বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত হচ্ছে আজ। উন্নয়ন, সাহসী অপারেশন ও সেবামূলক কাজে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে পদক পেলেন কোস্টগার্ডের ৪০ সদস্য।
বাংলাদেশ কোস্টগার্ড পদক, প্রেসিডেন্ট কোস্টগার্ড পদক, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড (সেবা) পদক ও প্রেসিডেন্ট কোস্টগার্ড (সেবা) নামে চার ক্যাটাগরিতে এ ৪০ জনকে এসব পদক দেওয়া হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সদর দপ্তরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি উপস্থিত রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধান অতিথির পক্ষ থেকে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল মনোনীতদের পদক তুলে দেন।
এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন ও সভাপতিত্ব করছেন কোস্টগার্ডের মহাপরিচালক (ডিজি) রিয়ার অ্যাডমিরাল আশরাফুল হক চৌধুরী। উপস্থিত রয়েছেন অন্যান্য সামরিক ও বেসামরিক অতিথিরা।
বাংলাদেশ কোস্টগার্ড পদক (বিসিজিএম) পেলেন যারা
ক্যাপ্টেন শেখ মো. জসিমুজ্জামান, কমান্ডার এম ইমাম হাসান আজাদ, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার শেখ মাহমুদ হাসান, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আমিরুল হক, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার ওয়াসিম আকিল জাকী, মোহাম্মদ সাহ জামাল, এম মামুনুর রশিদ, মো. আলী হোসেন ও শাওন আহম্মেদ।
প্রেসিডেন্ট কোস্টগার্ড পদক (পিসিজিএম) পেলেন যারা
ক্যাপ্টেন গাজী গোলাম মোর্শেদ, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মো. সাইয়েদুল মোরসালিন, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার খন্দকার মুনিফ তকি, লেফটেন্যান্ট এম আতাহার আলী, এম খলিলুর রহমান মিঞা, মো. আবদুল্লাহ আল মামুন সরকার, এম মুনিরুজ্জামান, মো. তারেকুল ইসলাম, কাঞ্চন দেবনাথ ও মো. রাশেদুজ্জামান।
কোস্টগার্ড (সেবা) পদক (বিসিজিএমএস) পেলেন যারা
ক্যাপ্টেন মাসুদুল করিম সিদ্দিকী, ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ হাসান, কমান্ডার এম জহিরুল ইসলাম, কমান্ডার মোহাম্মদ সাজিদ আতাউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মো. নাদিম চৌধুরী সজিব, এম আব্দুল মালেক, মো. রুহুল কুদ্দুস, মো. বোরহান উদ্দিন আহমেদ, মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম ও মো. সাদ্দাম হোসেন।
প্রেসিডেন্ট কোস্টগার্ড (সেবা) পদক (পিসিজিএমএস) পেলেন যারা
কমান্ডার শহিদুল ইসলাম, কমান্ডার এম আবু সাঈদ, কমান্ডার মো. নূর হাসান, সার্জন কমান্ডার তানভীর আহমেদ, এম জামাল হোসেন, এ টি এম তৌহিদুজ্জামান, এম সোহেল রানা, মাসুদ জমাদার, আসাদুজ্জামান ভুঁইয়া ও মো. এনামুল হক।
১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ কোস্টগার্ড বর্তমানে দেশের বিশাল সমুদ্র ও উপকূলীয় অঞ্চলের নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। দেশের সমুদ্রসীমা ও উপকূলীয় এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা নিশ্চিতকরণ, জনগণের জানমাল রক্ষা, চোরাচালান, মাদক ও মানবপাচার দমনের পাশাপাশি নানাবিধ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ত্রাণ ও সহায়তা দেওয়ার মধ্যদিয়ে কোস্টগার্ড মানুষের মধ্যে নিরাপত্তা ও আস্থার বিশ্বস্ত প্রতীকে পরিণত হয়েছে। এছাড়া কোস্টগার্ডের নিরলস প্রচেষ্টায় চট্টগ্রাম বন্দর ঝুঁকিপূর্ণ বন্দরের তালিকা থেকে বের হয়ে একটি নিরাপদ বন্দরে পরিণত হয়েছে।
২০২১ সালে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড প্রায় ১১১ কোটি ৬৪ লাখ টাকার চোরাচালান করা পণ্য জব্দ, ২ হাজার ২৯৭ কোটি ২৭ লাখ টাকার মৎস্য ও অবৈধ জাল, ১৩৭ কোটি ১৯ লাখ টাকার অবৈধ মাদক এবং ১৬ কোটি ১০ লাখ টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রকার কাঠ জব্দ করে।
এছাড়া করোনাকালীন ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার ঘোষিত লকডাউন ব্যবস্থাপনা ও জননিরাপত্তার দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি খাদ্যসামগ্রী নিয়ে অসহায়, দুস্থ, কর্মহীন এবং শ্রমজীবী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে কোস্টগার্ড। প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ দিকনির্দেশনা এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর তত্ত্বাবধান ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঐকান্তিক সহযোগিতায় বিভিন্ন আধুনিক জাহাজ, ঘাঁটি ও জলযান সংযোজনের মাধ্যমে বর্তমানে এ বাহিনীর সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। সময়ের পরিক্রমা ও সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার নিপুণ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডকে অধিকতর কার্যকর, শক্তিশালী ও সুদক্ষ বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা এগিয়ে নিতে এ বাহিনীর প্রতিটি সদস্য উজ্জীবিত ও বদ্ধপরিকর।
মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তীর প্রেরণায় অনুপ্রাণিত হয়ে এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে জাতির প্রত্যাশা পূরণে নিরলসভাবে কাজ করে যাবে কোস্টগার্ড।