Home / উপজেলা সংবাদ / চাঁদপুর সদর / চাঁদপুর বাগাদীতে ঝিলে বিষ প্রয়োগ : হুমকিতে কোটি টাকার মৎস্য প্রকল্প
bish proyog jil

চাঁদপুর বাগাদীতে ঝিলে বিষ প্রয়োগ : হুমকিতে কোটি টাকার মৎস্য প্রকল্প

চাঁদপুর সদর উপজেলার ৮নং বাগাদি ইউনিয়নের নানুপুর গ্রামে পূর্ব শত্রুতার রেশধরে একটি চাষকৃত ঝিলে বিষ প্রয়োগ করে কয়েক লাখ টাকার মাছ মেরে ফেলা হয়েছে।

সোমবার (২৩ অক্টোবর) দিনগত রাতের কোনো এক সময়ে নানুপুর সুরুজ গেইট সংলগ্ন দক্ষিণ দিকের ঝিলে এই ঘটনা ঘটে।

এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। খবর পেয়ে মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তাছাড়াও বিষমিশ্রিত পানির কারণে পাশ্ববর্তি মরা ডাকাতিয়ার বদ্ধ জলাশয় নামের আকেটি ঝিলের কোটি টাকার মৎস্য প্রকল্প হুমকির মুখে পড়েছে।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, প্রায় ৭ বছর আগে বাগাদী ইউনিয়নের একটি সমিতির নামে নানুপুর সুরুজ গেইটের দক্ষিণ দিকের ঝিলটি লিজ নেয়া হয়। পরে সমিতির সদস্য মাওলানা কাজী রফিক উল্যাহ, রেদোয়ান রাজা, জাকির হোসেন, মুসলিম মিয়া, আরিফ উল্যাহ, কবিরসহ প্রায় ২২জন ওই ঝিলে মাষ চাষ শুরু করে।

চলতি মাসের ১৯ অক্টোবর ঝিল থেকে মাছ ধরতে গেলে স্থানীয় দুর্বৃত্তরা বাধা দেয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে একই দিন সকাল ৯ টায় দিকে প্রতিপক্ষরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাগাদী চৌরাস্তা বাজারে মো. খোরশেদ আলম রাজার কাপড়ের দোকানে (রাফিয়া ফ্যাশন) হামলা চালায় এবং রেদোয়ান রাজাসহ বেশ কয়েকজনকে কুপিয়ে আহত করে।

এই ঘটনায় মো. খোরশেদ আলম রাজা বাদি হয়ে চাঁদপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে। যার মামলা নং ৩০/৫৪২।

থানায় মামলা দায়ের করায় অভিযুক্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে রাতের কোনো এক সময় চাষকৃত ঝিলে বিষ প্রয়োগ করে বলে অভিযোগ করা হয়। এতে করে ঝিলে চাষকৃত কয়েক লাখ টাকার মাছ মরে পানিতে ভেসে উঠে।

পরে বিষয়টি তারা চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশকে অবহিত করে থানায় আরো একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। খবর পেয়ে মডেল থানা উপ-পরিদর্শক মো. আক্কাছ সংঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং এলকাবাসীর সাথে কথা বলে তথ্য সংগ্রহন করেন।

এ বিষয়ে ঝিলে মাছ চাষকারিদের একজন মো. জাকির হোসনে জানায়, ২৪ অক্টোবর মঙ্গলবার দিনের আলোতে ঝিলে মাছ ভাসতে দেখে এলাকাবাসীরা আমাদের খবর দেয়। আমি সাথে সাথে বিষয়টি বাগাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে অবহিত করি এবং ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার মনির ঢালী, ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার ইসহাক গাজী ও সমিতির সদস্য কবির, আরিফ উল্যাহ গাজী, হেতু রাজসহ অন্যান্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। সেখানে গিয়ে ঝিলের পানিতে মরা মাছ ভেসে থাকতে দেখে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।

তিনি আরো জানান, ১৯ তারিখে আমরা ঝিল থেকে মাছ ধরতে গেলে বাধা দেয়। তারা জানায় বাগাদী কেউ এসে নানুপুরে মাছ চাষ এবং মাছ ধরতে পারবে না।

এদিকে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, উল্লেখিত ঝিলের পানিতে মাছগুলো মরে ভেসে আছে। তাছাড়া এ ঝিলের বিষমিশ্রিত পানির কারণে পাশ্ববর্তি মরা ডাকাতিয়ার বদ্ধ জলাশয়ের কোটি টাকার মৎস্য প্রকল্প হুমকির মুখে পড়েছে। খোজ নিয়ে জানাযায় বাগাদী চৌরাস্তা বাজার মৎস্যজীবী সমিতির নামে সদস্যরা গতবছরের এপ্রিল মাসে চাঁদপুর উপজেলা পরিষদের কাছ থেকে মরা ডাকাতিয়ার বদ্ধ জলাশয় নামের বিশাল এই ঝিলটি লিজ নেয়। পরে সেখানে তারা প্রায় মাছ চাষে প্রায় ৫০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন। বর্তমানে সেখানে মাছসহ প্রায় কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে। বিষ প্রয়োগ করা পাশ্ববর্তি ঝিলটি উচুতে থাকায় ওই ঝিলের পানি এ জলাশয়ে নেমে আসছে।

চৌরাস্তা বাজার মৎস্যজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দরা জানায়, পাশের ঝিলের বিষাক্ত পানি আমাদের ঝিলে নেমে আসছে। এতে করে আমাদের ঝিলের মাছ হুমকির মখে রয়েছে। এজন্য তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সুবিচার চেয়েছেন তারা।

এ বিষয়ে বাগাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ মো. বেলায়েত হোসেন গাজী বিল্লাল জানায়, আমি বিষয়টি শুনেছি। শত্রুতা বসত এই ঘটনা কোনো মতেই কাম্য নয়। আমি আশা করবো আগামীতে যেনো কেউ এ ধরনের কাজ কেউ না করে।

প্রতিবেদক আশিকি বিন রহিম
: আপডেট, বাংলাদেশ ১১:৪৩ পিএম, ২৪ অক্টোবর, ২০১৭ মঙ্গলবার
ডিএইচ

Leave a Reply