হাজীগঞ্জে ৮ মাসের নার্সারিতে অর্ধকোটি টাকার স্বপ্ন দেখছেন ইসহাক

হাজীগঞ্জে আদর্শ বনলতা নার্সারি দিয়ে মাত্র ৮ মাসে প্রায় অর্ধকোটি টাকার স্বপ্ন দেখছেন ইসহাক পাটওয়ারী।

গত ৬ সেপ্টেম্বর সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন ধেররা ব্রীজ সংলগ্ন এলাকায় প্রায় দেড় একর এরিয়া নিয়ে গড়ে উঠেছে আদর্শ বনলতা নার্সারি। ভিতরে প্রবেশ করলে দেখা যায় ৫ জন শ্রমিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা পরিচর্যা কাজে নিয়োজিত রয়েছে। পাশে এক কোনে কাজ করছেন নার্সারির মালিক ইসহাক পাটওয়ারী। তার সাথে কথা বলে জানা যায়, নতুন পরিসরে গড়ে উঠা বনলতা নার্সারির লক্ষ মাত্রা।

চলতি বছরের শুরুতে প্রায় দেড় একর যায়গা বছরে এক লক্ষ টাকা ভাড়া নিয়ে নার্সারির কার্যক্রম শুরু করেন ইসহাক পাটওয়ারী। এ পর্যন্ত প্রায় ২০ লক্ষ টাকা খরচ করে দুই শতাধিকের উপরে দেশী বিদেশী প্রজাতির গাছের চারা উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছেন। মাত্র ৮ মাসের এ বেড়ে উঠা নার্সারিতে তিনি গাছের চারা বিক্রির লক্ষ্যদেখছেন প্রায় অর্ধকোটি টাকা।

বর্তমানে এ আদর্শ বনলতা নার্সারিতে প্রায় দুইশ জাতের দেশী বিদেশী গাছের চারা রয়েছে। তার মধ্যে ৩০ জাতের দেশি-বিদেশি আমের চারা রয়েছে। এ ছাড়া চায়না-৩ লিচু, বেদানা লিচু, মুম্বাই লিচু, জাম, ভিয়েতনামি কাঁঠাল, পেয়ারা, রাম্বুটান, সাতকরা, থাই পেয়ারা, লটকন, আমলকি, কদবেল, পেঁপে, সফেদা, ভিয়েতনামি নারিকেল, জামরুল, থাই মিষ্টি তেঁতুল, বেদেনা, ডালিম, আপেল, সাদা আপেল, কমলা, নাশপাতি, বেল, চালতা, আমড়া, ড্রাগন ফল, আক্সগুর, মিষ্টি জলপাই, করমচা, বুবি, চায়না কমলা, কাশ্মীরি কুল, বাউকুলসহ প্রায় শতাধিক দেশি–বিদেশি ফলের চারা রয়েছে।

ইসহাক পাটওয়ারি জানান, বর্তমানে তার এ নার্সারি রয়েছে ১৫ হাজার নারিকেল চারা, ২৫ হাজার সুপারি চারা এবং বাকি জায়গায় বিভিন্ন বনজ, ফলদ, ঔষধি ও ফুলের চারা করেছেন।

তাছাড়া বিভিন্ন জাতের বনজ চারা ছাড়াও দেশি-বিদেশি জাতের আম, জাম, কাঠাল, পেয়ারা, বেদানা, কমলা, আমড়া, শরুফা, লেবু, জাম্বুরা, সফেদা, মাল্টা, বড়ই, কামরাঙ্গা, মিষ্টি তেতুল, চালতা, লিচু, বেল, লটকনসহ প্রায় দেড় শ জাতের চারা রয়েছে। 

আমের জাতের মধ্যে হাঁড়িভাঙা, ল্যাঙড়া, আম্রুপালি, হিম সাগর, গুটি, ফজলি, গৌরমতি, কাঠিমণ, বারি-৪, বেনানা ম্যাঙ্গো সহ প্রায় ২৫টি জাতের চারা রয়েছে।

ফুলের মধ্যে থাই গোলাপ, রজনীগন্ধা, চায়না টগর, হাছনাহেনা, বকুল, কৃষ্ণচুড়া, বেলি, গন্ধরাজ, জবা, কিসমাস ট্রি, পাতাবাহার, ঝাউ গাছসহ প্রায় শতাধিক প্রজাতির চারা রয়েছে। এবং এখানে আরো রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ঔষধি গাছও।

ইসহাক পাটওয়ারী বলেন, মূলত চাঁদপুর পুলিশ ফাঁড়ি সরকারি নার্সারির পরিচর্যা দেখে খবর নিয়ে বরিশাল এলাকায় যাই। সেখানে কয়েক বছর নার্সারিতে কাজ করে মোটামুটি অভিজ্ঞতা নিয়ে এখানে আদর্শ বনলতা নার্সারি গড়ে তুলেছি। বর্তমানে করোনা মহামারির কারনে দূর দূরান্তের পাইকারদের খবর দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে সব ঠিক থাকলে আগামি বছরের মধ্যে ৪৫ থেকে ৫০ লক্ষ টাকার চারা বিক্রি লক্ষমাত্রা রয়েছে।

এ নার্সারিতে কর্মরত শ্রমিক মোজাম্মেল বলেন, এখানে ফলফলাদি গাছ, ফুলের চারা, ওষুধী গাছ, বনজী গাছ, মেহেগুনী, শাল, আকাশি, গর্জনসহ সকল প্রকার গাছ মিলে প্রায় দুইশত প্রজাতির দেশী বিদেশী গাছের চারা রয়েছে। আমরা প্রতিদিন ৫ জন লোক পরিচর্যা কাজে নিয়োজিত আছি।

হাজীগঞ্জ উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম বলেন, নার্সারির মালিক আমার সাথে যোগাযোগ করলে তাকে পরামর্শ দেই দেশী প্রজাতির পাশাপাশি বিভিন্ন কাঠের চারা বাড়ানোর জন্য। তবে নিয়ম তান্ত্রিক ভাবে পরিচর্যা করায় এ নার্সারি দেশে বৃক্ষের চাহিদা পূরনে বিশেষ অবদান রাখবে।

প্রতিবেদকঃ জহিরুল ইসলাম জয়, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

Share