চাঁদপুরের হাইমচরের মেঘনা নদীতে ডুবে যাওয়া ট্রলারটি ৫৩ ঘণ্টা পর অবস্থান শনাক্ত করতে পারলেও নিখোঁজ ৯ যাত্রী ও ট্রলারটি উদ্ধার ছাড়াই অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করেছে প্রশাসন।
তাই নিখোঁজদের সন্ধানে স্বজনরা স্ব উদ্যোগে নদীতে অনুসন্ধান চালাচ্ছে। তাদের তীব্র দাবি ট্রলারটি যেন উদ্ধার করা হয়।
মেঘনা নদীতে ডুবে যাওয়া ট্রলার উদ্ধার অভিযান ৬০ঘন্টা পর সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে চাঁদপুর বিআইডব্লিউটি-এর সহকারী উপ-পরিচালক এস এ মাহফুজ উল আলম সজল।
উদ্ধারকাজে দায়িত্বরত নৌবাহিনীর সাব-লেফটেন্যান্ট মো. আক্কাস জানান, ঘটনাস্থলের ১০০ মিটার দূরে এবং ২০ মিটার গভীরতায় ট্রলারটি সন্ধান পাওয়া যায়। পানি কমলে ট্রলারটি উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে।
অপরদিকে হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম সরোয়ার কামাল দাবি করে বলেন, উদ্ধার অভিযান চলছে।
শুক্রবার দুপুরে ট্রলারযোগে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় দুটি প্লাস্টিকের কন্টেইনার দিয়ে ট্রলারটির অবস্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। অবশ্য বাস্তবে উদ্ধার তৎপরতা দেখা যায়নি।
প্রকৃত পক্ষে ট্রলারটি উদ্ধারে স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রয়েছে দ্বিধাদ্বন্দ্বে। অন্তত নিখোঁজদের মৃহদেহ উদ্ধারে প্রচেষ্টা অব্যাহত ও সার্বিক সহযোগিতা করবেন বলে স্বজনদের আশস্ত করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। নিখোঁজদের কোনো মৃতদেহ ভেসে উঠে কীনা সে ব্যাপারে প্রতিটি ফাঁড়ি ইনচার্জকে বলে রাখা হয়েছে।
এদিকে নিখোঁজদের স্বজনরা স্ব-উদ্যোগে তারা নদীতে ট্রলার নিয়ে লাশ খুঁজে বেড়াচ্ছেন। তারা সরকারের কাছে দাবি জানান, অন্তত ট্রলারটি যদি উদ্ধার করা হতো আমরা আমাদের স্বজনদের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যেতো। এছাড়া লাশ বা মৃতদেহ না পাওয়া পর্যন্ত তাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে জানান স্বজনরা।
বিআইডব্লিউটিএ এবং চাঁদপুর নৌ পুলিশ কর্তৃপক্ষ জানায়, ট্রলারটি উদ্ধারে প্রায় ৬০ ঘন্টা যাবৎ চাঁদপুর নৌ পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, স্থানীয় পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ এবং ১৩ সদস্য বিশিষ্ট নৌ বাহিনীর একটি বিশেষ দল উদ্ধার তৎপরতা চালায়।
৫৩ ঘন্টায় ট্রলারের অবস্থান শনাক্ত করা গেলেও নিখোঁজদের ব্যাপারে কোনো তথ্য দিতে পারেনি উদ্ধারকারী দল। ট্রলার মালিক ও প্রশাসনের দ্বিধাদ্বন্দ্বের অবসান করে ডুবে যাওয়া ট্রলারটি যাতে উদ্ধার করা হয় এমনটাই দাবি নিখোঁজদের স্বজন ও স্থানীয়দের।
এখন পর্যন্ত নিখোঁজ ৯ জনের সন্ধান বা লাশ পাওয়া যায় নি। তারা হলেন হাইমচর উপজেলা আলগী দক্ষিণ ইউনিয়নের চরভাঙা গ্রামের সালাউদ্দিন নেপালের স্ত্রী আলেয়া বেগম (৩০), তার ছেলে সিয়াম (৮), মেয়ে স্বর্ণা (৪), নার্গিস বেগম (২৮), শাহজাদি আক্তার (৬), ১৮ মাসের ফাহিম হোসেন, মানিক (৪), রতন (২) ও আহমদউল্লাহ সিকদার (৪৪)।
তবে আজ সকাল ৯টায় স্থানীয়দের সহযোগিতায় ট্রলারটি উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। ধারণা করা হচ্ছে ট্রলারটি উদ্ধার করা গেলে নিখোঁজদের সন্ধান পাওয়া যাবে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮ টায় এমভি রবিন নামে একটি যাত্রীবাহী ট্রলার প্রায় ৭০ জন যাত্রী নিয়ে হাইমচরের তেলিরমোড় থেকে পশ্চিমে ইশানবালা চরের দিকে যাওয়ার পথে মেঘনায় তেলবাহী জাহাজের ধাক্কায় ট্রলারটি তলিয়ে যায়।
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট : আপডেট ২:৩০ পিএম, ৩০ জানুয়ারি ২০১৬,শনিবার
ডিএইচ