পদ্মা নদীতে স্পীডবোট যোগে ডাকাতি প্রস্তুতিকালে দুর্ধর্ষ ৫ নৌ-ডাকাতকে আটক করেছে চাঁদপুর নৌ পুলিশ। এ সময় আটকদের কাছ থেকে ১টি স্পীডবোট,২টি দেশীয় তৈরী পাইপগান,৭ রাউন্ড তাজা কার্তুজ ও ৮টি রামদা জব্দ করা হয়।
১১ ও ১২ অগস্ট একাধিক পৃৃথক অভিযান চালিয়ে পদ্ম নদীর মুন্সিগঞ্জ এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
আটককৃতরা হলেন, মো. আক্তার হোসেন (৩০), মো. ইকবাল মুন্সি প্রকাশ সুমন (২৮), মো. আবুল বাশার (২২), মো. শাকিল দেওয়ান (২১), মো. ইয়ামিন (১৯)। আটককৃতদের সবাই মুন্সিগঞ্জ জেলার বাসীন্দা।
১২ আগস্ট শুক্রবার সকালে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান চাঁদপুর নৌ-পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
তিনি জানান, ১১ আগস্ট বৃহস্পতিবার বিকেলে চাঁদপুর অঞ্চলের আওতাধীন নৌ-পুলিশের একটি আভিযানিক দল পদ্মা নদীতে নৌ-টহল দিচ্ছিল।
দুর্ধর্ষ নৌ-ডাকাত স্পীডবোট যোগে বিভিন্ন নৌ-যানে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছেল। তাৎক্ষিণক তারা সংবাদটি আমাকে অবগত করে। বিষয়টা আমি নৌ-পুলিশে কন্ট্রোল রুমকে অবহিত করি এবং আশে পাশের পুলিশ ইউনিট সমূহকে সতর্ক করি।
পরবর্তীতে নৌ-পুলিশের আভিযানিক দল ঘটনাস্থলে পৌঁছলে স্পীডবোটে থাকা ১২-১৩ জন নৌ- ডাকাতকে দেখতে পায়। তাৎক্ষণিক আভিযানিক দল স্পীডবোটে থাকা নৌ-ডাকাতদের ধরার জন্য ধাওয়া করেন।
পুলিশের ধাওয়া খেয়ে নৌ-ডাকাত দল স্পীডবোট হতে পুলিশকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে। নৌ-পুলিশও আত্মরক্ষার্থে কয়েক রাউন্ড শটগান হতে ফাঁকা ফায়ার করেন। তখন ডাকাত দল পদ্মা নদীর মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং থানার ডহুরী খালের দিকে স্পীডবোট যোগে দ্রুত গতিতে পালাতে থাকে।
মাঝিরঘাট নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির আভিযানিক দল তাদের স্পীডবোট নিয়ে ডাকাতদেরকে ধাওয়া করতে থাকে। এক পর্যায়ে ডাকাত দল মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং থানার গাঁওদিয়া বাজার সংলগ্ন নদীর পাড়ে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত স্পীডবোটটি রেখে লাফিয়ে তীরে নেমে এবং দৌড়িয়ে পার্শ্ববর্তী পাটক্ষেতে আত্মগোপন করে।
নৌ-পুলিশ সুপার আরো জানান,তাৎক্ষণিক মাঝিরঘাট নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির অফিসার ও ফোর্সসহ বিভিন্ন ইউনিট হতে আগত পুলিশ সদস্যগণ অভিযানে অংশ নেয়।
মাঝিরঘাট নৌ-পুলিশ ফাঁড়িসহ আভিযানিক দল পদ্মা নদীর তীরবর্তী পাটক্ষেতে তল্লাশি করে সন্ধ্যা ৬ টায় ডাকাত মো.আক্তার হোসেন (৩০) ও মো. ইকবাল মুন্সি প্রকাশ সুমন (২৮) গ্রেফতার করে।
পরে গ্রেফতারকৃত আসামীদের তথ্য এবং দেখানো মতে আভিযানিক দল পদ্মা নদীর তীরবর্তী পাটক্ষেত,ধইঞ্চা ক্ষেত, ডোবা-নালার কচুরিপানায় চিরুনী তল্লাশি শুরু করেন।
তল্লাশি কালে পালগাঁও গ্রাম সংলগ্ন পাটক্ষেত হতে ডাকাত মো.আবুল বাশার (২২)কে ১ টি পাইপগান ও ৪ রাউন্ড সীসা কার্তুজসহ গ্রেফতার করেন।
সাড় ৪ টায় পশ্চিম পালগাঁও সংলগ্ন ধইঞ্চা ক্ষেত হতে ডাকাত মো.শাকিল দেয়ান (২১) কে ১টি পাইপগান ৩ রাউন্ড সীসা কার্তুজসহ গ্রেফতার করেন। সবশেষ ভোর ৫ টায় পূর্ব পালগাঁও সংলগ্ন ডোবা হতে ডাকাত মো.ইয়ামিন (১৯)কে গ্রেফতার করেন।
এছাড়াও আটক ডাকাতদের ব্যবহৃত স্পীড বোট তল্লাশি করে ২০ টি মোবাইল, ৮টি দেশীয় রামদা,১ টি দা, ১টি ক্রুড্রাইডার, ১টি শাবল,৫ টি তেলের খালি ড্রাম ও ১০ লিটার পেট্রোল প্রাপ্ত হয়ে জব্দ করা হয়।
অভিযানে বিভিন্ন পয়েন্টর নেতৃত্ব দেন,চাঁদপুর অঞ্চলের নও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.বেলায়েত হোসেন শিকদার,এস আই জহিরুল হক,এএসআই মো. শহিদুল ইসলাম, কনস্টেবল আবুল বাশার, রেজাউল ইসলাম, মেজবাহ উদ্দিন এএসএম ইসরাফিল হোসেন।
আশিক বিন রহিম ,
চাঁদপুর টাইমস
১২ আগস্ট ২০২২