শরীফুল ইসলাম :
নদী ভাঙনের কবলে পড়ে চাঁদপুর সদর উপজেলার তরপুরচন্ডী আনন্দবাজার এলাকার মানুষ এখন নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। মেঘনায় বিলীন হতে বসেছে ওই এলাকার মানুষের আশা আকাংখা। এ পর্যন্ত অনেক পরিবারের ঘর নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
চাঁদপুর জেলার তরপুরচন্ডী আনন্দবাজার ৮ ও ৯ ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। প্রায় এখানে ছয় শতাধিক পরিবার বসবাস করে। এসব পরিবারের মধ্যে শতকরা ৯৫ ভাগ জেলে পরিবার। তাদের একমাত্র উপার্জনের পথ হচ্ছে নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করা। এসব মানুষ বর্ষা এলেই ভয়ে ভয়ে দিন কাটতে থাকে কখন তাদের বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।
তরপুরচন্ডী আনন্দবাজার এলাকায় রয়েছে কমিউনিটি ক্লিনিক, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা যেখানে এলাকার শিশুরা পড়ালেখা করে থাকে। কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠানও এখন নদী ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে।
এ ব্যাপারে এলাকাবাসী জানায়, প্রতি বছর এসময়টাতে আমাদের ঘরবাড়ি নদী ভাঙনো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এত বছরের মধ্যে সরকারি কোনো পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হয়নি। প্রতিবছর আশায় আশায় বুক বেঁধে রাখি কখন এই নদী ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পাবো। এলাকার মানুষ কিছু চায় না, শুধু কোনোরকমভাবে গাইড ওয়াল তৈরি করে দিলে হয়তোবা আমরা এ থেকে রক্ষা পাবো।
তারা আরো জানায়, এছাড়া ২০০৭ সালে চাঁদপুরের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি স্কুল তরপুরচন্ডী আনন্দবাজার স্কুল মাঠে আমাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন নির্বাচিত হলে এলাকার মানুষের জন্য নদী ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করতে এর স্থায়ী ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো ধরনের সহযোগিতা পায়নি। অন্যদিকে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে আমরা উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডে স্মারকলিপি প্রদান করলেও কেউই একটু এসে দেখে যায়নি।
এ ব্যাপারে তরপুরচন্ডী ইউপি চেয়ারম্যান সর্দার রফিকুল ইসলাম বলেন, “তরপুরচন্ডী আনন্দবাজার এলাকার মানুষ প্রতিবছরই নদী ভাঙনের কবলে পড়ে। ইউনিয়ন পরিষদ বা সরকারি কোনো অর্থ এ পর্যন্ত আসেনি। আমি চেয়ারম্যান হিসেব আমার পক্ষ থেকে যতটুকু সহযোগিতা করা প্রয়োজন তা করছি। যাদের ঘর নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, প্রত্যেককেই ব্যক্তিগতভাবে সহযোগিতা করছি। এলাকার মানুষ যাতে নদী ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পায়, তার জন্য আমি চেষ্টা চালিয়ে যাবো।”