মাতৃভূমি বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও আমরা অনেক ক্ষেত্রে, অনেক কারণে ‘পছন্দমত প্রার্থীকে’ নিে গণতান্ত্রিক পরিবেশে স্বাধীন সার্বভৌম দেশ গঠনে আমাদের রয়েছে দীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাস। লক্ষ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে প্রিয় জর ভোট, নিজে দিতে পারি না। স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়েও স্বাধীনভাবে ভোট দিতে না পারাটা, আমাদের জন্য অনেক কষ্টের। ভোটের এ’রকম পরিস্থিতি একটি স্বাধীন জাতির জন্য অনেক কলঙ্কের। আমাদেরকে এ কলঙ্ক মুছতে হবে।
বাংলাদেশে প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিদ্যমান। প্রচলিত পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ ব্যবস্থার কারণে, যদি কখনও কর্তৃপক্ষের স্বদিচ্ছা ও প্রাণপণ চেষ্টা থাকে তা সত্ত্বেও সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেয়া অনেক কঠিন। আর নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিগণ যদি কারো পক্ষ অবলম্বন করেন, তাহলে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন প্রহসনে পরিণত হওয়া স্বাভাবিক। এমন একজন ভোটার, তিনি যেখানে অবস্থান করুণ না কেন, তিনি তার অবস্থান থেকেই “ফিঙ্গার প্রিন্টের” মাধ্যমে ভোট প্রদান করতে পারার পদ্ধতি। যা বাস্তবায়িত হলে আন্তর্জাতিক অঙ্গণে ইলেকশান পদ্ধতির মডেল হতে পারে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ।
পরিস্থিতিতে ভোটের অধিকার, নিরপেক্ষতা, নিরপেক্ষতা, গণতান্ত্রিক চর্চা, জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার এই বিষয়গুলি কেবল ফাঁপা বুলিতে পরিণত হওয়া ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। অথচ আমরা সকলে জানি ভোট জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং পবিত্র আমানত। জনগণের পবিত্র আমানতকে নিয়ে প্রহসনমূলক নির্বাচন মোটেই কাম্য নয়।
যথাযথ নির্বাচনের পর যে দলই সরকার গঠন করে দেশ পরিচালনা করুক, আমরা শ্রদ্ধাভরে তাদের নেতৃত্ব মেনে চলতে চাই। নির্বাচিত সরকার জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার হবে-এটাই জনগণের প্রত্যাশা। কাজেই সে লক্ষ্যে আর দেরি নয়, জরুরিভিত্তিতে আমাদের দেশের ভোটিং পদ্ধতির যুগোপযোগী সংস্কার প্রয়োজন। তাই বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ-পরিস্থিতির বিবেচনায় ভোট গ্রহণের এমন একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন ও বাস্তবায়ন করা জরুরি যাতে নির্বাচন সামগ্রিকভাবে গ্রহণযোগ্যতা পায়।
তবে, বলে রাখা ভালো যে কোনো বিষয়ে এমন কোনো পদ্ধতি নেই, যার মধ্যে যৎসামান্য ত্রুটি খুঁজে পাওয়া যাবে না। কাজেই ভালো-মন্দ সকল দিক বিবেচনায় বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সর্বাধিক ত্রুটিমুক্ত ও গ্রহণযোগ্য ভোট প্রদান পদ্ধতি উদ্ভাবন ও বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। যদিও নতুন যে কোন পদ্ধতি উদ্ভাবন ও বাস্তবায়ন অনেক কঠিন, তারপরও সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে ভেবে চিন্তে সংস্কার করা দরকার।
