Home / উপজেলা সংবাদ / মতলব উত্তর / চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে ঝুলন্ত সেতু নির্মাণ প্রকল্প বাতিল হচ্ছে
নির্মাণ
চাঁদপুরে ঝুলন্ত সেতুর মডেল

চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে ঝুলন্ত সেতু নির্মাণ প্রকল্প বাতিল হচ্ছে

দেশে প্রথমবারের মতো চার লেন বিশিষ্ট ঝুলন্ত সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয় চাঁদপুরের মতলব উত্তরে। চীনের সুটং ইয়াংজি নদী সেতু, ভারতের রাজিব গান্ধী সমুদ্র সেতু, ফ্রান্সের মিলাউ ভায়াডাক্ট কিংবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো-ওকল্যান্ড বে ব্রিজের মতো বাংলাদেশেও কেবল স্টেড বা ঝুলন্ত (তারের) সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করে আওয়ামী লীগ সরকার।

চাঁদপুর ও মুন্সিগঞ্জ জেলায় সংযোগ স্থাপনকারী ঝুলন্ত এ সেতুটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ৪ হাজার ১৭৪ কোটি ৬৭ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া ও মতলবের মেঘনা-ধনাগোদা নদীর ওপর চার লেনের ঝুলন্ত এ সেতুটি নির্মাণ হওয়ার কথা ছিল।

সেতুর মোট দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৮৫০ মিটার। এর সঙ্গে সাড়ে সাত কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হতো। প্রকল্পটির কাজ ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ২০২৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়ার কথা ছিল। দেশীয় এবং বিদেশি অর্থে সড়ক ও জনপথ বিভাগ এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পের মোট ব্যয়ের মধ্যে কোরীয় ঋণ ৩ হাজার ৫১৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা এবং বাকি ৬৬০ কোটি ৭২ লাখ টাকা সরকারি কোষাগার থেকে মেটানো হবে। প্রকল্পে এখন পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৪৬ লাখ ৫২ হাজার টাকা, যা মোট ব্যয়ের মাত্র ০ দশমিক ০১ শতাংশ।

সেতুটি নির্মাণ হলে ওই তিন জেলার মানুষ সহজে এবং স্বল্প সময়ে রাজধানী ঢাকাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় যাওয়া-আসা করতে পারার কথা বলে প্রকল্পটি অনুমোদন করিয়ে নেওয়া হয়। অথচ মুন্সিগঞ্জ, নোয়াখালী ও চাঁদপুর থেকে ঢাকায় যাতায়াতের সড়ক ব্যবস্থা উন্নত হয়েছে। প্রকল্পটি নেওয়ার সময় পরিকল্পনা কমিশন ইতিবাচক অর্থনৈতিক মতামত দেয়নি। তারপরও অনুমোদন করে নেওয়া হয় প্রকল্পটি।

সেতুটির রুটে ছোট ছোট যানবাহন চলাচল করে। ফলে প্রকল্পে যে খরচ হবে তা টোল আদায় করে উঠবে না। ফলে এটা একটি অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প ও বাড়তি খরচ বলে মতামত দিয়েছে কমিশন। প্রকল্পটি প্রাথমিক ধাপে আছে বলে বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।

প্রকল্পটি অপ্রয়োজনীয় করিডোরে হচ্ছে দাবি করে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ বুয়েটের অধ্যাপক শামছুল হক বলেন, ‘নিজেদের আখের গোছাতেই ঋণের প্রকল্পটি নেওয়া হয়। যেনতেন ফরমায়েসি ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি করেই প্রকল্পটি হাতে নেওয়া। আমরা ঢাকা-চট্টগ্রামে এক্সপ্রেসওয়ে করতে পারছি না। অথচ এমন অহেতুক প্রকল্পে ৫ হাজার কোটি টাকা খরচের মানে দেখছি না। এ ধরনের প্রকল্প পুনরায় ভিজিট করা জরুরি। আওয়ামী লীগ সরকার কয়েকটি শ্বেতহস্তি বানিয়ে ফেলেছে। নতুন করে আর যেন শ্বেতহস্তি না বানায়। বর্তমানে ডলারের সংকট। সুতরাং এ প্রকল্পটি নেওয়ার মানে নেই।’

চাঁদপুর টাইমস ডেস্ক/ ১৭ অক্টোবর ২০২৪