২৮ মে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস । মাতৃস্বাস্থ্য,নিরাপদ প্রসব,পুষ্টি ও স্বাস্থ্য সেবার গুণগত মান বৃদ্ধি সম্পর্কে মা,পরিবার ও সমাজের সকল স্তরে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সকলের প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করাই এ দিবসের মূল উদ্দেশ্য।
‘নিরাপদ প্রসব চাই -স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চল চাই’ এ স্লোগানকে ধারণ করে ২৮ মে দেশে ‘নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস’ পালন হচ্ছে। এ বছর নিরাপদ মাতৃত্ব দিবসকে সামনে রেখে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যাটারনাল হেলথ কর্মসূচির উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলনের দিবসের কর্মসূচি ও লক্ষ্য উপস্থাপন করা হয় ।
শনিবার ( ২৬ মে ) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য ও পবিরবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালিক ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ এ তথ্য জানিয়েছেন।
মাতৃস্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি ও মাতৃমৃত্যু রোধকল্পে ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবছর ২৮ মে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস পালনের ঘোষণা দেন।
প্রসঙ্গত, মা ও শিশুমৃত্যু রোধ এবং তাদের স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতার বিষয়ে সবাইকে সচেতন করার পাশাপাশি তাদের সমস্যা প্রতিরোধ করার প্রত্যয়ে ১৯৮৭ সাল থেকে শুরু হয় ‘নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস’ পালন।
বাংলাদেশে গর্ভধারণের ৪২ দিন পর্যন্ত দুর্ঘটনা ছাড়া মায়ের মৃত্যুকে মাতৃমৃত্যু বলা হয়। মৃত্যুর পরোক্ষ কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদর্রোগ, ক্যানসার, স্থ’ূলতা, যক্ষ্মা, রক্তস্বল্পতা, হেপাটাইটিস-বি, বেশি বয়সে প্রথম সন্তান ও বেশি সন্তান নেয়া, এইচআইভি বা এইডস, ম্যালেরিয়া ইত্যাদি।
মূলত: গর্ভকালীন জটিলতা, দক্ষ স্বাস্থ্যসেবা দানকারীর অনুপস্থিতি, প্রয়োজনীয় যতেœর অভাব, এ বিষয়ে পরিবারের অসচেতনতা, প্রসব-পরবর্তী সেবাযতেœর অপ্রতুলতায় একজন মাকে ঠেলে দিচ্ছে সীমাহীন অনিশ্চয়তা, দুর্ভোগ আর কষ্টের মুখে।
আমাদের দেশে প্রতিদিন গড়ে ১৪ জন মা প্রসবজনিত কারণে অনাকাংক্ষিত মৃত্যুবরণ করেন। এখনো ৪২ % প্রসব দক্ষ ও অবশিষ্ট প্রসব বাড়িতে অশিক্ষিতদের হাতে হচ্ছে। প্রতিবছরে ৩০ থেকে ৩২ লাখ মায়ের প্র্রসব হয় বাংলাদেশে। এর মধ্যে দেড় থেকে ২ লাখ সরকারি হাসপাতালে প্রসব হয়। বাড়িতে হয় ২১ লাখ প্র্রসব। বাকি প্রসব হয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে।
১১ থেকে ১২ % হয় সিজারিয়ানের মাধ্যমে। এ যুগে এমন মাতৃমৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। তাই মাতৃমৃত্যু শূন্যে নামিয়ে আনাই হোক নিরাপদ মাতৃত্ব দিবসের অঙ্গীকার।
নারীর চিরন্তন পরিচয় ‘মা’ এবং মা পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর শব্দ। বংশানুক্রম ধারা টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব প্রকৃতিগতভাবেই নারীর মাতৃত্বের মধ্য দিয়ে শুরু। একজন নারীর পূর্ণতা আসে মাতৃত্বে।
প্রতিবছর সারা বিশ্বে ২১ কোটি নারী গর্ভবতী হয় এবং দু’ কোটিরও বেশি নারী গর্ভজনিত স্বাস্থ্য-সমস্যায় ভোগে। এদের মধ্যে আবার ৩০ লাখের মত জীবনাশঙ্কায় থাকে। অত্যন্ত গরিব জনগোষ্ঠীর মধ্যে জটিলতায় ভোগার আশঙ্কা অপেক্ষাকৃত ধনীদের তুলনায় প্রায় ৩শ গুণ বেশি।
প্রতিবেদক : আবদুল গনি, আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৭ : ১৫ পিএম, ২ ৭ মে ২০১৭, শনিবার