নাড়ির টানে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের নদীপথে ভিড়

দেশের তৃতীয় প্রধান নদী বন্দর চাঁদপুর। রাজধানী ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের অন্তত ১৫টি রুটে চাঁদপুরের সাথে নৌপথে যোগাযোগ রয়েছে। তবে অন্য সময়ের চেয়ে ঈদ উৎসব এলেই পাল্টে যায় চাঁদপুর লঞ্চ টার্মিনালের চিত্র।

ঈদের ৪-৫ দিন আগ থেকে এই টার্মিনাল দিয়ে প্রতিদিন লক্ষাধিক ঘরমুখো মানুষের ঢল নামে। এমন পরিস্থিতিতে বাড়তি যাত্রীর চাপ সামলাতে লঞ্চ চালক ও মালিক পক্ষের রয়েছে নানা দাবি।

নদীপথে বিড়ম্বনা কিছুটা কম ও আরামদায়ক ভ্রমণ হিসেবে নাড়ির টানে ফিরে আাসা জেলার বাইরে বসবাসকারী চাঁদপুরের মানুষগুলো লঞ্চযাত্রাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখেন। তাই প্রতিবছরের ন্যায় এবারো ঘরমুখো চাঁদপুরের বাসিন্দারা নদীপথকেই বেছে নিয়েছেন

আজ (শুক্রববার) থেকে দীর্ঘ ছুটিতে যাচ্ছে সরকারি চাকরিজীবিরা। তাই সরকারি চাকরিজীবীদের বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) কর্মদিবসের শেষে ঈদের ছুটিতে নাড়ীর টানে ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন।

সকাল থেকে এ যাত্রা শুরু হলেও পরিবহন-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেছেন, সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হয়ে গভীর রাত পর্যন্ত যাত্রীদের চাপ থাকবে সবচেয়ে বেশি।

বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুরু করে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে যাত্রীদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

প্রতিবছরের মতো এবারও ঈদে ঘরমুখো মানুষকে বরণ করে নিতে সব প্রস্তুতি নিয়েছে চাঁদপুর লঞ্চ টার্মিনাল। এ জন্য যাত্রীদের সুবিধায় নানা ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ এবং স্থানীয় প্রশাসন। পন্টুনের সংখ্যা বাড়ানোসহ গোটা টার্মিনাল এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় নেয়া হয়েছে। নিয়োগ দেয়া হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীসহ স্বেচ্ছাসেবী সদস্যদের।

চাঁদপুর লঞ্চ টার্মিনালে সিসি ক্যামেরা

ঈদে বাড়তি যাত্রীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে টার্মিনাল এলাকায় নৌ পুলিশকে সহায়তা দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্য সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। আর সবকিছু নজরদারিতে রাখতে গোটা টার্মিনাল জুড়ে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা।

চাঁদপুর জেলা পুলিশ লাইনের উপ-পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে নৌ-পুলিশকে সহযোগিতা করার জন্য জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করতে আমরা এখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছি।’

অন্যদিকে, অতিরিক্ত যাত্রীর চাপ সামাল দিতে নানা উদ্যোগ নেয়ার কথা জানালেন চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএ-এর উপ-পরিচালক ও বন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান।

নৌ-পথে চাঁদপুর-ঢাকা রুটে নিয়মিত ৩২টি যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল করে। তবে এবারের ঈদে বাড়তি যাত্রী সামাল দিতে আরো ৬টি বিশেষ লঞ্চ যোগ হয়েছে।

লঞ্চ যাত্রীদের সাথে সিএনজি অটোরিক্সা ও অটোবাইক চালকদের টানা-হেঁচড়া

টার্মিনাল এলাকায় যাত্রীদের সাথে সিএনজি অটোরিক্সা ও অটোবাইক চালকদের টানা-হেঁচড়ার দৃশ্য আগের মতোই রয়ে গেছে।

এদিকে লঞ্চ টার্মিনাল ছাড়াও চাঁদপুর বাসস্ট্যান্ডেও ঘরে ফেরা মানুষের চাপ বাড়ছে। অনেকে পরিবার নিয়ে গ্রামের বাড়ি ফেরার জন্য বাস টার্মিনালে ভিড় করছেন এবং লঞ্চ যোগে নিজ গন্তব্যে ফিরছেন।

পরিবহন দায়িত্বরত একজন জানালেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই চাপ ছিলো। তবে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত মানুষের প্রচ- চাপ থাকবে। মূলত আজ শুক্রবার সবচেয়ে বেশি মানুষ ঢাকা ছেড়ে চাঁদপুর আসবেন।

এসব মানুষ ঘর থেকে বের হয়েই পড়েন নানা ঝক্কি-ঝামেলায়। পথে পথে তারা শিকার হন নানা দুর্ভোগে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হন যানজটে আটকে থেকে।

Share