চাঁদপুরে সুবিধা বঞ্চিত নৌকায় বসবাসকারী ৩ শতাধিক পরিবার

ঝড়, বৃষ্টি, বর্ষা, শীত সব মৌসুমেই নদীর উপরে ভাসমান অবস্থায় নৌকায় বসবাস সওদাগর জনগোষ্ঠীর। তারা মাছ শিকার করেই জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। সওদাগর জনগোষ্ঠীর লোক ছাড়া বিবাহ না হওয়ার প্রথা তাদের রয়েছে। এদের বেশীর ভাগই ইসলাম ধর্মের অনুসারী।

চাঁদপুর শহরের প্রেসক্লাব ঘাটের পেছনে ডাকাতিয়া নদীর তীরে, ১০নং চৌধুরী ঘাট ও ৫নং ঘাটের বেদে পল্লী ঘুরে দেখা যায়, ছোট ছোট নৌকার উপর রান্নাবান্নার কাজসহ তারা নৃত্য প্রয়োজনীয় কাজগুলো সেরে নিচ্ছেন। কেউ কেউ আবার নৌকার পাশে নদীতীরে অথাৎ ডাঙ্গায় বাঁশের মাঁচা উপর টিন দিয়ে ছোট ছোট ঝুপড়িঘর বানিয়েছে। তবে এর সংখ্যা খুব একটা বেশি না। আবার ডাঙ্গায় থাকা ঘরগুলো খরার মৌসুমে কাজে আসলেও বর্ষার সময় নৌকাই তাদের আশ্রয়স্থল।

নৌকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করা সওদাগর জনগোষ্ঠীর রেজিয়া বেগম, আব্দুল করিম, শাহনাজ বেগমসহ কয়েকজন জানায়, মাছ ধরার উপরেই আমাদের জীবন সংগ্রাম। স্বামী-স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের নদীতে জাল ও বরশি দিয়ে মাছ ধরতে হয়। পরে বাজারে নিয়ে বিক্রয় করে যা টাকা পাই তা দিয়ে কোন রকম সংসার চলে। তবে ঝড়, তুফান হলে অনেক সময় না খেয়ে থাকতে হয়।

নিজেদের অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরে ৫নং ঘাট ও ১০ নং চৌধুরী ঘাটে বসবাসরত সওদাগরদের সর্দার মালেক সওদাগর জানান, আমাদের এখানে প্রায় ৩ শতাধিক পরিবার রয়েছে। বেশ কয়েকবার আমরা জেলা প্রশাসক বরাবর ঘর পাওয়ার আবেদন করেছি।

পরবর্তীতে আমাদেরকে গুচ্ছগ্রামে থাকার ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেওয়া হলেও তা এখন পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি। আমরা এই অঞ্চলের ভোটার হয়েও কেন নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি তা খতিয়ে দেখতে চাঁদপুরের উন্নয়নের রুপকার শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি আপাসহ সংশ্লিষ্ট মহলের দ্রুত সুদৃষ্টি কামনা করছি।

এ ব্যপারে চাঁদপুর সদরের ইউএনও সানজিদা শাহনাজ জানান, আমাদের এখন আশ্রয়ণ প্রকল্পের কোন ঘর খালি নেই, এমনকি গুচ্ছগ্রামও খালি নেই। এগুলো সংস্কার চলছে। তা শেষ হলে আমরা ওদের জন্য কাজ শুরু করবো।

তাছাড়া আমরা নতুন আশ্রয়ন প্রকল্পের বাড়ী নির্মাণ করার উদ্যোগ নিচ্ছি। যেখানে এরকম বেদে সম্প্রদায়, হরিজন সম্প্রদায়ের লোককে থাকতে দেওয়া হবে।কিন্তু জায়গা নির্ধারণ করতে না পারায় আমরা এখনো এই কাজ শুরু করতে পারিনি।

সিনিয়র স্টাফ করেসপন্ডেট, ১২ জুন ২০২১

Share