শাহরাস্তি উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগে সরব, সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় বিএনপি

আসন্ন শাহরাস্তি উপজেলা উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ৭ জন মনোনয়ন প্রত্যাশীর নাম আলোচনায় আসলেও দলীয় সিদ্ধান্তের কারণে মনোনয়ন চাইতে পারছেন না বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা।দলীয়ভাবে নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত হওয়ায় কেউ নির্বাচন করতে চাইলেও তাঁকে দল থেকে মনোনয়ন দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন দলের নেতারা।

জানা যায়, এ বছরের ২৬ মার্চ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মোঃ ফরিদ উল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুতে উপজেলা চেয়ারম্যানের পদটি শূণ্য ঘোষনা করে নির্বাচন কমিশন। এরপর থেকেই নতুন করে উপজেলা চেয়ারম্যানের পদটি নিয়ে উপজেলা জুড়ে আলোচনা শুরু হয়। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন হতে তফসিল ঘোষণা করা হলেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন প্রার্থীকে মনোনয়ন সংগ্রহ করতে দেখা যায় নি।

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে বিভিন্ন সভা সমাবেশ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই প্রার্থীতা ঘোষনা করেছেন। তাদের মধ্যে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ কামরুজ্জামান মিন্টু, কেন্দ্রীয় মহিলা যুবলীগের সাবেক নেত্রী ও প্রয়াত ফরিদ উল্লাহ চৌধুরীরর সহধর্মিনী নাসরিন জাহান চৌধুরী সেফালী, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিল্লাল হোসেন তুষার, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জেড এম আনোয়ার হোসেন, আইন বিষয়ক সম্পাদক এড. ইলিয়াছ মিন্টু, জেলা পরিষদ সদস্য উপজেলা আওয়ামীলীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ জাকির হোসেন পাটোয়ারি, পৌর আওয়ামীলীগের সাবেক আহবায়ক মোঃ রেজাউল করিম মিন্টু, ২০১৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্ধন্ধি স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মুকবুল হোসাইনের নাম শুনা যাচ্ছে।

বিএনপি হতে উপজেলা যুবদলের সভাপতি মোঃ আলী আসগর মিয়াজী, সাধারণ সম্পাদক এড. সাহেদুল হক মজুমদার সোহেল ও পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ বেলায়েত হোসেন সেলিমের নাম শুনা যাচ্ছে। তবে দলীয়ভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহনের সিদ্ধান্ত না হলে শেষ পর্যন্ত তারা নির্বাচনে অংশগ্রহনের সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন সম্ভব্য প্রার্থীরা।

এছাড়া জাতীয় পার্টির সভাপতি ও বিআরডিবি’র চেয়ারম্যান এম এ মান্নান মোল্লার প্রার্থীতার কথা আলোচনায় রয়েছে।

নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামীলীগের প্রার্থীরা দলীয় প্রতীক পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করজলেও বিএনপিসহ অন্য রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের তেমন কোন তৎপরতা লক্ষ করা যায়নি।

পৌর বিএনপির সভাপতি মোঃ আবুল খায়ের সিএ জানান, বিএনপি স্থানীয় নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনেই বিএনপি অংশ নিবে না। কেউ ব্যক্তিগত ভাবে নির্বাচনে অংশ নিবে কিনা তা আমার জানা নেই।

উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ সেলিম পাটোয়ারী লিটন জানান, স্থানীয় নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিবে না। সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হলে পরে জানানো হবে।

উপজেলা নির্বাচনী এলাকার ভোটার ফরিদ আহমেদ জানান, উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন শিক্ষিত যোগ্য প্রার্থী প্রত্যাশা করছেন তিনি। তার মতে উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার না করে জনসেবায় নিজেকে বিলিয়ে দেন, এমন প্রার্থী চান জনগণ।

আওয়ামীলীগ সমর্থক মোঃ আজাদ হোসেন রাঢ়ী জানান, প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে যোগ্য ও ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করা না হলে, দলে অন্তঃকোন্দলের মতো ঘটনা ঘটতে পারে।

প্রসঙ্গত, গত ২ সেপ্টেম্বর শাহরাস্তি উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচনের তফসীল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। তফসীল মতে, মনোনয়ন দাখিলের শেষ তারিখ ১৩ সেপ্টেম্বর, মনোনয়ন বাছাই ১৪ সেপ্টেম্বর, আপিল দাখিলের শেষ তারিখ ১৭ সেপ্টেম্বর, আপিল নিষ্পত্তি ১৮ সেপ্টেম্বর, প্রার্থীতা প্রত্যাহার ১৯ সেপ্টেম্বর, প্রতীক বরাদ্দ ২০ সেপ্টেম্বর ও ৭ অক্টোবর সকাল ৮ টা হতে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত ভোটগ্রহন অনুষ্ঠিত হবে।

শাহরাস্তি প্রতিনিধি

Share