জাতীয়

ধেয়ে আসছে আম্ফান : রাতেই বাংলাদেশের দিকে এগিয়েছে ১৬৫ কি.মি.

সুপার সাইক্লোন আম্ফান গত রাতের ১২ ঘণ্টায় বাংলাদেশের দিকে এগিয়েছে ১৬৫ কিলোমিটার। অর্থাৎ গড়ে ১৩ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার গতিতে বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে আসছে সুপার সাইক্লোনটি।

বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতর বলছে,১৮ মে সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৪০ কিলোমিটার দূরে এবং আজ মঙ্গলবার ১৯ মে ভোর ৬টায় পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল আম্ফান।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) জানিয়েছে, আম্ফান ঘণ্টায় গড়ে ২২ কিলোমিটার বেগে এগোচ্ছে উপকূলের দিকে। শক্তি সঞ্চয় করে ‘সুপার সাইক্লোনে’ রূপ নিয়েছে এটি। প্রতিনিয়তই এর শক্তি বাড়ছে। তবে আবহাওয়াবিদরা জানান, বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানার সময় এর গতি কিছুটা কমে ‘এক্সট্রিম সিভিয়ার সাইক্লোন’ বা ‘অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ে’ রূপ নিতে পারে। এর পরও ঘূর্ণিঝড়টি ২০০৭ সালের সিডরের মতোই শক্তি নিয়ে আসতে পারে।

মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অধিদফতর বলেছে, পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুপার সাইক্লোন ‘আম্ফান’ উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আজ ভোর ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৯০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৪০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে ১৯ মে শেষরাত থেকে ২০ মে বিকেল বা সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

সুপার সাইক্লোন কেন্দ্রের ৯০ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২২৫ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২৪৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুপার ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর ও তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমকালে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম জেলা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিসহ ঘণ্টায় ১৪০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতিসত্বর নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়া ডেস্ক,১৯ মে ২০২০

Share