দ্বিতীয় ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়া ৩৪৯ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল। যেই লক্ষ্য টপকাতে নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসটাকেই নতুন করে লিখতে হতো পাকিস্তানকে। লাহোরের মাঠে হয়েছেও তাই। অবিশ্বাস্য ম্যাচে ৬ বল হাতে রেখে অজিদের ৬ উইকেটে হারিয়ে সিরিজ বাঁচিয়ে রেখেছে স্বাগতিক দল। যে জয়ে বাবর আজমের দল নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়া করার নজিরও গড়েছে।
অথচ অজিদের প্রথম ইনিংসের পর ধরেই নেওয়া হয়েছিল এই লক্ষ্য স্বাগতিকরা টপকাতে পারবে না! কিন্তু সব অনুমান উড়িয়ে সেই জয়ের মঞ্চটা গড়লেন ইমাম উল হক। ফখর জামানকে নিয়ে উদ্বোধনী জুটিতে করলেন ১১৮ রান। ফখরের বিদায়ের পর বাবরকে নিয়েই ইমাম এগিয়ে যান অনেকটা পথ। ৯৭ বলে ৬টি চার ও ৩টি ছয়ে ইমাম ১০৬ রানে ফিরলেও জয়টাকে সম্ভাব্য করে তুলতে থাকেন বাবর আজম। ঝড়ো গতিতে সেঞ্চুরি করার পথে পাকিস্তান অধিনায়ক কীর্তিও গড়েছেন। ৮৩ ইনিংসে ১৫তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি করতে তিনিই ছিলেন সবচেয়ে দ্রুততম। তার ব্যাটে লক্ষ্যটা যখন প্রায় দৃষ্টি সীমানায়, ঠিক তখনই জয়ের একটা সম্ভাবনা তৈরি করে অস্ট্রেলিয়া। ৪৫তম ওভারে ১১৪ রানে ব্যাট করতে থাকা বাবরকে সাজঘরে পাঠান এলিস। পরের ওভারে ২৩ রানে ব্যাট করতে থাকা রিজওযানকেও বিদায় দেন জাম্পা। কিন্তু শেষ মুহূর্তে অস্ট্রেলিয়ার জ্বলে উঠা ওই পর্যন্তই। এর পর আর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণে থাকতে পারেনি। বলের ব্যবধান বেড়ে যাওয়ার মুহূর্তে জ্বলে উঠেন খুশদিল শাহ। ১৮ বলে যখন ২৭ রান প্রয়োজন, ঠিক তখনই একটি চার ও একটি ছয় মেরে ফিনিশারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। ৪৯তম ওভারে আবারও এক চার, এক ছয় ও এক রান নিয়ে স্কোরটাকে নিয়ে আসেন সমতায়। একই ওভারের শেষ বলে চার মেরে অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্য টপকান ইফতিখার। ৪ উইকেট হারানো পাকিস্তান এরপর উল্লাসে মাতে ইতিহাস গড়ার আনন্দে।
ম্যাচসেরা হওয়া বাবরের ইনিংসটি ছিল ৮৩ বলে ১১টি চার ও ১ ছয়ে সাজানো। খুশদিল ১৭ বলে ২ চার ও ২ ছক্কায় ২৭ রানে অপরাজিত ছিলেন। ইফতিখার ক্রিজে ছিলেন ১১ রানে।
এর আগে টস জিতেও অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিল পাকিস্তান। ট্রাভিস হেডের ৮৯ রানের পর সেঞ্চুরি করেছেন বেন ম্যাকডারমট। ১০টি চার ও ৪ ছক্কায় ১০৮ বলে ১০৪ রান করেছেন তিনি। পরে মার্নাস লাবুশেনের ৪৯ বলে ৫৯, মার্কাস স্টয়নিসের ৩৩ বলে ৪৯ রানের ঝড় ৮ উইকেটে ৩৪৮ রানের বিশাল স্কোর পাইয়ে দেয় অস্ট্রেলিয়াকে। লেজের দিকে শন অ্যাবটও ১৬ বলে ২৮ রানের কার্যকরী ইনিংস খেলেছেন।
পাকিস্তানের বোলারদের মধ্যে ৬৩ রানে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন শাহীন শাহ আফ্রিদি। ৫৬ রানে দুটি নেন মোহাম্মদ ওয়াসিম। একটি করে নেন জাহিদ মাহমুদ ও খুশদিল শাহ।