ধারাবাহিক সংলাপের অংশ হিসেবে বুধবার (১৮ অক্টোবর) ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে বসবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সংলাপে দলের ২২ সদস্যের আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সংলাপে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য দলের পক্ষ থেকে ১১টি প্রস্তাব তুলে ধরা হবে নির্বাচন কমিশনের কাছে। একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনকে সতর্ক করা হবে। নির্বাচন কমিশন এমন কোনো বক্তব্য যেন না দেন যা সরকারকে বিপর্যস্ত অবস্থায় ফেলে।
গত শনিবার বিএনপির সঙ্গে সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা হিসেবে উল্লেখ করেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এ বক্তব্য মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার করা হয়। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা তার (সিইসি) কৌশল হতে পারে। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী সদস্যদের কয়েকজন বলছেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগ দেয়ার পর থেকেই বিএনপি তাকে আস্থায় নিতে পারছে না। বিএনপির আস্থা ফেরানোর জন্য সিইসি এ কথা বলতে পারেন।
তবে আলাপ-আলোচনা করে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী সদস্যদের বড় একটি অংশ চায় না প্রধান নির্বাচন কমিশনার উল্টাপাল্টা কোনো কথা বলুক। কোনো প্রকার রাজনৈতিক বক্তব্য দেয়ার প্রয়োজন নেই। সিইসির কাজ নির্বাচন করা। উনি নির্বাচন করবেন। রাজনৈতিক নেতারা নির্বাচনী খেলা খেলবেন আর সিইসি রেফারির ভূমিকা পালন করবেন।
সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ নেতারা বুধবার আলোচনাকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনকে সতর্ক করবেন। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার মতো যেখানে সেখানে যেন রাজনৈতিক বক্তব্য না দেন। তার যেটা মূল কাজ সেটা নিয়েই যেন তিনি থাকেন।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে দলের একজন নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ শুরু থেকেই জিয়াউর রহমানকে গণতন্ত্র হত্যাকারী ও অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী হিসেবে বিবেচনা করে আসছে। উচ্চ আদালতের একাধিক রায়েও বিষয়টি এসেছে। এই মুহূর্তে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা হিসেবে উল্লেখ করে সিইসি আদালতের রায়ের বিরোধিতা করছেন। তবে আরেক নেতা বলেন, তারা প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে পর্যবেক্ষণ করবেন।
সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার যা বলেছেন তা নিয়ে দলের অন্য নেতারা প্রকাশ্যে কিছু না বললেও দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম তাকে ছেড়ে কথা বলেননি।
গতকাল এক অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) একে এম নুরুল হুদাকে কম কথা বলার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আপনারা রেফারি, আপনাদের কাজ সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনা করা। আপনারা সেটাই করুন। আর কথা কম বলেন। একজন কথা বেশি বলেছেন, দেখেছেন না কি হয়েছে? কথা বলার জন্য আমরা পলিটিসিয়ানরা আছি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে উদ্দেশ করে নাসিম বলেন, এটা একটা সাংবিধানিক পদ। আমরা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তাকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের অনুরোধ করব। সব দল যাতে নির্বাচনে আসে সেই ব্যবস্থা করতে বলব। (জাগোনিউজ)
নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ ১০ : ৩০ পিএম, ১৭ অক্টোবর, ২০১৭ মঙ্গলবার
এইউ