রাজনীতি

নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন লতিফ সিদ্দিকী

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী। আজ রোববার দুপুরে এ ঘোষণা দেন টাঙ্গাইল-৪ আসনের এই স্বতন্ত্র প্রার্থী।

এর আগে দুপুর পৌনে ১২টায় নির্বাচন কমিশনে (ইসি) প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন লতিফ সিদ্দিকী। পরে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানান তিনি।

লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘দেশে নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই, আমার কারণে আমার নেতাকর্মীরা মার খাবে তা আমি মেনে নিতে পারব না। তাই আমি নিজেই নির্বাচন থেকে সরে যাচ্ছি।’

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে জানাচ্ছি যে আমি ১৩৩ টাঙ্গাইল-৪ জাতীয় সংসদ আসনে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলাম। কিন্তু পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে নির্বাচন করার পরিবেশ নেই। নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় রাজনৈতিক দলে, নেতায় নেতায়, জনমতকে পক্ষে পাওয়ার জন্য থাকে ঐকান্তিক প্রচেষ্টা। কিন্তু বর্তমান সংসদ সদস্য বালু ব্যবসায়ী এবং মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে নিয়ে পুলিশের ছত্রছায়ায় আমার ওপর হামলা করে গাড়ি ভাঙচুর করে। এতে ২০/২১ জন সমর্থক আহত হয়।’

লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘বর্তমান এমপি এলাকাকে ত্রাস ও সন্ত্রাসের জনপদে পরিণত করেছে। আমি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। দীর্ঘদিন পুলিশি জুলুমের বিরদ্ধে লড়েছি, কিন্তু পুলিশ এমন উলঙ্গভাবে কোনো প্রার্থীর সমর্থন করে নিরীহ মানুষদের হুমকি দেয়, আমার মিছিল বন্ধ করে সংসদ সদস্যের মিছিলে সহযোগিতা করে এমন দেখেনি। পুলিশের অত্যাচারের পরও আন্দোলন করা যায়, পুলিশ বিপক্ষে অবস্থান নিলে নির্বাচন করা যায় না।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিদিন আমার সমর্থকদের গ্রেপ্তার করে হয়রানি করছে। সংসদ সদস্যের সরাসরি হস্তক্ষেপে, ভরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তার উসকানিতে আমার অফিস ভেঙে দিচ্ছে। পরিস্থিতির এহেন অবনতিতে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি- নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর। আমি আপনার মাধ্যমে দেশবাসীকে জানাতে চাই- আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে আমি সরে দাঁড়ালাম। আমি অসম্মানিত হই সম্মানিত হওয়ার জন্য।’

গত ১৬ ডিসেম্বর কালিহাতীর গোহালিয়াবাড়ি ইউনিয়নের সরাতৈল ও বল্লভবাড়িতে নির্বাচনী প্রচারণার সময় তার গাড়িবহরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কালিহাতী থানার ওসি মীর মোশারফ হোসেনের প্রত্যাহার চেয়ে ওইদিন দুপুর থেকে টাঙ্গাইল ডিসি অফিসের সামনে অবস্থান ধর্মঘটে বসেন লতিফ সিদ্দিকী।

প্রতিকার না পেয়ে পরদিন ১৭ ডিসেম্বর সকাল থেকে অবস্থান ধর্মঘটের সঙ্গে আমরণ অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন লতিফ সিদ্দিকী। পরে অসুস্থ হয়ে পড়লে একইদিন সকালে ডিসি অফিসের সামনে থেকে তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেন তিনি।

লতিফ সিদ্দিকী ১৯৭০ সালে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। এর পর ১৯৭৩, ১৯৯৬, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালে পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী এবং ২০১৪ সালে ডাক তার টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী হন।(আমাদের সময়)

বার্তাকক্ষ
২৩ডিসেম্বর ২০১৮

Share