প্রশ্নবিদ্ধ ইভিএম নয় গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে ডিজিটাল যুগে মোবাইল ভোটিং পদ্ধতি সংক্রান্ত প্রস্তাব পেশ করা আবশ্যক বলে মনে করি। সে প্রেক্ষিতে আমি টেকনিক্যাল পার্সন না হওয়া সত্ত্বেও একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে বর্তমান প্রেক্ষাপটের বিবেচনায় সুন্দর ভবিষ্যতের প্রত্যাশায় ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণের ভাবনাটুকু বিবেকের দায় থেকে উপস্থাপন করছি ।
মোবাইল ভোটিং পদ্ধতি : প্রস্তাবিত মোবাইল ভোটিং পদ্ধতি হচ্ছে-একজন ভোটার, তিনি যেখানে অবস্থান করুন না কেন, তিনি তার অবস্থান থেকেই ‘ফিঙ্গার প্রিন্টের’ মাধ্যমে ভোট প্রদান করতে পারার পদ্ধতি। যাকে ‘ডিজিটাল ভোটিং মেথড’ বা ‘মোবাইল ভোটিং পদ্ধতি’ নামে অবিহিত করা যেতে পারে। উক্ত পদ্ধতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিজ্ঞ দায়িত্বশীলদের মর্যাদাপূর্ণ ভূমিকা আবশ্যক। সে লক্ষ্যে সংশ্লিষ্টগণের সহযোগিতায় নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে নির্বাচন সংক্রান্ত একটি ‘নির্বাচন অ্যাপ’ তৈরি করা। এতে কিছু প্রতিবন্ধকতা থাকবেই। সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করে ‘নির্বাচন অ্যাপ’টি তৈরি করা হলে প্রস্তাবিত পদ্ধতিটি বাস্তবায়ন অসম্ভব বলে মনে করি না।’
নির্বাচন অ্যাপ’ তৈরি করার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক গৃহিতব্য কার্যক্রম : ১. মোবাইল ভোটিং-এর জন্য বাংলাদেশের বৈধ নাগরিককে নিয়ম মোতাবেক যথাযথ পদ্ধতিতে ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত করা ২. প্রত্যেক ভোটারের জন্য নির্বাচন সংশ্লিষ্ট অতি প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত তথ্যাদি মোবাইল ভোটার একাউন্টে অন্তর্ভুক্ত করা। অর্থাৎ- নির্বাচন কেন্দ্রের নাম ও কোড নম্বর, ভোটারের নাম, পিতার নাম, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ইত্যাদি।
৩. সকল পর্যায়ের স্থানীয় সরকার নির্বাচন বা জাতীয় বা সংসদীয় আসনের নির্বাচনের লক্ষ্যে, ‘ডিজিটাল ব্যালট পেপারে’ প্রার্থীদের নাম ও কোর্ড নম্বর, সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর প্রতীক, ইত্যাদি সময়ে সময়ে নির্বাচন মোতাবেক, নির্বাচন অ্যাপে অন্তর্ভুক্ত করারমত ব্যবস্থা রাখা।
৪. ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে কেন্দ্রভিত্তিক ভোটারই’ তার ভোট, কেন্দ্রওয়ারী (নির্বাচন অ্যাপে সন্নিবেশিত কেন্দ্রটির মাধ্যমে ভোটার তার ভোট) প্রদান করতে পারারমত ব্যবস্থা নির্বাচন অ্যাপে অন্তর্ভূক্ত করা। ৫. তৈরিকৃত ‘নির্বাচন অ্যাপটি ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানারযুক্ত যে কোনো মোবাইল ফোন, ট্যাব, নোটপ্যাড, ল্যাপটপ বা নির্বাচন ডিভাইসে ডাউনলোড বা ইন্সটল’ করে ভোট দিতে পারারমত ব্যবস্থা সহজীকরণ করা।
