নারয়ণগঞ্জ সিটি করপোরশন (নাসিক) নির্বাচন সামনে রেখে সেখানে অস্ত্রের ঝনঝনানি চলছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, নারায়ণগঞ্জে এখন চলছে বৈধ ও অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি। সুতরাং কমিশনকে অবিলম্বে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং বৈধ অস্ত্র জমা নিয়ে নির্বাচনের পরিবেশকে শান্তিপূর্ণ করতে বিএনপি’র পক্ষ থেকে আহ্বান জানাচ্ছি।
ভোট গ্রহণের আগেই যেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত না হয় সেদিকে নির্বাচন কমিশনকে লক্ষ্য রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন যাতে প্রতিযোগিতামূলক, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ, অবাধ হয় এবং ভোটাররা যেন কেন্দ্রে গিয়ে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে বিদায়ের প্রাক্কালে বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
নারায়ণগঞ্জের দলবাজ প্রশাসনকে সরিয়ে অবিলম্বে নিরপেক্ষ প্রশাসন বসানোর দাবি জানিয়ে রিজভী বলেন, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার শুরু থেকেই গডফাদারদের দাপট ক্রমেই বিস্তার লাভ করছে। সুতরাং আমি আবারও বিএনপির পক্ষথেকে নাসিক নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও ভয়ভীতিমুক্ত করতে সেনাবাহিনী মোতায়েনের জোর দাবি জানাচ্ছি।
সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন জায়গায় মুক্তিযোদ্ধাদের উপর হামলা, নিপীড়ন, নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে গালভরা বুলি আওড়ায়, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি বলে রাজনৈতিক ব্যবসা করে, তারা যেমূলত স্বাধীনতা বিরোধী ও অগণতান্ত্রিক শক্তি তার প্রমাণ মুক্তিযোদ্ধাদের উপর নিযার্তানের ঘটনাসমূহ।
রিজভী বলেন, সম্প্রতি দেশজুড়ে আলোচনার ঝড় তুলেছে ঝিনাইদহের শৈলকূপার একটি বিভৎস ঘটনা। কতটা নিষ্ঠুর ও হিংস্র হলে এমনটা করা সম্ভব তা দেখিয়ে দিয়েছে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা-কর্মীরা। একজন প্রৌঢ় মুক্তিযোদ্ধাকে নির্মম প্রহারের জলজ্যান্ত দৃশ্য ভিডিওতে দেখা গেছে। একটি দোকানের সামনে চেয়ারে বসে থাকা প্রৌঢ় মুক্তিযোদ্ধা মোক্তার আহমেদ মিজানের ওপর অতর্কিতে লাঠিসোঠা ও ধারালো অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আক্রমণ চালায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের ক্যাডাররা।
রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধকে নিজেদের রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্য আওয়ামী লীগের নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, ২০১৫ সালের ২৬ মার্চ বরগুনার তালতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এক মুক্তিযোদ্ধাকে নির্মমভাবে মারধর করেন। চলতি বছরের মার্চ মাসে খুলনা জেলার কয়রা উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমানকে পিটিয়ে আহত করে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী বাহারুল ইসলাম।
এ ছাড়া ২০১৪ সালের জুন মাসে সোনাগাজী উপজেলা সদরে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল আফসার নামে এক মুক্তিযোদ্ধাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। ২০১৬ সালের এপ্রিলে আখাউড়ায় মাদকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় যুবলীগনেতা জনি শিকদার নূরুল ইসলাম শিকদার (৭০) নামে এক মুক্তিযোদ্ধাকে পিটিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করেন বলে অভিযোগ রিজভীর।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হারুনুর রশিদ, সহ-আইন সম্পাদক সানাউল্লাহ মিয়া, সহ-দফতর সম্পাদক মনির হোসেন প্রমুখ। (বাংলানিউজ)
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ২:৩০ পিএম, ২৫ নভেম্বর ২০১৬, শুক্রবার
ডিএইচ