পেটের দায়ে নদীতে নেমে গুণছে জেল-জরিমানা

করোনা মহামারি ও বাজারের উর্ধ্বগতির কারণে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের পাশাপাশি চাঁদপুরের জেলেদেরও চলছে দুর্দিন। এমতাবস্থায় শুরু হয়েছে ইলিশ প্রজনন মৌসুম। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে জেলেদের মাছ ধরা। এরপরও পেটের দায়ে কতিপয় জেলে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মোবাইল কোর্টের খড়ক মাথায় নিয়েই নদীতে নামছে। আর তাতেই ধরা খেয়ে গুনতে হচ্ছে জেল-জরিমানা।

আলাপকালে শহরের পুরান বাজার এলাকার জেলে রাসেল হাওলাদার ও সদর উপজেলার মনোহরখাদি গ্রামের মো. ইয়াসিন প্রধান বলেন, ‘এবছর আমাগো নদীতে ইলিশ নাই বললেই চলে। করোনা আসার পর থেকে অনেক কষ্ট কইরা খাইয়া না খাইয়া দিন কাটাইছি। এখন আবার মাছ ধরা বন্ধ কইরা দিল। চিন্তা করতাছি কেমনে চালামু কিস্তি আর সংসার। তয় সরকার ২০ কেজি করে চাইল দিব কইছিলো। কিন্তু আমরা এহনও পাই না। চাইল না দিয়া কাম কেন বন্ধ করলো সরকার। কি করমু আর পোলাপাইনের খিদা মিটাইতে গিয়া নদীতে নামছিলাম। কিন্তু হাওলাত কইরা জরিমানার টাকা দিয়া জীবন বাঁচাইছি।’

যদিও সরকারি প্রণোদনার ২০ কেজি করে চাল দেয়া শুরু হয়েছে বলে জানালেন চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান।

তিনি আরও বলেন, ‘মৌসুম শুরুর প্রথমদিন থেকে দিতে পারলে ভাল হতো।এরপরও এবার আমরা অন্যান্য বছরের তুলনায় আগেভাগেই শুরু করেছি। আশা করছি আগামি কয়েকদিনের মধ্যেই ওই প্রণোদনা বিতরণ শেষ করতে পারবো। তবে সময়মত জেলেদের চাল না পাওয়ার অভিযোগটি অযোক্তিক বলে তিনি মনে করেন।’

তবে চাঁদপুর কান্ট্রি ফিশিংবোর্ড মালিক সমিতির সভাপতি শাহ আলম মল্লিক বলেন, ‘আমরা সব সময়ই অভিযান শুরুর আগেই সরকারি প্রণোদনা দেবার জন্য বলি। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা কখনোই তা আমলে নেয়না। ফলে কিছু কিছু জেলে অভাবের কারনেই নদীতে নামতে বাধ্য হয়।’

এদিকে চাঁদপুর মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ৪ অক্টোবর থেকে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত চাঁদপুরে ইলিশ রক্ষায় ১০৭টি অভিযান পরিচালিত হয়। এসব অভিযানে প্রায় ৮০ লাখ মিটার কারেন্ট জাল ও ৩৯৮ কেজি ইলিশ জব্দ করা হয়। এছাড়াও এই অভিযানে ৮৩ জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয় এবং ১৯ হাজার টাকা জরিমানাও আদায় করা হয়।

প্রতিবেদক: শরীফুল ইসলাম, ১৩ অক্টোবর ২০২১

Share