৬. নির্বাচন কমিশন ভোটের সাথে সংশ্লিষ্ট ‘দল’, দলের মনোনীত ‘প্রার্থী’, প্রার্থীদের নামে বরাদ্দকৃত ‘প্রতীক’সহ নির্বাচন সংক্রান্ত অন্যান্য ‘প্রয়োজনীয় তথ্য’ ভোটিং কার্যক্রম শুরু হওয়ার পূর্বে সময়মত মোবাইল ভোটিং পদ্ধতিতে সন্নিবেশিত করা। ৭. নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক বেধে দেয়া নির্ধারিত সময়ের পূর্বে। নির্বাচন অ্যাপ ‘অটো বন্ধ থাকা’ এবং ভোটের জন্য বেধে দেয়া’ নির্ধারিত সময়ের পর’ ভোট প্রদান ‘কার্যক্রম অটো বন্ধ’ হয়ে যাওয়ার মত ব্যবস্থা নির্বাচন অ্যাপে অন্তর্ভূক্ত করা।
৮. ভোটারের প্রদত্ত ভোটটি কাস্ট হলে বা না হলে রিপ্লাই মেসেজ অন্তর্ভুক্ত থাকার ব্যবস্থা করা। যেমন ‘ধন্যবাদ, আপনার ভোেট গৃহিত হয়েছে’ অথবা ‘দুঃখিত, আপনার ভোট গৃহিত হয়নি’ অথবা ‘ভোট ওয়েটিং’ ‘দয়া কওে অপেক্ষা করুন’ অথবা দয়া করে আবার চেষ্টা করুন, ভোট প্রদান করতে গিয়ে ভোটার কোনো ভুল করলে স্ক্রীনে ‘পুনরায় ভোট প্রদান করুণ’। ভোট গৃহীত হলে দ্বিতীয় বার চেষ্টার পথ লক’ হয়ে যাওয়া সংক্রান্ত বিষয় স্পষ্ট ভেসে উঠা ইত্যাদি সন্নিবেশিত করা।
নতুন পদ্ধতি সম্পর্কে সহজীকরণের উদ্যোগ : ১. নির্বাচনে ভোটারদের ব্যাপক অংশগ্রহণের জন্য ফিঙ্গার প্রিন্ট স্ক্যানারযুক্ত ‘ইলেকশান ডিভাইস’ বা মোবাইল, ফিঙ্গার প্রিন্ট ডিভাইস সহজলভ্য করা। সে লক্ষ্যে সরকার বা নির্বাচন কমিশন কিংবা উদ্যোক্তাগণ সুলভ মূল্যে ইলেকশান ডিভাইস বাজারজাতকরণ করতে যথাযথ ভূমিকা পালন করা। ২. নির্বাচনকালীন সময় ভোটারগণকে ভোট প্রদান সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় অবহিতকরণ সম্পর্কে যথোপযুক্ত’ প্রচার মাধ্যমে প্রচার’ করার ব্যবস্থা করা।
৩. নির্বাচন সংশ্লিষ্টদেরকে নির্বাচন পদ্ধতি বাস্তবায়ন সম্পর্কে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা’ করা। তা’ ছাড়াও নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা মোতাবেক ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা কিংবা উপজেলা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রয়োজন মোতাবেক প্রার্থীসহ প্রতিটি ভোটার ও ভোটের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রয়োজন মোতাবেক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
ভোট কার্যক্রমের জন্য বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা : ১. নির্বাচন কার্যক্রম নিরবিচ্ছিন্নভাবে সম্পন্ন করার জন্য ‘ইন্টারনেট সেবার গতিবৃদ্ধি’ সংক্রান্ত প্রাসঙ্গিক কার্যক্রম যথাযথভাবে সুসম্পন্ন করা;
২. বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচনী আসনের জন্য ‘কেন্দ্রওয়ারী ভোটারের’ সংখ্যা অনুপাতে ‘পর্যাপ্ত নেটওয়ার্ক’ উন্নয়ন ও ভোটকাস্টিং তথ্য ধারণ ক্ষমতা পর্যাপ্ত করা; নির্বাচন ডিভাইসে কেন্দ্রওয়ারী ‘ভোট প্রদানের গড় সময় ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে ৩. আসার জন্য ‘নেটওয়ার্কের ধারণক্ষমতা’ পর্যাপ্ত করা; মোবাইল ভোটিং পদ্ধতির অপারেটিং সিস্টেম অথবা ‘সার্ভার যেন হ্যাং না হয়’
