Home / সারাদেশ / ৮০ নারীকে পাচারকারী চক্রের ৩ সদস্য গ্রেফতার
পাচারকারী

৮০ নারীকে পাচারকারী চক্রের ৩ সদস্য গ্রেফতার

কমবয়সী কিশোরী-তরুণীদের টার্গেট করে বিভিন্ন দেশে পাচার করছিল আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী একটি চক্র। আর এই চক্রের নেতৃত্বে দুবাইয়ে অবস্থানরত মহিউদ্দিন (৩৭) ও শিল্পী (৩৫)। তারা চট্টগ্রামের বাসিন্দা।

র‌্যাব বলছে, মানব পাচারকারী চক্রটি এ পর্যন্ত প্রায় ৮০ জন নারীকে ভালো বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে দুবাই, সৌদি আরব, ওমানসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করেছে। সেখানে দালালদের কাছে এই নারীদের বিক্রি করে দেওয়া হয়। পরে জোরপূর্বক বিভিন্ন ডিজে পার্টিসহ অনৈতিক কাজে সম্পৃক্ত করা হয়।

সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উত্তরা র‌্যাব-১ এর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন।

এর আগে, গত রবিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বিমানবন্দর থানা এলাকা থেকে আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্রের তিন সক্রিয় সদস্য গ্রেফতার করে র‌্যাব-১। পাচারকালে তাদের হেফাজত থেকে তিনজন ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত তিন জন হলো আজিজুল হক (৫৬), মোছলেম উদ্দিন ওরফে রফিক (৫০) ও কাউছার (৪৫)। অভিযানে তাদের কাছ থেকে তিনটি পাসপোর্ট, তিনটি মোবাইল ফোন ও নগদ ২৭ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।

লেফট্যানেন্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, মানব পাচারকারী চক্রের টার্গেট ছিল দরিদ্র মানুষ। পাচারকারীরা ভালো বেতনে বিদেশে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে সহজ-সরল মানুষদের ফাঁদে ফেলে নিয়ে যাচ্ছে অন্ধকার জগতে। তাদের পাতা জালে জড়িয়ে অবৈধ পথে বিদেশ পাড়ি দিতে গিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছে এসব মানুষেরা। যার অধিকাংশই নারী। পাচারের পর এসব নারীদের বিক্রি করে দিতো চক্রটি। জোরপূর্বক সম্পৃক্ত করা হয় ডিজে পার্টিসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে।

মানবপাচার চক্রের মূলহোতা মহিউদ্দিন ও শিল্পী বর্তমানে দুবাইয়ে অবস্থান করছে উল্লেখ করে লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, দুবাইয়ে অবস্থান করে তারা নারী পাচারের পরিকল্পনা করেছে বলে গ্রেফতার আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে। এছাড়া চক্রের পলাতক সদস্য নোয়াখালীর নূর নবী ওরফে রানা (৩৫) ও ঢাকার মনজুর হোসেন (৩৩) মানব পাচারকারী চক্রের দেশীয় মূলহোতা।

তিনি বলেন, গ্রেফতার আজিজুল হক এই চক্রের অন্যতম সমন্বয়ক। আজিজুল হকের মাধ্যমে দুবাইয়ে অবস্থানরত মহিউদ্দিন ভুক্তভোগী নারীদের বিদেশে যাওয়ার খরচের টাকা পাঠাতো। চক্রের পলাতক নারী সদস্য তাহমিনা বেগম (৪৮) ও গ্রেফতার রফিক ও কাউছার কমবয়সী ও সুন্দরী মেয়েদের টার্গেট করে প্রলোভন দেখাতো। এরপর বিভিন্ন কোম্পানি ও গার্মেন্টস কারখানায় চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারক চক্র মেয়েদেরকে বিদেশ পাঠাতে প্রলুব্ধ করত। কোনও তরুণী বিদেশ যেতে রাজী নাহলে বিভিন্নভাবে হুমকিও দিত তারা। এই চক্রে নারীসহ একাধিক সদস্য পাচারকারীদের সঙ্গে কাজ করছে।

গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।