নতুন করে ’গভীর পরিকল্পনায় আসছে আইএস’

জেহাদি সংগঠন আইএস এবার রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ফাঁস হয়ে যাওয়া তাদের একটি দলিল দেখা যায়, রাষ্ট্রনীতি থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক প্রকল্প, শিক্ষাব্যবস্থা যাবতীয় পরিকল্পনার বর্ণনা আছে তাতে।

একদিকে যেমন আইএসের রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনার খবর, অন্যদিকে চোখ কপালে তোলার আরেক সংবাদ : টাইম ম্যাগাজিনের বর্ষসেরা ব্যক্তি (পার্সন অফ দ্য ইয়ার) মনোনয়নের সংক্ষিপ্ত তালিকায় উঠে গেছে আইএস আইএসের প্রধান খলিফা আবু বকর আল বাগদাদির নাম।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী রিপাবলিকান নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প, ক্যাটলিন জেনারের সঙ্গে টাইমের সংক্ষিপ্ত তালিকায় বাগদাদির নাম থাকায় চমক সৃষ্টি হয়ে গেছে আন্তর্জাতিক, রাজনৈতিক, কূটনৈতিক, সাংবাদিক মহলে।

ইরাক ও সিরিয়ায় দখল করা অঞ্চল নিয়ে যে রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা নিচ্ছে আইএস, তাতে স্বাধীন সরকারের যা যা থাকে, সেই অনুযায়ী তারা গড়তে চাইছে সরকারি দপ্তর, কোষাগার। অর্থনৈতিক প্রকল্প, শিল্প, শিক্ষাব্যবস্থা, কূটনৈতিক ব্যবস্থা এবং পুরদস্তুর সেনাবাহিনী।

আইএস জেহাদিদের এসব উদ্যোগ ফাঁস হয়েছে তাদের একটি দলিল প্রকাশ হয়ে যাওয়ায়। এই দলিলটি লিখেছেন এক মিশরীয় তাত্ত্বিক নেতা, আবু আবদুল্লাহ আল মসরি। দলিলটি লেখা হয়েছে ২০১৪’র জুলাই থেকে অক্টোবরের মধ্যে। দলিলটি হাতে পেয়ে প্রকাশ করেছে গার্ডিয়ান সংবাদপত্র।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক চার্লি উইনটার সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, আইএস গভীর রাজনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে সুপরিকল্পিতভাবে এগোচ্ছে। স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের জন্য ইরাক ও সিরিয়ায় দখলীকৃত অঞ্চলগুলোতে পরিকাঠামো গড়ে তুলছে।

এই দলিলে মিশরীয় আইএস নেতা আবদুল্লাহ প্রস্তাব দিয়েছেন, বিদেশ থেকে আসা আইএস সদস্য এবং স্থানীয়রা এই রাষ্ট্রে একই নাগরিকত্বে পরিচিত হবেন। শিল্প হিসেবে যেসব কারখানা গড়ে তোলা হবে, সেখানে উৎপাদন করা হবে অস্ত্রশস্ত্র এবং খাবারদাবার। শিক্ষাব্যবস্থায় স্কুল তৈরি হবে মুজাহিদদের ধর্মীয় শিক্ষা এবং সমর শিক্ষা।

দলিলটিতে এসব বিবিধ বিষয়ে ১০টি অনুচ্ছেদ রয়েছে। দলিলটির শিরোনাম দেয়া হয়েছে ইসলামী রাষ্ট্রের প্রশাসনিক নীতিমালা। এএফপি, রয়টার্স। এদিকে, আইএসের বিরুদ্ধে বেশ হৈ চৈ করে সংসদে ভোটাভুটি করে বিমান হামলা চালাচ্ছে যুক্তরাজ্য।

অথচ এই যুক্তরাজ্যের তৈরি অস্ত্র দিয়েই নির্মম হত্যাকা- চালাচ্ছে আইএস জেহাদিরা। ইরাক-সিরিয়ায় আইএস জেহাদিরা যুক্তরাজ্যের পাঠানো অস্ত্রে যুদ্ধ করছে বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। অ্যামনেস্টি প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৩ সালের ইরাক আগ্রাসনের সময় পাঠানো অ্যাসল্ট রাইফেল ও হালকা অস্ত্র এখন আইএস জেহাদিদের হাতে।

সংস্থাটির বিশেষজ্ঞরা বিভিনড়ব ভিডিও ও তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন, আইএস জেহাদিরা ২০০৩ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত ইরাকে পাঠানো বিদেশী অস্ত্র ব্যবহার করছে। আইএসের অস্ত্র ভাণ্ডারে শুধু ব্রিটিশ সমরাস্ত্রই নয়; আছে মার্কিন অত্যাধুনিক এম-সিক্সটিন রাইফেল, চীনের সড়বাইপার রাইফেল আর বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রও। (রয়টার্স।)
নিউজ ডেস্ক ।। আপডেট : ০৩:০০ এএম, ১২ ডিসেম্বর ২০১৫, শনিবার
ডিএইচ

Share