আন্তর্জাতিক

নিহত হাজির সংখ্যা ১২০০ ছাড়িয়েছে : রাজপুত্রের গাড়িবহরই মিনা ট্রাজেডির কারণ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | আপডেট: ০৭:১৮ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫, শুক্রবার

সৌদি আরবের মিনায় পদদলিত হয়ে হতাহতের ঘটনায় হজের ব্যবস্থাপনা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। হাজিদের অনেকেই অভিযোগ করেছেন, সৌদি সরকারের দুর্বল ব্যবস্থাপনাই এ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। এদিকে, লেবাননের আরবি দৈনিক আদদিয়ার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সৌদি বাদশাহর ছেলের গাড়ি বহরই প্রাণঘাতী এ বিপর্যয় সৃষ্টির মূল কারণ।

তার বিপুল গাড়ি বহর ও নিরাপত্তা প্রহরা মিনার প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকা দখল করে নেয়। এসময় তার সঙ্গে ছিল ২০০ সেনা ও ১৫০ পুলিশ কর্মকর্তা। সৌদি সরকার এ বিষয়টিকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য হজের সময় মিনায় সালমানের সফর বা তার উপস্থিতি সংক্রান্ত খবর প্রচার নিষিদ্ধ করেছে বলে লেবাননি দৈনিকটি উল্লেখ করেছে।

কিন্তু সৌদি আরবের সরকারি কর্মকর্তারা সালমানের উপস্থিতির কারণে মিনা ট্র্যাজেডির খবরকে `সঠিক নয়` বলে উল্লেখ করেছেন। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী এই বিপর্যয়ের জন্য হাজিরাই দায়ী বলে দাবি করেছেন। তাদের একজন বলেছেন, হজযাত্রীরা দিক-নির্দেশনা মেনে চললে এ দুর্ঘটনা হয়ত এড়ানো যেত। তবে হাজিরা তার এ অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়েছেন। তারা বলছেন, মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনার জন্য দুর্বল ব্যবস্থাপনাই দায়ী।

এদিকে, ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, ইরানি কর্মকর্তারা বলেছেন, হজযাত্রীরা যেসব সড়ক দিয়ে এসে শয়তানের প্রতীকী স্তম্ভে পাথর নিক্ষেপ করে ওই এলাকা থেকে চলে যাওয়ার রাস্তা দুটি বন্ধ করে দেয়া হয়। এ ছাড়াও পাথর নিক্ষেপ করতে আসা হজযাত্রীদের একমুখী চলাচলের একটি সড়ককে হঠাৎ দ্বিমুখী করা হয় বলে অভিযোগ শোনা গেছে।

এই মুহূর্তে মক্কায় হজ পালনের উদ্দেশে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অন্তত ২০ লাখ হাজি অবস্থান করছেন। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হাজিদের নিরাপত্তার জন্য এক লাখ পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু সমালোচকরা বলছেন, এসব পুলিশ সদস্য যথেষ্ট অভিজ্ঞ নয়। ভাষাগত সীমাবদ্ধতার কারণে তারা বিদেশিদের সঙ্গে ভালভাবে যোগাযোগও করতে পারেন না। এছাড়া তাদেরকে সঠিক প্রশিক্ষণ দেয়া হয় না বলে অভিযোগ করেছেন তারা।

এদিকে, নিহত হাজিদের সংখ্যা ১২০০ ছাড়িয়ে গেছে বলে সৌদি আরবের বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগের বরাত দিয়ে ইরানের আলমানার টেলিভিশনের ওয়েব সাইট জানিয়েছে। ইরানের হজ সংস্থা নিহতের সংখ্যা ১৩০০ ছাড়িয়ে গেছে বলে উল্লেখ করেছে। নিহতদের মধ্যে ১৩১ জন ইরানি রয়েছেন বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

সৌদি কর্মকর্তারা জানান, বৃহস্পতিবার ওই দুর্ঘটনায় পদদলিত হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অন্তত ৭১৭ জন হাজি নিহত হয়েছেন । গত ২৫ বছরের মধ্যে মিনার এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো আট শতাধিক হাজি।

এ দুর্ঘটনার পর হজ সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সৌদি বাদশাহ বিষয়টি আরো উন্নত করা যায় কিনা সে কথা স্বীকার করেছেন। একইসঙ্গে ভয়াবহ এই বিপর্যয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

সূত্র : আইআরআইবি ও দ্য গার্ডিয়ান।

চাঁদপুর টাইমস : এমআরআর/২০১৫

Share