Home / স্বাস্থ্য / নাভির যত্ন নিচ্ছেন তো?
নাভির যত্ন নিচ্ছেন তো

নাভির যত্ন নিচ্ছেন তো?

শরীরের নানারকমের সমস্যা দূর করতে আমাদের কতরকমেরই না ওষুধের সাহায্য নিতে হয়। এছাড়াও যারা সুস্থ থাকতে চেষ্টা করেন, তাঁরা যোগ ব্যায়াম, নিয়মিত হাঁটাহাঁটি ইত্যাদি করেই থাকেন।

যদিও এসব ছাড়াও এমন কিছু বিষয়ে আমাদের মনোযোগী এবং সতর্ক হওয়া উচিত, যাতে ছোটখাটো শারীরিক সমস্যাগুলি থেকেও পুরোপুরি নিষ্কৃতি পাওয়া যায়।
অনেকেই আছি, যারা শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষায় শরীরে তেল মালিশ করি। যদিও তেল মালিশ করতে বেমালুম ভুলে যাই নাভিদেশে। যার ফলে নানারকমের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। ঠিক কি কি কারণে নাভির যত্ন নেওয়া উচিত এবং এমনটা করলে কি কি উপকার পাওয়া যায়, তাই নিয়েই আজকে জানাব আপনাদের। নাভিতে নিয়মিত তেল লাগালে নানা উপকার পাওয়া যায়। যেমন…

১. ত্বককে আদ্র রাখে
সরষের তেল প্রাকৃতিক গুণ সমৃদ্ধ হওয়ায়, ত্বকের যত্নে খুবই উপকারি ভূমিকা নেয়। তাই নিয়ম করে পেটে এবং নাভিদেশে তেল লাগালে দারুন উপকার পাওয়া যায়। প্রসঙ্গত, নাভির যত্নে নারকেল তেল এবং অলিভ অয়েলও খুবই কাজে দেয়।

কারণ এই তেলগুলিতে ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, যা শরীরকে চাঙ্গা রাখতে বিশেষ ভূমিকা নেয়।
এক্ষেত্রে কিভাবে ব্যবহার করবেন তেলকে? কয়েক ফোঁটা তেল পেটের ওপর দিয়ে ভাল করে মালিশ করতে হবে। এমনটা করলে ত্বক উজ্জ্বল এবং নরম হবে।

২. ময়লা দূর করে
নাভিতে খুব তাড়াতাড়ি ময়লা জমে। যদিও আমরা সারা শরীরের যত্ন নিলেও নাভির কথা বেমালুম ভুলে যাই। তাই তো নাভিতে নিয়ম করে পরিষ্কার রাখাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। এক্ষেত্রে একটি ছোট তুলোয় জোজোবা, সূর্যমুখী অথবা আঙুর বীজের তেল কয়েক ফোঁটা নিয়ে নাভিতে ব্যবহার করতে পারেন। নিয়মিত এমন অভ্যাস করলে নাভিতে জমে থাকা ময়লা এবং মৃত কোষের স্থির ধুয়ে যায়। প্রসঙ্গত, খুব জোরে নাভিতে তুলো ঘষবেন না। এতে আপনি ব্যাথা পেতে পারেন। তাই আলতো চাপ দিয়ে নাভি পরিষ্কার করাই সবথেকে ভাল।

৩. সংক্রমণ রোধ করে
সঠিকভাবে নাভির যত্ন নিলে সংক্রমণ দূর হয়। সবথেকে ভাল হয় তেল হিসাবে যদি টি ট্রি-তেল ব্যবহার করা যায়। কারণ এই তেলের মধ্যে জীবাণুনাশক এবং ছত্রাকনাশক উপাদান কয়েছে, যা ইনফেকশনের আশঙ্কা কমাতে দারুনভাবে সাহায্য করে। তবে নিত্যান্তই যদি টি ট্রি-তেল হাতের কাছে না পান, তাহলে কয়েক ফোঁটা সরষের তেলও একইরকম ভাবে ব্যবহার করতে পারেন। সরষের তেল ব্যবহার করতে হলে তিন ফোঁটা সরষের তেল, এক চা চামচ নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে। দিনে একবার থেকে দুবার এই তেলের মিশ্রণটি ব্যবহার করা যেতে পারে।

৪. পেটে ব্যথা দূর করে
নিয়মত নাভিতে তেল মালিশ করলে পেটে ব্যথার সমস্যা দূর হয়। এছাড়াও হজমের সমস্যা, ডায়রিয়া, খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণে হওয়া পেটে যন্ত্রণা রোধ দারুনভাবে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, বমি বমি ভাব এবং গ্যাসের সমস্যা রোধ করতেও পেটে তেল মালিশ করা যেতে পারে। প্রসঙ্গত, পেটে তেল মালিশের ক্ষেত্রে পুদিনার তেল অথবা আদার নির্যাসযুক্ত তেল ব্যবহার করা খুবই ভাল। তবে এই ধরণের তেল ব্যবহার করার আগে নারকেল তেল, বাদাম তেল বা অলিভ অয়েলে মিশিয়ে নেওয়া উচিত।

৫. ঋতুস্রাবকালীন যন্ত্রণা রোধ করে
মাসের নির্দিষ্ট দিনে ঋতুস্রাবকালীন যন্ত্রণা নারীদের এক বিভীষিকাময় অধ্যায়। এই সমস্যা থেকে খুব সহজেই মুক্তি পাওয়া সম্ভব। কীভাবে? পুদিনা তেল, সাইপ্রেস অথবা আদার তেল নিয়মত নাভিতে মালিশ করলে ঋতুস্রাবকালীন যন্ত্রণা অনেকটাই কমে।

৬. সন্তানধারণে সাহায্য করে
নাভিতে নিয়মিত তেল লাগালে সন্তানধারণে খুবই উপকার হয়। সন্তানধারণের সঙ্গে নাভির ওতপ্রোত সম্পর্ক রয়েছে। কারণ জন্ম অবধি সন্তান তার মায়ের সঙ্গে নাড়ির দ্বারাই যুক্ত থাকে, যা নাভির সঙ্গে সম্পর্কিত। তবে শুধুমাত্র নারী নয়, পুরুষদেরও সুস্থ থাকতে একইরকম ভাবে নাভিতে তেল ব্যবহার করা উচিত। এক্ষেত্রে নারকেল তেল অথবা অলিভ অয়েলের সঙ্গে দামিয়ানা, ১০টি পেয়েরা পাতা, ১১টি জুনিপার মিশিয়ে ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়।

প্রসঙ্গত, এই তেলটি ব্যবহার করলে পেটের যন্ত্রণা কমে। সেই সঙ্গে স্পার্ম কাউন্ট বৃদ্ধি পায় এবং ঋতুস্রাব কালীন সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

৭. নাভিচক্র বজায় রাখতে সাহায্য করে
হাজার বছরের পুরোনো ভারতীয় আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে নাভির যত্নকে খুবই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আয়ুর্বেদিক মতে নাভি হল সৃষ্টি এবং কর্মের সঙ্গে সম্পর্কিত। এই কারণেই নাভিচক্র বজায় রাখতে তেলের ব্যবহার খুবই প্রয়োজন।
নাভিকে সুস্থ রাখতে চন্দন তেল, গোলাপ তেল ইত্যাদিও ব্যবহার করা যেতে পারে। যদিও এগুলি অন্যান্য তেলের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করাটাই সবথেকে ভাল।

সূত্র: বোল্ডস্কাই

নিউজ ডেস্ক
: : আপডেট, বাংলাদেশ ১১ : ০৫ এএম, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ শনিবার
এইউ

Leave a Reply