একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দিকে নজর আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীদের।
২০১৪ সালে হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগের দখলে থাকলেও পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপি থেকে।
এবার ২০১৯ সালের নির্বাচনে চেয়ারম্যন ও দুই ভাইস-চেয়ারম্যান পদে ছাড় দিতে নারাজ আওয়ামীলীগ। যে কারনে এরইমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ দলীয় নেতাকর্মীদের মুখে উঠে আসছে চেয়ারম্যান ও ভাইস-চেয়ারম্যান পদে প্রায় ডজন খানেক আওয়ামীলীগ নেতাদের নাম।
তবে নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়া নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় রয়েছেন বিএনপি প্রার্থীরা।
খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, একাদশ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নৌকার মনোনয়ন বঞ্চিত অনেক প্রার্থী এবার উপজেলা নির্বাচনকে টার্গেট করে রেখেছেন। ভিতরে ভিতরে সমান তালে রয়েছেন বিএনপির একাধিক প্রার্থীও।
তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের মনোবল চাঙ্গা রয়েছেন দল ক্ষমতায় ও উপজেলার একটি ইউনিয়ন বাদে ১১টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবং পৌরসভায় দলীয় মেয়র রয়েছেন বলে। বিএনপির দলীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় এখন পর্যন্ত বসে থাকলেও তৃণমূল পর্যায়ে কিছু প্রার্থীর প্রস্তুতি অনেকাংশে এগিয়ে রয়েছে। সে থেকে বলা যায় এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আওয়ামীলীগ ও বিএনপির মধ্যে হাড্ডাহাড্ডির লড়াই হওয়ার সম্ভবনা দেখছেন উভয় দলের নেতাকর্মীরা।
২০১৯ সালের হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থীরা হচ্ছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার মনোয়ন বঞ্চিত বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব অধ্যাপক আব্দুর রশিদ মজুমদার, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার মনোনয়ন বঞ্চিত উপজেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান সভাপতি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ্ব হেলাল উদ্দিন মিয়াজী,
গত ২০১৪ সালের উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে মনোনয়ন বঞ্চিত নেতা বর্তমান উপজেলা আওয়ামীলীগের দুই বারের সাধারন সম্পাদক গাজী মো. মাঈনুদ্দিন, জেলা আওয়ামীলীগের কোষাদক্ষ্য সাবেক হাজীগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রোটা. আহসান হাবিব অরুন, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং বর্তমান সাংসদের ¯েœহবাজন হিসাবে পরিচিত হাজী মো. জসিমউদ্দিন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব সেলিম মিয়া।
বিএনপি থেকে চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় নাম শুনা যাচ্ছে গত নির্বাচনে সতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক অধ্যক্ষ ড. মো. আলমগীর কবির পাটওয়ারী, সাবেক উপজেলা বিএনপির টানা ৩০ বছরের সভাপতি ও দুই বারের পৌর মেয়র আব্দুল মান্নান খান, সাবেক ছাত্রনেতা ও গতবারের স্বতন্ত্র প্রার্থী হেলাল উদ্দিন মজুমদারসহ আরো কয়েকজন নেতার নাম।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা হচ্ছেন, সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হারুন অর-রশিদ মুন্সী, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই বারের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম ফারুক মুরাদ, শহর আওয়ামীলীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক ও হাজীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মুন্সী মোহাম্মদ মনির, উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মাসুদ ইকবাল, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের আহবায়ক ও গতবারের প্রতিদ্বন্ধিকারী সত্য ব্রত ভদ্র মিঠুন, সাবেক ছাত্রনেতা ও বর্তমান উপজেলা যুবলীগের অন্যতম সদস্য এমআইকে মজুমদার তুষারসহ আরো অনেকের নাম শুনা যাচ্ছে।
এদিকে বিএনপি ও জামায়াত থেকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে নাম শুনা যাচ্ছে বর্তমান উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জামায়াত নেতা মোজাম্মেল হক পরান, গতবারের প্রতিদ্বন্ধিকারী সাবেক ছাত্রনেতা নাজমূল আলম চৌধুরী, পৌর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব নাদিম উল্ল্যাহ নাদিমসহ আরো ছাত্রদল নেতার নাম।
চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব হেলাল উদ্দিন মিয়াজী বলেন, আমি আশাবাদি নৌকার মনোনয়ন পেলে সকল নেতাকর্মীদের এক করে জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নমূলক কাজে নিজেকে শামিল করতে পারবো।
জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য হাজী জসিমউদ্দিন বলেন, আমি শতভাগ আশাবাদি এবারের উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপি আমাকে নৌকার মনোনয়ন পেতে সার্বিক সহযোগিতা করবেন।
উপজেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক গতবারের সতন্ত্র প্রার্থী অধ্যক্ষ ড. মো. আলমগীর কবির পাটওয়ারী বলেন, অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হলে আমি দলের মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহন করার ইচ্ছা প্রকাশ করছি।
সাবেক মেয়র ও বিএনপির সভাপতি আব্দুল মান্নান খান বলেন, নির্বাচন করার ইচ্ছা আছে যদি আওয়ামীলীগ বিএনপিকে চায়।
ভাইস-চেয়ারম্যন প্রার্থী গোলাম ফারুক মুরাদ বলেন, আমার শতভাগ বিশ্বাস আছে এবারের নির্বাচনে আমাকে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন দিবেন এবং জয়যুক্ত হয়ে মানুষের সেবায় নিজেকে শামিল করতে চাই।
উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মাসুদ ইকবাল বলেন, অনেকে আমাকে বলেন নির্বাচন করতে তবে আমি মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপি’র সাড়া পেলে করবো।
প্রতিবেদক- জহিরুল ইসলাম জয়
৯ জানুয়ারি, ২০১৯