৪. কিংবা নির্বাচনকালীন যেন ‘হ্যাকিং-এর শিকার না হয়’, কিংবা ‘সাইবার হামলা রোধক’ প্রযুক্তিগত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। অপেক্ষা করুন’ অথবা দয়া করে আবার চেষ্টা করুন, ভোট প্রদান করতে গিয়ে ভোটার কোনো ভুল করলে স্ক্রীনে ‘পুনরায় ভোট প্রদান করুণ’। ভোট গৃহীত হলে দ্বিতীয় বার চেষ্টার পথ লক’ হয়ে যাওয়া সংক্রান্ত বিষয় স্পষ্ট ভেসে উঠা ইত্যাদি সন্নিবেশিত করা।
নতুন পদ্ধতি সম্পর্কে সহজীকরণের উদ্যোগ : ১. নির্বাচনে ভোটারদের ব্যাপক অংশগ্রহণের জন্য ফিঙ্গার প্রিন্ট স্ক্যানারযুক্ত ‘ইলেকশান ডিভাইস’ বা মোবাইল, ফিঙ্গার প্রিন্ট ডিভাইস সহজলভ্য করা। সে লক্ষ্যে সরকার বা নির্বাচন কমিশন কিংবা উদ্যোক্তাগণ সুলভ মূল্যে ইলেকশান ডিভাইস বাজারজাতকরণ করতে যথাযথ ভূমিকা পালন করা।
২. নির্বাচনকালীন সময় ভোটারগণকে ভোট প্রদান সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় অবহিতকরণ সম্পর্কে যথোপযুক্ত’ প্রচার মাধ্যমে প্রচার’ করার ব্যবস্থা করা। ৩. নির্বাচন সংশ্লিষ্টদেরকে নির্বাচন পদ্ধতি বাস্তবায়ন সম্পর্কে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা’ করা। তা’ ছাড়াও নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা মোতাবেক ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা কিংবা উপজেলা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রয়োজন মোতাবেক প্রার্থীসহ প্রতিটি ভোটার ও ভোটের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রয়োজন মোতাবেক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
ভোট কার্যক্রমের জন্য বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা : ১. নির্বাচন কার্যক্রম নিরবিচ্ছিন্নভাবে সম্পন্ন করার জন্য ‘ইন্টারনেট সেবার গতিবৃদ্ধি’ সংক্রান্ত প্রাসঙ্গিক কার্যক্রম যথাযথভাবে সুসম্পন্ন করা;
২. বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচনী আসনের জন্য ‘কেন্দ্রওয়ারী ভোটারের’ সংখ্যা অনুপাতে ‘পর্যাপ্ত নেটওয়ার্ক’ উন্নয়ন ও ভোট কাস্টিং তথ্য ধারণ ক্ষমতা পর্যাপ্ত করা; নির্বাচন ডিভাইসে কেন্দ্রওয়ারী ‘ভোট প্রদানের গড় সময় ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে ৩. আসার জন্য ‘নেটওয়ার্কের ধারণক্ষমতা’ পর্যাপ্ত করা; মোবাইল ভোটিং পদ্ধতির অপারেটিং সিস্টেম অথবা ‘সার্ভার যেন হ্যাং না হয়’ ৪. কিংবা নির্বাচনকালীন যেন ‘হ্যাকিং-এর শিকার না হয়’, কিংবা ‘সাইবার হামলা রোধক’ প্রযুক্তিগত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
ভোটারের ভোট প্রদান পদ্ধতি : ১) নির্বাচনকালীন সময়ে ভোটার যেখানেই অবস্থান করুন না কেন, তিনি স্বাভাবিক নিয়মে তার ব্যবহৃত ইলেকশান ডিভাইসে ফিঙ্গার প্রিন্ট বা ফিঙ্গার টাচের মাধ্যমে নির্বাচন অ্যাপে’ টাচ করবেন। ( তিনি ভোটার হলে ‘তার ভোটের কেন্দ্রের ফ্রোপাইল’ বা তথ্য পৃষ্ঠা ভেসে উঠবে বা ওপেন হবে। অথবা তিনি ভোটার না হয়ে থাকলে, উক্ত পেইজ ওপেন হবে না। (সংশ্লিষ্টজন ভোটার হয়ে থাকলেই কেবলমাত্র টাচের মাধ্যমে ভোটারের তথ্যসহ ‘পেইজ ওপেন’ হবে। অন্যথায় না। )
