চাঁদপুর ফরিদগঞ্জের কৃতি সন্তান মাহমুদুল হাসান জয়ের দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করে দলকে ৭ উইকেটের সহজ জয় এনে দিয়েছেন।
মাহমুদুল জয়ের ব্যাট থেকেই আসে ১২৭ বলে ১০০ রানের ইনিংস। আর এ ইনিংসের পর পুরস্কার স্বরুপ নতুন ঝকঝকে একটি ব্যাট পেয়েছেন জয়।
দলের শ্রীলঙ্কান কোচ নাভিদ নেওয়াজ নতুন ব্যাটটি দিয়েছেন জয়কে। তিনি আগেই ভারত থেকে অর্ডার দিয়ে কিছু নতুন ব্যাট আনিয়ে রেখেছিলেন। বিশ্বকাপের মঞ্চে বড় কোনো মাইলফলক গড়তে পারলে, কোনো শিষ্যদের দেয়ার আশায়।
সেমিফাইনালের মতো ম্যাচে অসাধারণ এক সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে কোচের কাছ থেকে ব্যাট পাওয়ার কাজটি দারুণভাবেই করেছেন জয়। ম্যাচশেষে লঙ্কান কোচ নিজেই তুলে দিয়েছেন পুরস্কারের এই ব্যাট। এছাড়া বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ সুজন ও যুব দলের ম্যানেজার সজল চৌধুরী দিয়েছেন অর্থ পুরস্কার।
এইচএসসি দ্বিতীয়বর্ষ ছাত্র জয়।তার প্রথম ক্লাব ক্লেমন ক্রিকেট একাডেমি, চাঁদপুর। বর্তমানে শাহীনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব।পরিবারের সব সদস্য জয়ের প্রিয়।প্রিয় ক্রিকেটার রাহুল দ্রাবিড় ও সাকিব আল হাসান।ক্যারিয়ারের সেরামুহূর্ত অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যালেঞ্জ সিরিজে ইস্টজোনের হয়ে সেন্ট্রাল জোনের বিপক্ষে ১০০ রানের অপরাজিত ইনিংস।
অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে অবদান রাখতে চান মাহমুদুল হাসান ব্যাংকার বাবার স্বপ্ন ছিল ছেলে পড়ালেখা শেষ করে তার পেশাই বেছে নেবে। আবুল বারেকের স্বপ্ন কুঁড়িতেই ঝরে পড়ে। বাবার নয়, নিজের স্বপ্নের পিছেই ছুটেছেন মাহমুদুল। যে স্বপ্নের অলিগলি পেরিয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়ে পরিণত হয়েছেন ২০০০ সালে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে জন্ম নেওয়া এই ক্রিকেটার।
চার ভাই-বোনের মধ্যে তৃতীয় মাহমুদুল ছোট থেকেই ডানপিটে। প্রাইমারিতে থাকতে বাবা-মায়ের চোখ ফাঁকি দিয়ে মাঠে তো যেতেন, কিন্তু এলাকার বড় ভাইয়েরা ব্যাটিং দিতো না তাকে। শুধু ফিল্ডিং করে মন খারাপ নিয়ে বাসায় ফেরার পথে ভাবতেন, একদিন বড় ব্যাটসম্যান হয়ে দেখিয়ে দেবেন বড় ভাইদের। এখন স্মৃতির সাগরে ঝাঁপ মারলে অন্যরকম ঢেউ খেলে যায় তার মনে।
জয় জানান, একদম ছোটবেলা থেকেই টেপ টেনিসে পাড়ার স্কুলে ক্রিকেট খেলতাম। যদিও খেলার সুযোগ পেতাম না বড় ভাইদের জন্য। তারা আমাকে ব্যাটিং দিতো না, কেবল ফিল্ডিং করাতো। আমি হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরতাম। তখন মনে জেদ চাপতো, আমিও ভালো ব্যাটসম্যান হয়ে বড় ভাইদের দেখিয়ে দেবো।
আমার এক আঙ্কেল বিজিবিতে চাকরি করেন, তার পোস্টিং ছিল রাঙামাটি। আমি তখন ছোট, ১৩ বছর বয়স হবে। ওই সময় আব্বু আমাকে নিয়ে রাঙামাটি ঘুরতে গিয়েছিল। সেখানে ওই আঙ্কেলের কাছে আমার নামে বিচার দেয়। আব্বু আঙ্কেলকে বলে, আমি সারাদিন স্কুল মাঠে ক্রিকেট খেলে বেড়াই। এসব শুনে আঙ্কেল আব্বুকে বলেন, আমাকে বিকেএসপিতে ভর্তি করানোর কথা। প্রথমে ২০১৩ সালে আমি চাঁদপুরের ক্লেমন ক্রিকেট একাডেমিতে ভর্তি হই। শামীম স্যারের কাছে দুই বছর অনুশীলন করি। এরপর ২০১৪ সালের শেষের দিকে বিকেএসপিতে ভর্তি হই। ওখানে বয়সভিত্তিক ধাপগুলো পেরিয়ে এই পর্যন্ত এসেছি।
২০১৩ সালে ক্রিকেট বলে শুরুটাই তো হয়েছে তার হাত ধরে। তার কাছে ব্যাট-বল ধরা শেখা আমার। উনিই আমাকে প্রাথমিক বিষয়গুলো শিখিয়েছেন। তার কাছে দুই বছর ব্যাটিংয়ে পাওয়া শিক্ষা পরবর্তীতে বিকেএসপিতে কাজে লাগাতে পেরেছি।
জয় বলেন,দ্রাবিড়কে ‘দ্য ওয়াল’ বলা হতো। আমিও আমার দলের ‘ওয়াল’ হতে চাই। দেশের মধ্যে সাকিব ভাইয়ের খেলা ভালো লাগে। তার মধ্যে থাকা আক্রমণাত্মক মনোভাব আমাকে মুগ্ধ করে।দ্রাবিড়-সাকিবকে আদর্শ মেনে তার এগিয়ে চলাপ্রোফাইল
চাঁদপুর টাইমস রিপোট