নবদম্পতিকে নিয়ে বউভাতের অনুষ্ঠান থেকে ফিরছিলেন তারা

রাজধানীর উত্তরার জসীমউদ্‌দীন সড়কে বিআরটি প্রকল্পের একটি গার্ডার পড়ে প্রাইভেটকারের ৫ যাত্রী নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে দুই শিশু ও একজন নারী। এ সময় আহত হন আরও দুজন।

১৫ আগস্ট সোমবার বিকাল সোয়া ৪টার দিকে জসিম উদ্দীন সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতদের স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, গার্ডার পড়ে হতাহত হওয়া ব্যক্তিরা ঢাকায় একটি বউভাতের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ফিরছিলেন।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্বজনেরা জানান,শনিবার হৃদয় (২৫) ও রিয়া মনির (২১) বিয়ে হয়। তারা সোমবার ছেলের বাড়ি থেকে মেয়ের বাড়ি যাচ্ছিলেন। হৃদয়ের পরিবার দক্ষিণখান থানার কাওলা আফিল মেম্বারের বাড়ির ভাড়াটিয়া। আর কনে রিয়া মনির বাড়ি আশুলিয়ার খেজুরবাগানে আসরাফউদ্দিন চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকায়।

সোমবার স্বজনেরা নবদম্পতিকে নিয়ে কনের বাবার বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে উত্তরার জসিমউদ্দিন মোড় সংলগ্ন সড়কে বিআরটির প্রকল্পের গার্ডার পড়ে তাদের প্রাইভেটকারের ওপর। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন পাঁচজন।

গাড়িটি চালাচ্ছিল হৃদয়ের বাবা রুবেল। হৃদয়, হৃদয়ের বাবা রুবেল, রিয়া ছাড়াও প্রাইভেটকারটিতে কনে রিয়ার একজন আত্মীয় ও ২ শিশু ছিল।

হৃদয়ের চাচাতো ভাই রাকিব (১৯) বলেন, বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে তারা দুর্ঘটনার খবর পান। কিন্তু এতো সময় পরও গাড়ি থেকে মরদেহগুলো বের করতে পারেননি উদ্ধারকারীরা। ভেতরে যদি কেউ বেঁচে থেকেও থাকেন তাহলে এতোক্ষণে মারা গেছেন।

রাকিব ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সরকার কীভাবে এভাবে অব্যবস্থাপনার মধ্যে কাজ করছে? আমরা কার কাছে বিচার দিব! আমাদের অন্তত লাশগুলো বের করে দিক। কিন্তু এখানে তো কোনো উন্নত যন্ত্রপাতি নেই।’

এদিকে দুর্ঘটনার তিন ঘণ্টা পর দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া প্রাইভেটকারের ওপর থেকে সরানো হলো গার্ডার। সোমবার সন্ধ্যা ৭টার পর গার্ডার সরিয়ে লাশগুলো বের করে দুটি অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যাওয়া হয়। মরদেহগুলো শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

প্রাইভেটকারে আরোহী ছিলেন সাত জন। ছিলেন নববিবাহিত হৃদয়ের বাবা রুবেল (৬০), হৃদয়ের শাশুড়ি ফাহিমা (৪০), কনে রিয়া মনির খালা ঝরনা (২৮), ঝরনার দুই সন্তান জান্নাত (৬) ও জাকারিয়া (২)। ঘটনাস্থলেই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। শুধু বেঁচে আছেন হৃদয় ও রিয়া। তাঁদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

বার্তা কক্ষ, ১৫ আগস্ট ২০২২

Share