অতঃপর ঘবী : এ কিক করলে সংশ্লিষ্ট নির্বাচন ও ভোট সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য পেইজ, ‘ব্যালট পেপার পেইজ’ ওপেন হবে। (সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী আসন, প্রার্থীদের নাম, ছবি, প্রতীকসহ ব্যালট পেপার পেইজ ভেসে উঠবে)। ২) অত:পর ভোটার তার পছন্দের প্রার্থীর প্রতীকে বা নির্ধারিত স্থানে ‘আঙ্গুলের ছাপ’ দিয়ে টাচ করে ভোট প্রদান করবেন। প্রয়োজনীয় ‘রিপ্লাই মেসেজ পাবেন’ এবং সে মোতাবেক ভোট দানের বিষয়টি সম্পর্কে তিনি নিশ্চিত হবেন।
ভোট মনিটরিং : ১) নির্বাচন কমিশন ভোটিং পদ্ধতির বিভিন্ন পর্যায় সংক্রান্ত বিষয়াবলী যথাযথভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় মনিটরিং এর ব্যবস্থা নিশ্চিত করবেন। ২) নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ভোটের দিনের জন্য পূর্ব থেকে ‘নির্বাচন কমিশন অফিস’, ‘জেলা নির্বাচন অফিস’ এবং ‘উপজেলা নির্বাচন অফিসে’ অন্যান্য আবশ্যকীয় ব্যবস্থার পাশাপাশি দায়িত্বশীল ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণ ভোট মনিটরিং করার জন্য ‘ বড় স্ক্রীনের’ ব্যবস্থা রাখবেন এবং তথ্যাদি অটো প্রিন্ট হতে থাকার মত একাধিক ব্যবস্থাও নিশ্চিত করবেন।
ক) ‘উপজেলা নির্বাচন অফিসে’ ভোট মনিটরিং স্ক্রীনে কেবলমাত্র ‘সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি আসন সংক্রান্ত’ ভোটের যাবতীয় তথ্য প্রদর্শিত হওয়ার মত একাধিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। স্ক্রীনে ঐ আসনের বিভিন্ন কেন্দ্রের ভোট কাস্ট হওয়ার সংখ্যা অর্থাৎ- সংশ্লিষ্ট আসনের সকল কেন্দ্রের ভোট কাস্ট হওয়া এবং ভোটের মোট সংখ্যা প্রদর্শিত হতে পারার মত একাধিক ব্যবস্থা থাকা। খ) অনুরূপভাবে জেলা নির্বাচন অফিসের স্ক্রীনে, সংশ্লিষ্ট ‘জেলাওয়ারী আসন সমূহের’ ভোটদানের তথ্য মনিটরিং এর ব্যবস্থা প্রদর্শিত হওয়ার মত একাধিক ব্যবস্থা রাখা। গ) ‘নির্বাচন কমিশন অফিসে’ সংশ্লিষ্ট আসন কিংবা জাতীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে সারা দেশের ‘সকল আসনের’ বিস্তারিত তথ্য প্রদর্শনের মত একাধিক ব্যবস্থা রাখা।
৩) ভোট প্রদানের শুরু থেকে উপরোক্ত স্থানের স্ক্রীনসমুহে অর্থাৎ- উপজেলা, জেলা ও নির্বাচন কমিশনের ডিসপ্লে স্ক্রীনে ভোট কাস্ট হওয়ার তথ্য প্রদর্শিত হতে থাকবে। প্রত্যেক কেন্দ্রের ভোট কাস্ট হওয়ার তথ্য ও গতি প্রকৃতি প্রতি মুহুর্তে স্পষ্ট দেখা যাওয়ার মত নিরবিচ্ছিন্ন ব্যবস্থা রাখা। যার প্রেক্ষিতে প্রয়োজন মোতাবেক নির্বাচন কমিশন কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। প্রতিটি পর্যায়ে প্রতি কেন্দ্রের ভোট কার্যক্রম নিরবিচ্ছিন্নভাবে অটো প্রিন্ট হতে থাকার মত একাধিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
