চাঁদপুরে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হচ্ছে ৪টি কমিউনিটি ক্লিনিক

চাঁদপুরে ২০২১-২০২২ চলতি অর্থবছরে অত্যাধুনিক ৪টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ হচ্ছে।এর ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ১ কোটি ৫ লাখ টাকা। প্রতিটির গড় ব্যয় ২৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা।২০২১ সালের আগস্ট থেকে এ গুলোর কাজ শুরু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ১ ডিসেম্বর দুপুরে প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মো.মাহফুজ হোসেন এ তথ্য জানান।

প্রাপ্ত তথ্য মতে,মতলব উত্তরে ২টি-যার ব্যয় ৫৬ লাখ টাকা। মতলব দক্ষিণে ১টির ব্যয় ২৪ লাখ টাকা।শাহরাস্তিতে ১টি যার ব্যয় ২৪ লাখ টাকা। মতলবটি হলো: ঠাকুরচর ও বেগমপুর এবং মতলব দক্ষিণের হলো-নাউরি পশ্চিম এবং শাহরাস্তির-সিবপুর।

দুটো দ্বিতল ও অপর দুটো ১ তলাভীতে ৩ কক্ষ বিশিষ্ঠ ৮ শত্যাংশের ওপর নির্মিত হবে। প্রতিটিতে ১টি ডেলিভারী, কমিউনিটি প্রোভাইডারের জন্যে ১টি,স্টোর রুম, কমন টয়লেট ও প্রয়োজনীয় বারান্দাসহ স্প্যাস রয়েছে।

জাতীয় টিকাদান কর্মসূচিসহ ৬টি অত্যাবশকীয় টিকা প্রদান করা হয়। এখানে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩ টা পর্যন্ত স্বাস্থ্য বিভাগীয় কর্মী ও ২শ’১০জন হেলথ প্রোভাইডর নিয়োজিত রয়েছে। আর্সেনিক আক্রান্ত,সর্দি,কাশি,আমেশয়,ডায়রিয়া,  এ্যাজমা,কীটপতেঙ্গের কামড়ের চিকিৎসা,পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক পরামর্শ,কাশি,চুলকানি,দুর্বলতা,স্বাভাবিক ডেলিভারী, গ্রাস্টিক,আলসার,রক্তশূন্যতা বা স্বল্পতা প্রভৃতি রোগের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানই কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রধান কাজপ্রভৃতি কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো থেকে সেবা প্রদানের সরকারি নির্দেশ রয়েছে।

স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মাহফুজ হোসেন বলেন,‘চাঁদপুরে ২০২১-’২২ অর্থবছরের ৪ টির মধ্যে ইতোমধ্যেই কাজ শুরু ও জুনে শেষ হবে। অতীতের গুলো থেকে এগুলো অনেক আধুনিক ও উন্নত্। জরুরি ও প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা থাকবে। বর্তমানে করোনা প্রতিরোধের টিকা কার্যক্রম বিদ্যমান থাকবে। সিভিল সার্জন অফিস থেকে সরকারিভাবে ঔষধ ও জনবল দিয়ে জেলার কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো পরিচালনা করেন।’

, প্রসঙ্গত,বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাছিনার ১০টি অগ্রাধিকার প্রকল্পের মধ্যে কমিউনিটি ক্লিনিক ১টি। ১৯৯৯-২০০০ অর্থবছরে তৎকালীন আ’লীগ সরকার প্রধান শেখ হাসিনা সারা দেশব্যাপি পল্লী এলাকায় প্রতি ৬ হাজার হতদরিদ্র ও অসহায় মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবা দোরগোঁড়ায় পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে বারান্দাসহ ৬ শত্যাংশ ভূমির ওপর একটি আর্সেনিকমুক্ত টিওবেল বা কলসহ ৪ লাখ ২৪ হাজার টাকা ব্যয়ে দু’কক্ষ বিশিষ্ট একটি করে কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। জমিদাতা ও স্থানীয় পর্যায়ের ১৭ সদস্য বিশিষ্ট গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সার্বিক পরামর্শে পরিচালিত হচ্ছে ।

গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গীপাড়ার পাটগাতি ইউনিয়নের গিমাডাঙ্গা গ্রামে দেশের প্রথম কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ শেষে ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

১৯৯৬ সালে ৬ হাজার গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য একটি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। ১৯৯৮ সালের ২৮জুন একনেক সভায় এটি অনুমোদন লাভ করে। পরে সরকার পরিবর্তন হলে ২০০১ সালে প্রকল্পটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্প পুনরায় চালু করে।

সারা দেশে ১৪ হাজার ৮৯০টি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এ পর্যন্ত ক্লিনিকগুলো থেকে গড়ে সেবা গ্রহণকারীর সংখ্যা ৬২ লাখ ৫৭ হাজার ।বর্তমানে ১৩ হাজার ৮৬১টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। আরও ১ হাজার ২৯টি বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনা রয়েছে।

গ্রামীণ জনগণের স্বাস্থ্যসেবায় সারা দেশের কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্য বছরে ১৮০ কোটি টাকার ওষুধ সরবরাহ করা হয়। এতে ৩২ প্রকার ওষুধ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পাচ্ছেন ওয়ার্ড পর্যায়ের স্বাস্থ্য সেবা গ্রহীতারা। দেশের গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর মাঝে কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্যসেবায় অত্যন্ত সহযোগী ভূমিকা পালন করে আসছে

বর্তমানে স্বাস্থ্যসেবায় যে অগ্রগতি সেটি মূলত এ কমিউনিটি ক্লিনিক সেবার জন্যই সম্ভব হয়েছে। এ চিকিৎসা ব্যবস্থাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সরকার নানামুখী চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

আবদুল গনি , ৪ ডিসেম্বর  ২০২১

এজি

Share