ফরিদগঞ্জে ধানের চারা কেটে মাছ চাষের অভিযোগ

আসন্ন দুর্ভিক্ষের কথা মাথায় রেখে দেশের এক ইঞ্চি জমি খালি না রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এক্ষেত্রে তিনি কৃষকদের ধানচাষের উপর মনোনিবেশ করার অনুরোধ করেন। কিন্তু ফরিদগঞ্জের চরমথুরা চরে দেখা গেছে তার উল্টো চিত্র। এখানে ধানের চারা কেটে মাছ চাষের উপযোগী করে তুলছে একদল মৎস ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট।

ঘটনার বিবরণ এবং থানায় অভিযোগপত্রের মাধ্যমে জানা যায়, চরমথুরার চর প্রতিবছরের মতো এবারও টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ইজাড়া দেওয়া হয়। এবছর ডাক পেয়েছেন স্থানীয় মাছ ব্যবাসীয় বকুল। এদিকে প্রতিবছরই শুকনা ওই চরে মৌসুমের কৃষকরা ধান চাষ করে। আর বর্ষা মৌসুমে মাছ চাষ করা হয়। এ বছরও কৃষক ধান চাষ করেছে। ধানের চারা বড়ও হয়। কিছু দিন পর হয়তো ধানে চড়া বের হবে। হঠাৎ করে বকুল গত প্রায় ১০ থেকে ১২ দিন পূর্বে চরে পানি ছেড়ে দেয়। সর্বশেষ গতকাল ২৭ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার শেষ বিকেলে লোক লাগিয়ে কৃষকদের প্রায় ১০/১৫ শতাংশ জমির ধান কেটে ফেলে। এ নিয়ে বকুলের সাথে কৃষকদের বিরোধ বাঁধে।

ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে কৃষকদের মধ্যে মো.রবিউল বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে ফরিদগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

এ বিষয়ে কৃষক মো. রুবেল হোসেন, মো. তোফাজ্জল বেপারী, মো. জাহেদ বেপারীসহ আরো অনেকেই চাঁদপুর টাইমসকে জানান, আমরা চরে ধান লাগিয়েছি। চরে সবসমই ভালো ধানের ফলন হয়। এবারো ধানের ভালো ফলন হওয়ার আশা ছিল আমাদের। কিন্তু চর কমিটি আমাদের সাথে অন্যায় করে ধান আসার পূর্বেই চর ইজারা দিয়ে দেয় এবং ইজারাদার আমাদের না জানিয়ে চরে পানি ও মাচ চেড়ে দেয়। সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার ২৭ ফেব্রুয়ারী শেষ বিকেলে ইজারাদার ৭জন লোক লাগিয়ে আমাদের ধান কেটে ফেলেছে। আমরা তার দৃষ্টান্ত বিচার চাই।

এ বিষয়ে ইজারাদার বকুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি ১২ মাসের জন্য এই চরটি প্রায় ২১ লক্ষ টাকা দিয়ে ইজারা নিয়েছি চর কমিটির কাছ থেকে। নদিতে পানি এসেছে তাই আমি চরে পানি দিয়ে অনেক প্রজাতির মাছ চেড়েছি। এখন চর কমিটি যদি ধান রাখতে চায় তাহলে আমার ক্ষতিপুরন কে দেবে? ধান কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার দুইজন লোক গতকাল কিছু ধান কেটেছে।

এ বিষয়ে চর কমিটির সভাপতি মোবারক মেম্বার জানান, আমরা প্রতি বছর এ চরে ধানের দামসহ ইজারা দিয়ে থাকি। কিন্তু এবার আমাদের না জানিয়ে কিছু কৃষক চরে ধান লাগিয়েছে। আমি তাতে নিষেধ করেছি। এখন যেহেতু একটি সমস্যা হয়েছে তা সমাধন করবো।

এ বিষয়ে এ.এস.আই আমজাদ হোসেন বলেন, আমি ধান কাটার একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কামরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ধান উৎপাদনের স্বার্থে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে প্রতিকার চেয়ে লিখিত অভিযোগ করবো।

প্রতিবেদক: শিমুল হাছান, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

Share