নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ার বাসাটি চলতি বছরের ৫ জুলাই জঙ্গিরা ভাড়া নেয়। ওই বাসায় গ্রেনেড, অস্ত্র ও গুলি মজুত করে তারা। ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার ছানোয়ার হোসেন একথা বলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, জঙ্গিদের কাছে মোট ছয়টি গ্রেনেড ছিল। এর মধ্যে দুটি গ্রেনেড তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ছুড়ে মারে। দুটি গ্রেনেড পুলিশ নিষ্ক্রিয় করেছে। আর দুটি গ্রেনেড পাশের একটি টিনের চালের ওপর পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
ছানোয়ার হোসেন বলেন, সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাড়িটি ঘিরে ফেলে। তামিম চৌধুরীর কাছে গ্রেনেড ছিল। বাকি দুজনের কাছে অস্ত্র ছিল। সেগুলো কল্যাণপুরে জঙ্গিদের কাছ থেকে উদ্ধার করা ও গুলশানে হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্রের মতো। এগুলো সীমান্ত পার হয়ে অবৈধ পথে আসা অস্ত্রের মতো দেখতে।
অতিরিক্ত উপকমিশনার আরও বলেন, সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে পুলিশ বাড়িটি ঘিরে ফেলে। এরপর অভিযান চালানো হবে বলে বাড়িওয়ালাকে জানানো হয়। জঙ্গিদের আত্মসমর্পণ করার জন্য আধ ঘণ্টার মতো সময়ও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা সে সুযোগ নেননি। এরপরই পুলিশ অভিযান চালায়।
পাইকপাড়ার বাড়িটি তিনতলা। জঙ্গিরা তিনতলার ফ্ল্যাটটি ভাড়া নেয়। এই বাড়ির আশপাশে টিনের কয়েকটি বাড়ি রয়েছে। বাড়িটির মালিকের নাম নুরুদ্দীন দেওয়ান। মালিকের চাচাতো ভাই সালাউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর ভাই জাপানে থাকতেন। দেশে ফিরে এই বাড়িটি করেছেন। তিনি বলেন, তিনতলার ভাড়াটিয়াদের তিনি কাউকে চিনতেন না।
পুলিশের সহকারী মহাপরিদর্শক মনিরুজ্জামান বলেছেন, জঙ্গিরা তাদের সঙ্গে থাকা ল্যাপটপ ও কিছু কাগজপত্র পুড়িয়েছে। তিনি বলেন, প্রথমে বাড়িওয়ালাকে দিয়ে জঙ্গিদের আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়। এরপর হ্যান্ডমাইকে একই কথা বলা হয়। কিন্তু তাঁরা না শোনায় অভিযান চালানো হয়।
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক প্রথম আলোকে বলেছেন, নারায়ণগঞ্জ শহরের পাইকপাড়ায় আজ শনিবার চালানো এই অভিযানে গুলশানে জঙ্গি হামলার অন্যতম হোতা তামিম চৌধুরীসহ তিনজন জঙ্গি নিহত হয়েছেন।
সকালে পাইকপাড়ার বড় কবরস্থান এলাকার একটি তিনতলা ভবন ঘিরে অভিযান শুরু করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ইউনিট। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় সোয়াত। সহযোগিতা করে র্যাব-১১ ও নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ।
গত ১ জুলাই রাতে গুলশান-২-এর ৭৯ নম্বর সড়কে হলি আর্টিজান বেকারি রেস্তোরাঁয় হামলা চালায় পাঁচ জঙ্গি। তাঁরা দেশি-বিদেশি ২০ নাগরিককে নৃশংসভাবে হত্যা করে।
ওই রাতে অভিযান চালাতে গিয়ে জঙ্গিদের বোমায় নিহত হন পুলিশের দুজন কর্মকর্তা। পরদিন সকালে সেনা অভিযানের মধ্য দিয়ে জঙ্গিদের ১২ ঘণ্টার জিম্মি সংকটের অবসান হয়। অভিযানে পাঁচ জঙ্গিসহ ছয়জন নিহত হন। (প্রথম আলো)
ভিডিও- ২
নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৮:০০ পিএম, ২৭ আগস্ট ২০১৬, শনিবার
ডিএইচ