে, করোনা মহামরি মোকাবিলায় ব্যর্থতা, স্বেচ্ছাচারিতা, মহামারি পরিস্থিতিতে অর্থনীতি পুনর্গঠনে সঠিক নির্দেশনা দিতে না পারা এবং অযৌক্তিকভাবে রাজাকে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণার পরামর্শ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের বিরুদ্ধে।
গত জুলাই মাসের শেষদিকে তার পদত্যাগের দাবিতে মালয়েশিয়াজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়।
আন্দোলনের মুখে গত ৪ আগস্ট এক টেলিভিশন ভাষণে মুহিউদ্দিন ইয়াসিন ঘোষণা করেন, পার্লামেন্টের সদস্যরা তাকে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে প্রস্তুত কিনা, যাচাই করতে আগামী সেপ্টেম্বরে দেওয়ান রাকাইতে আস্থা ভোট চান তিনি।
ভাষণে মুহিউদ্দিন বলেন, সম্প্রতি আমার প্রধানমন্ত্রী পদ নিয়ে কিছু প্রশ্ন দেখা দিয়েছে এবং এ সম্পর্কে আমি সচেতন। এ কারণে আমি রাজাকে বলেছি- উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দেশের সংবিধান ও আইনি প্রক্রিয়া মেনে দেওয়ান রাকইয়াতে আস্থা ভোট হওয়া প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, আগামী সেপ্টেম্বরে পার্লামেন্ট সেশন শুরু হলে এই আস্থা ভোটের আয়োজন হবে। এটি আমার রাজনৈতিক জীবনের একটি বড় চ্যালেঞ্জ এবং আমি তা গ্রহণ করছি। কারণ, দেওয়ান রাকইয়াতের অধিকাংশ আইনপ্রণেতা আমার প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছেন।
কিন্তু শুক্রবার (১৩ আগস্ট), এক পার্লামেন্ট অধিবেশনে মুহিউদ্দিন প্রথমবারের মতো স্বীকার করেন, তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। একইসঙ্গে আইন প্রণেতাদের তিনি প্রস্তাব দেন- আগামী সেপ্টেম্বরে আস্থা ভোটে তাকে সমর্থন দেওয়া হলে দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারে যেসব প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়েছিলেন, সেগুলো পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে। তবে তার ওই প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে প্রত্যাখ্যান করা হয়।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক