নিজস্ব অর্থায়নেই চলবে ‘স্কুল ফিডিং’

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বাচ্চাদের খাদ্য ও পুষ্টি সেবা নিশ্চিত করতে এবং স্কুলে বাচ্চাদের অংশগ্রহণ বাড়াতে স্কুল ফ্রিডিং কার্যক্রম চালুর উদ্যোগ নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। আগে রান্না করা খাবার দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলেও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মতে এবার শুকনা পুষ্টিকর খাবার দেওয়ার উদ্যোগ নেয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

এ লক্ষ্যে চার হাজার ৫৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে সরকারি স্কুল ফ্রিডিং কার্যক্রম-১ হাতে নেওয়া হয়েছে। এ কার্যক্রমে আগে ৬৪ কোটি টাকা বৈদেশিক অর্থায়ন থাকলেও তা এ প্রকল্প থেকে বাদ দেয়া হচ্ছে।

নিজস্ব অর্থায়নেই হবে স্কুল ফিডিং কার্যক্রমপরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক প্রস্তাবে প্রকল্পের ব্যয় চার হাজার ৭৫৯ কোটি টাকা ধরা হলে, পরিকল্পনা কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রকল্পের ব্যয় ২২৮ কোটি টাকা কমানো হয়েছে। প্রকল্প থেকে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ওয়ার্ল্ভ্র ফুড প্রগ্রামের (ডব্লিউএফপি) ৬৪ কোটি ২০ লাখ টাকার অনুদান বাদ দেওয়া হয়। সেটি অন্য আরেকটি প্রকল্পে ব্যয় করা হবে। প্রকল্পের আওতায় শিগগিরই একটি পিইসি সভা হবে এবং সব ঠিকঠাক থাকলে একনেকের জন্য সুপারিশ করা হবে।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের জুনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পূর্ণ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ১৭ হাজার ২৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রাইমারি স্কুল মিল প্রকল্পটি একনেক সভায় উপস্থাপন করা হয়।

সভায় একনেক চেয়ারপারসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পটি অনুমোদন না করে ‘এ ধরনের প্রকল্প গ্রহণের পরিবর্তে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বাস্তবসম্মত ও কার্যকর কোনো বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশনা দেন। তারই আলোকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় নতুন ডিজাইনে একটি প্রকল্পটি পাঠিয়েছে। প্রকল্পটিতে চার হাজার ৫৩১ কোটি টাকা সরকারের তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে।

প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে তিন বছর মেয়াদে বাস্তবায়ন করবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

প্রকল্পটির বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এবার নতুন ডিজাইনে প্রাথমিক স্কুলের বাচ্চাদের শুকনা পুষ্টিকর খাবার দেওয়া হবে। বাচ্চাদের এ বয়সে বেশি পুষ্টিকর খাবার দরকার,যা এ খাবার থেকে অনেকটাই নিশ্চিত হবে। দেশে ১৫০ উপজেলার প্রায় ৩৫ লাখ বাচ্চাকে এ খাবার দেয়া হবে।’

তিনি বলেন,‘বাচ্চাদের সপ্তাহে পাঁচ দিন পাঁচ ধরনের খাবার দেয়া হবে। ‘

একদিন দুধ আর রুটি দেয়া হবে। একদিন ডিম আর রুটি দেয়া হবে। একদিন বিস্কুট দেয়া হবে। আবার একদিন মৌসুমি ফল দেয়া হবে। আমাদের মূল টার্গেট বাচ্চাদের নিউট্রিশিয়নের চাহিদা নিশ্চিত করা। একটি বাচ্চার জন্য দৈনিক ৪৫ টাকার মতো বাজেট থাকবে। বাচ্চাদের একটি শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে খাবার দেয়া হবে।’

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটি বিবিএসের দারিদ্র্য ম্যাপ দেখে সেই অনুযায়ী ১৫০টি উপজেলার প্রায় ১৮ থেকে ১৯ হাজার স্কুল সিলেক্ট করা হয়েছে। উপজেলার সব স্কুলের বাচ্চারাই খাবার পাবে। খাবার এমনভাবে পরিবেশন করা হবে যাতে তাদের মধ্যে নেতৃত্ব তৈরি হয়। তিনটি ধাপে পর্যায়ক্রমে পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার বিতরণের জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

চাঁদপুর টাইমস রোপোর্ট
শুক্রবার,৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
এজি

Share