রাজনীতি

পকেট কমিটির অভিযোগে ২০ জেলাকমিটি ভেঙে দিচ্ছে বিএনপি

দল পুনর্গঠনে ধীরগতিতে এগোচ্ছে বিএনপি। পকেট কমিটির অভিযোগে ২০ জেলাকমিটি ভেঙে দিচ্ছে বিএনপি। তৃণমূল পুনর্গঠনে কেন্দ্রের বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে ইতোমধ্যে এক মাস পার হয়ে গেছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত আশানুরূপ সাড়া মেলেনি।

বহু জেলায় দল গোছানোর প্রাথমিক তৎপরতাও শুরু হয়নি। কোনো কোনো জেলায় দেখা দিয়েছে অভ্যন্তরীণ কোন্দল। এসব কারণে কমপক্ষে ২০ জেলার কমিটি ভেঙে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বিএনপি।

অন্য দিকে কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের কাছে অনেক জেলা থেকে ‘পকেট কমিটি’ গঠনের অভিযোগ জমা পড়েছে। এসব জেলাকে ‘সতর্ক’ করে চিঠি দেয়া হচ্ছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মো: শাহজাহান গত ৯ আগস্ট এক চিঠিতে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জেলা/ মহানগর/ থানা/ উপজেলা/ পৌর/ ইউনিয়ন কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। ৯ আগস্ট ওই চিঠি যাওয়ার পর পুনর্গঠনকার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।

মো: শাহজাহান বলেন, “বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে কোনো জেলা ‘যৌক্তিক’ কারণে কমিটি গঠন করতে না পারলে তাদের সময় বাড়িয়ে দেয়া যেতে পারে। কিন্তু কেউ যদি অযৌক্তিকভাবে সময়ক্ষেপণ করেন কিংবা কাজ করতে ব্যর্থ হন; ওই জেলা কমিটি গঠনের দায়িত্ব কেন্দ্র নেবে। তাদের সময় বাড়িয়ে দেয়া হবে না।”

জানা গেছে, ঈদের আগে কিংবা পরে পুনর্গঠনের সময় আরো এক মাস বাড়িয়ে দেয়া হতে পারে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর লন্ডন যাওয়ার আগে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত ও কিছু দিকনির্দেশনা দিয়ে যাবেন।

পুনর্গঠনপ্রক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্ত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন, “কিছু জেলায় তেমন কোনো কাজই করেনি। আবার কয়েকটি জেলায় এককভাবে কমিটি হচ্ছে। এসব জেলা নিয়ে কেন্দ্র থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে।”

ওই নেতা বলেন, “অনেক জেলার শীর্ষ নেতৃত্ব এককভাবে অনেকটা স্বৈরাচারী কায়দায় পকেট কমিটি গঠন করছেন। এ বিষয়ে দলের কাছে অভিযোগ আসার পর তার সত্যতা মিলেছে। এরপর কয়েকটি জেলাকে চিঠি দিয়ে সতর্ক করে দেয়া হচ্ছে। কেন্দ্রের কাছে খবর আছে ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলায় কোনো কাজই শুরু হয়নি। এখন পর্যন্ত কোনো ইউনিয়ন কমিটি পুনর্গঠন শুরু হয়নি।জেলার সভাপতি কে এম মোশাররফ হোসেন নেতাকর্মীদের খোঁজও নেন না।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা বিএনপির এক নেতা এ অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেছেন।

গুলশান কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, সেসব জেলায় কাজ হচ্ছে না এমন জেলা কমিটি ভেঙে দিতে তালিকা হচ্ছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা তালিকা তৈরি করে খালেদা জিয়াকে তা দেখাবেন। তারপর ওই কমিটিগুলো ভেঙে দেয়ার ঘোষণা আসবে।

ঢাকা জেলা, ময়মনসিংহ দক্ষিণ, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, সাতক্ষীরা, রংপুরসহ বেশ কয়েকটি জেলা এ তালিকায় আছে।

কমিটি গঠনের সাথে এলাকার স্থায়ী কমিটির সদস্য, জাতীয় নির্বাহী কমিটি, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, সাবেক সংসদ সদস্যসহ দলের দায়িত্বশীল নেতাদের সহযোগিতা নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে কেন্দ্র থেকে। একই সাথে অনিবার্য কারণে দায়িত্ব পালনে সক্ষম নন, এমন প্রবীণ ও যোগ্য নেতাদের দলীয় কার্যক্রমে সম্পৃক্ত রাখতে সব পর্যায়ে উপদেষ্টা কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে।

কিন্তু অনেক জেলায় এ বিষয়টি আমলে নেয়া হচ্ছে না। জেলার প্রভাবশালী নেতা এককভাবে কমিটি গঠন করছেন। এ ধরনের কিছু জেলাকে চিঠি দিয়ে সবাইকে নিয়ে কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, “কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে সবার সমন্বয় জরুরি। কেন্দ্র থেকে এর আগে চিঠিতে সবার পরামর্শ নিতে বলা হয়েছে। কিন্তু আপনার (সংশ্লিষ্ট) জেলায় তার ব্যত্যয় ঘটছে। তাই সবার পরামর্শ নিয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশ দিচ্ছে কেন্দ্র।”

জানা গেছে, সতর্ক করার পরও ত্যাগীদের বাদ দিয়ে পকেট কমিটি গঠন অব্যাহত থাকলে কেন্দ্র থেকে আবার কমিটি গঠন করে দেয়া হবে।

আপডেট: ১২:১৯ অপরাহ্ণ, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৫, শুক্রবার

চাঁদপুর টাইমস- ডিএইচ/২০১৫।

Share