ফলাফল ঘোষণা : ১। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে ‘উপজেলা’ নির্বাচন অফিস এবং ‘জেলা’ নির্বাচন অফিস ভোটের ফলাফলের সফ্টকপির পাশাপাশি ‘হার্ডকপি’ প্রিন্টার থেকে বের করবেন। নির্বাচন কাজে দায়িত্ব প্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিগণ নিয়ম মোতাবেক হার্ডকপিতে প্রয়োজন মোতাবেক স্বাক্ষর করে নির্বাচনের ফলাফল সম্বলিত হার্ডকপিও ‘নির্বাচন কমিশন অফিসে’ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পাঠিয়ে দেবেন। উপজেলা নির্বাচন অফিস প্রত্যেক প্রার্থী বা তাদের নমিনি কিংবা এজেন্টদের কাছেও স্বাক্ষরিত কপি হস্তান্তরের ব্যবস্থা করবেন। স্থানীয়ভাবে নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফল ঘোষণার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
২। নির্বাচন কমিশন যথাযথ নিয়মে প্রাপ্ত তথ্যাবলীর ভিত্তিতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিধি মোতাবেক নির্বাচনি আসন কিংবা আসন সমূহের ভোটের চূড়ান্ত ফলাফল যত দ্রুত সম্ভব ঘোষণা করবেন।
৩। নির্বাচন কমিশন ভোট গ্রহণ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যাবলী সফ্ট কপির পাশাপশি হার্ডকপিতে স্থায়ীভাবে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করবেন। ৪। নির্বাচন কমিশন ফলাফল সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্যাদি তাদের ওয়েব সাইটে আপলোড করবেন। নাগরিকগণ ইচ্ছা করলে যেকোনো সময় নির্বাচন কমিশনের ওয়েব সাইটে গিয়ে আসন ভিত্তিক বিস্তারিত তথ্যসহ নির্বাচনী ফলাফল যেন দেখতে পারেন এমন ব্যবস্থা নিশ্চিত করবেন।
মোবাইল ভোটিং পদ্ধতির সুবিধা : ১) নির্বাচনকালীন ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ কিংবা ‘অন্তরবর্তীকালীন সহায়ক সরকারের’ রূপরেখা সংক্রান্ত ইস্যুটি বড় হয়ে দেখার সুযোগ কম। এ পদ্ধতিতে ভোট গৃহীত হলে নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার সুযোগ তেমন থাকার কথা নয়। ২) মোবাইল ভোটিং পদ্ধতিতে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, পৌরসভা, উপজেলা, জেলা পরিষদ এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ সকল নির্বাচন আয়োজন করতে গিয়ে নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতিমূলক ঝামেলা বর্তমানের তুলণায় অনেক কমে যাবে।
৩) নিবন্ধিত ভোটারগণ দেশে-বিদেশে, ঘরে-বাইরে, বাসে-ট্রেনে, লঞ্চে কিংবা যে যেখানে, যে অবস্থাতেই থাকুন না কেন মোবাইল ডিভাইস থেকে ইলেকশন অ্যাপের দ্বারা সহজেই ফিঙ্গার টাচের মাধ্যমে ভোট প্রদান করতে পারবেন। ৪) অনেক বেশি সংখ্যক ভোটার ভোট দিতে পারবেন। বিভিন্ন অজুহাতে যে সমস্ত ভোটার ভোট দেন না, এমনকি যে সকল মহিলা ঘর থেকে বের হয়ে ভোটের লাইনে দাড়িয়ে কখনও ভোট দেন নি, এ ধরনের মা-বোনেরা ঘরে বসে ভোট দেয়ার সুবিধার কারণে ভোট দিতে পারবেন; পক্ষান্তরে ভোট কাস্টিং বেশী হবে।
৫) ভোটার তার ফিঙ্গার প্রিন্ট বা টাচের মাধ্যমে ভোট দেয়ার কারণে একজনের ভোট অন্য জন কোনোভাবে প্রদান করতে পারবেন না। তাই জাল ভোট দেয়ার কোনো সুযোগ থাকবে না। মৃত ব্যক্তি কিংবা অনুপস্থিত ব্যক্তির পক্ষের ভোট দেয়া সম্ভব নয়। ৬) এ ব্যবস্থায় ব্যালট বক্স লাগবে না। ব্যালট বক্স ছিনতাইয়ের সুযোগও থাকবে না। ৭) ব্যালট পেপার লাগবে না। তাই ব্যালট পেপার সংক্রান্ত কোনো বিড়ম্বনা থাকবে না।
