আসন্ন শাহরাস্তির মেহের দক্ষিণ ইউনিয়ন উপ-নির্বাচনে ভোট গ্রহণের মাত্র ২৪ ঘন্টা বাকী। ২০ অক্টোবর,মঙ্গলবার সকাল হতেই শুরু হচ্ছে ভোট গ্রহণ। দিন শেষে অবসান হতে যাচ্ছে ইউনিয়নবাসীর প্রতীক্ষার। কে হচ্ছে পরবর্তী চেয়ারম্যান এ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই মুখরিত এলাকার বিভিন্ন পাড়া মহল্লার চায়ের দোকানগুলো।
নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির উপজেলা পর্যায়ের নেতারা চষে বেড়াচ্ছেন ইউনিয়নের প্রতিটি বাড়ি। নির্বাচনের শুরুতে ত্রিমুখী লড়াইয়ের আলোচনা হলেও শেষ পর্যন্ত চেয়ারম্যান পদে দেশের প্রধান ২ দলের মনোনীত নৌকা ও ধানের শীষের মাঝে লড়াই হবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
জানা যায়, ওই ইউনিয়নে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রুহুল আমিন নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। ইতোপূর্বে সাধারণ নির্বাচনে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মরহুম শফি আহমেদ মিন্টুর সাথে নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী হিসেবে তিনি পরাজিত হন। শফি আহমেদ মিন্টুর মৃত্যুতে চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হওয়াতে বর্তমানে তিনি আবারো প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম-আহবায়ক মোঃ মাসুদ কবির। তরুণ সমাজে পরিচ্ছন্ন নেতা হিসেবে সু-পরিচিত বিএনপির এ প্রার্থীর সাথেই নৌকা প্রতীকের প্রতিদ্ব›িদ্বতা হবে বলে জানিয়েছে ধানের শীষ প্রতীকের সমর্থকরা।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন উপজেলা বিএনপি নেতা কাজী জাহাঙ্গীর আলম। ইউনিয়নসহ গোটা উপজেলায় একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত এই প্রার্থী লড়ছেন আনারস প্রতীক নিয়ে।
এলাকার ভোটারদের মতে, প্রার্থী ৩ জন হলেও সবার দৃষ্টি দলীয় প্রতীকের প্রতি। গত নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সাথে নৌকার পরাজয়ে এবারের নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা। অপরদিকে দলীয় প্রতীক নিয়ে মাঠে সোচ্চার থাকা ধানের শীষের নেতাকর্মীরা এই নির্বাচনকে গ্রহণ করেছেন উৎসবের আমেজ হিসেবে। দলীয় প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করতে শেষ মুহুর্তে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে গণসংযোগ করছেন।
দেবকরা গ্রামের ০৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা বিএনপি সমর্থক আলী হোসেন জানান, আমি সহ গোটা ইউনিয়নে বিএনপির কর্মী ও সমর্থকরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে ধানের শীষ প্রতীকের জন্য কাজ করছি। আমরা বিজয় নিশ্চিত করেই বাড়ি ফিরবো। এই ইউনিয়নে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীকে বিএনপি সমর্থিত বলে দলীয় নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।
ভোলদিঘী গ্রামের ২ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আওয়ামী সমর্থক গাজী বাহার উদ্দিন জানান, আমি পুরো ইউনিয়নে দলীয় প্রার্থীর প্রচারণা করেছি। ভোটারদের দ্বারে পৌঁছে দলীয় প্রার্থীর প্রতি তাদের যে ভালোবাসা দেখেছি তাতে আমার মনে হয় নৌকার বিজয় সু-নিশ্চিত।
উপজেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক এহেতেশামুল গণি জানান, দলীয় কর্মী ও সমর্থকরা দলীয় প্রতীক ধানের শীষে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবে। বিএনপির কোন নেতা এ ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন না। একজন সাবেক বিএনপি নেতার বন্ধু হিসেবে পরিচিত ওই প্রার্থী নিজেকে বিএনপি নেতা হিসেবে পরিচয় দিলেও কখনো কোন ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, পৌরসভা ও উপজেলা কমিটিতে তার নাম দেখা যায়নি।
উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও ওই ইউনিয়নের ভোটার অ্যাড. ইলিয়াছ মিন্টু জানান, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রুহুল আমিন এলাকায় একজন সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। গোটা ইউনিয়নে তার নৌকা প্রতীকের গণজোয়ার বইছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে ভোটাররা নৌকা প্রতীককে বিপুল ভোটে বিজয়ী করে পূর্বের নির্বাচনে ক্ষতিগ্রস্থ রুহুল আমিনকে সম্মানিত করবে।
প্রসঙ্গত, মেহের দক্ষিণ ইউনিয়নে ৯ টি ওয়ার্ডের ৯ কেন্দ্রে ২১ টি ভোটকক্ষে ৭ হাজার ৪ শ ৪২ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। ওই ইউনিয়নে পুরুষভোটার ৩ হাজার ৫ শত ৫৩ ও মহিলা ভোটার ৩ হাজার ৮ শত ৮৯ জন।
প্রতিবেদক:মোঃ জামাল হোসেন,১৯ অক্টোবর ২০২০