আগামী ১৯ অক্টোবর,সোমবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে চাঁদপুরসহ সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য নৌযান শ্রমিক ধর্মঘট শুরু হচ্ছে।
খাদ্য ভাতাসহ ১৫ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট ডেকেছে নৌযান শ্রমিকদের ছয়টি সংগঠনের জোট নৌ-শ্রমিক অধিকার সংরক্ষণ ঐক্য পরিষদ।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক লীগ চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি বিপ্লব সরকার চাঁদপুর টাইমসকে জানান,যাএীদের সমস্যার কথা চিন্তা করে শুধুমাত্র পন্নবাহী নৌযান গুলোকে আন্দোলনের আওতায় আনা হয়েছে আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মবিরতি চলবে।
২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর চুক্তি এবং চলতি বছরের মার্চ মাস হতে খাদ্য ভাতা প্রদান কার্যক্রম ও ১৫ দফা দাবি বাস্তবায়ন হওয়ার লিখিত চুক্তি কার্যক্রম না হওয়ায় শ্রমিক আজ দ্রব্যমূল্যের বাজারে করোনা মহামারী চরাকালীন চরম অভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছে। শ্রমিক সমাজ করোনা মহামারিতে জাহাজ চালিয়ে দেশের ৮০ ভাগ পণ্য পরিবহন সচল রেখেছে।
যেখানে বীরের মর্যাদা প্রদানের কথা, প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস মতে তাহার নির্দেশনা আড়ালে রেখে নৌ পরিবহন শ্রমিকদের খাদ্য ভাতা, স্বাস্থ্য সুরক্ষার সরঞ্জাম, নিয়োগপত্র, সার্ভিস বুক ও পরিচয় পত্র প্রদান, মাস্টার, ড্রাইভার, শিফ পরীক্ষার দুর্নীতি হয়রানি বন্ধ, জাহাজ সার্ভে রেজিষ্ট্রেশন দুর্নীতি বন্ধ, কোম্পানীর খরচে শ্রমিকদের পারাপার ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, চট্টগ্রাম, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে সকল প্রকার জাহাজ রাখার মুড়িং বয়া, নিরাপদ স্থান নিশ্চিতকরণ, মেরিন ও শ্রম আইনে শ্রম ও শিল্প বিরোধী আইন স্থগিতসহ ১৫ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।
১৯ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টা ১ মিনিট হতে শ্রমিকগণ দেশব্যাপী লাগাতার কর্মবিরতি পালনের ডাক দিয়েছে। সরকার, মালিক পক্ষ এর দায় বহন করবে। শ্রমিকদের দায়ী করতে পারবে না। কারণ ঘোষনা ও চুক্তিতে স্বাক্ষর করার পরও এক বছর পার হতে চললেও কিন্তু কোন দাবি মালিক পক্ষ আজ পর্যন্ত কার্যকর করে নাই। এটা অত্যন্ত দুঃখ ও বেদনাদায়ক। সরকার ও মালিক পক্ষ এ কথা ভুলে গেলে চলবে না। যে দেশের অন্যান্য শিল্প সেক্টরের তুলনায় দেশের নৌ শ্রমিক সম্প্রদায় সু-শৃঙ্খল ও অনেক ধৈর্য্যরে পরিচয় দিয়ে আসছে।
করোনার মধ্যে জীবনের সংক্রমণজনিত ঝুঁকি নিয়ে বর্ষা মৌসুমে উত্তাল সাগর ও নৌ পথে প্রবল স্রোত মোকাবেলা করে জাহাজ চালনা অব্যাহত রেখে রাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থে বিশেষ অবদান রেখেছে।
নৌ ও শ্রমপ্রতিমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করতেন তাহলে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত প্রণোদনা থেকে শ্রমিকগণ বঞ্চিত হতো না। প্রণোদণা থেকেও শ্রমিকদের বঞ্চিত রাখা হয়েছে। শ্রমিক নেতৃবৃন্দ আজ শ্রমিক সমাজে নিন্দার পাত্রে পরিণত হয়েছে। ঘোষিত দাবি দাওয়ার কার্যক্রম না হওয়ায় শ্রম ও নাগরিক তথা সুবিধাবঞ্চিত শ্রমিক, নাবিক আর বসে থাকবে না। খাদ্য ভাতা সহ ১৫ দফা দাবি ও আর্থিখ প্রণোদনা নিয়ে ঘরে ফিরবে। তাই আগামী ১৯ অক্টোবর থেকে লাগামহীন এই কর্মবিরতি চলবে।
এদিকে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক লীগের সভাপতি শেখ ওমর ফারুক বলেন, ১৫ দফা দাবির সমর্থনে তারা ইতোমধ্যে শ্রম প্রতিমন্ত্রী, শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান ও নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সবাই আশ্বাস দিলেও কোনো দাবিই আজ পর্যন্ত পূরণ হয়নি। এ অবস্থায় ধর্মঘটে যাওয়া ছাড়া অন্য কোনো পথ তাদের সামনে খোলা নেই।
স্টাফ করেসপন্ডেট,১৮ অক্টোবর ২০২০