৮) বাস্তবে ভোট কেন্দ্রের’ প্রয়োজন নেই। কাজেই ‘কেন্দ্র’ প্রস্তুত করার জন্য অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনারও প্রয়োজন নেই। সে প্রেক্ষিতে নির্বাচন কেন্দ্র দখলসহ নানা ধরণের সহিংস কর্মকান্ড সংঘঠিত হওয়ার সুযোগ নেই। ৯) নির্বাচন কাজে প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার, পোলিং এজেন্ট ইত্যাদি কাজে বহুসংখ্যক সরকারি-বেসরকারি স্টাফ, শিক্ষক কর্মচারী কিংবা অন্য কোনো জনশক্তিকে তাদের স্ব স্ব কর্মস্থল কিংবা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে নির্বাচন কাজে মূল্যবান সময় নষ্ট করতে হবেনা ও জীবনের ঝুঁকি নিতে হবে না।
১০) নির্বাচন আয়োজনের কাজে অনেক বেশি সংখ্যক আর্মি, বিজিবি, পুলিশ, র্যাব, আনসার ভিডিপিসহ বিশাল সমন্বিত বাহিনীকে তাদের মূল্যবান সময় ব্যয় করে ও জীবন বাজি রেখে ভোট গ্রহণ কাজে ব্যস্ত থাকার প্রয়োজন হবে না। ১১) নির্বাচনি উপকরণ তৈরি, সংগ্রহ,
প্যাকেটজাতকরণ, পরিবহন ও ব্যবহারের ঝামেলা থাকবে না।
১২) নির্বাচনি উপকরণের যোগান দিতে গিয়ে বিশাল টেন্ডার প্রক্রিয়ার ঝামেলা থাকবে না। ১৩) সরকার, নির্বাচন কমিশন, দল এবং প্রার্থী সকলে মিলে নির্বাচনকালীন কার্যক্রমে কয়েক হাজার কোটি টাকার নির্বাচনি ব্যয় কমে যাবে। ১৪) ভোটারগণকে তাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করে ভোটকেন্দ্রের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না।
১৫) ভোটের সাথে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তা (ভোটার) গণ তাদের ব্যাস্ততার মাঝেও স্ব-অবস্থান থেকে নিজের ভোট নিজে দিতে পারবেন ১৬) উক্ত পদ্ধতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের প্রতিটি ভোটারকে ডিজিটাল প্রযুক্তির সাথে সম্পৃক্ত করা সম্ভব হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ এর সফল বাস্তবায়ন অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
সরকার তথা দেশ জাতির সুবিধা : ১। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব হবে। ২। নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত বিষয়টি বড় হয়ে দেখা দেবে না। ৩। নির্বাচন কমিশনসহ জনপ্রশাসনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার সুযোগ দূরীভূত হবে। ৪। সর্বোপরি জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটেই জনগণের সরকার গঠিত হবে।
মোবাইল ভোটিং পদ্ধতি বাস্তবায়ন সম্পর্কে বলতে গেলে বলতে হয়, যে দেশ মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠাতে পারে, সে দেশের সরকার এবং নির্বাচন কর্তৃপক্ষের স্বদিচ্ছা থাকলে, সকল প্রযুক্তিগত প্রতিবন্ধকতা দূর করে তা বাস্তবায়ন সম্ভব। যা বাস্তবায়িত হলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইলেকশান পদ্ধতির ‘মডেল’ হতে পারে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ।
লেখক : গবেষক, কলামিস্ট ও শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ ড. আলমগীর কবির পাটওয়ারী । ২১ এপ্রিল ২০২৫ , চাঁদপুর । মোবাইিল নং : ০১৭১৩-১০২-৮৪৯ ।
সম্পাদনায় : আবদুল গনি ,
২২ এপ্রিল ২০২৫
এজি