রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আসছে কওমিসহ সকল ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

সমন্বিত শিক্ষার আওতায় আনতে কওমিসহ সব ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনতে যাচ্ছে সরকার। একটি সমন্বিত নীতিমালা তৈরি করে ধর্মীয় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধনের আওতায় আনা হবে। নীতিমালার খসড়া তৈরি করতে সম্প্রতি ১৫ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান জানান, ‘আমরা চাই শিক্ষার মূল ধারায় কওমিসহ সব ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যুক্ত হোক। আর সে কারণেই একটি সমন্বিত নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নীতিমালা তৈরির জন্য ১৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।’

খসড়া নীতিমালা তৈরি করার জন্য গঠন করা ওই ১৫ সদস্যের কমিটিতে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব পর্যায়ের একজন প্রতিনিধি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম-সচিব পর্যায়ের একজন প্রতিনিধি, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব পর্যায়ের একজন প্রতিনিধি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব পর্যায়ের একজন প্রতিনিধি, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ এর সভাপতি, বেফাকুল মাদারিলি কওমিয়া -এর সভাপতি, আঞ্জুমানে ইত্তেহাদুল মাদারিস বাংলাদেশের মহাপরিচালক, আযাদ দ্বীনী এদরায়ে তা’লীম বাংলাদেশের সভাপতি, তানযীমুল মাদারসিদি দ্বীনীয়া বাংলাদেশের সভাপতি, জাতীয় দ্বীনী মাদরাসা শিক্ষা শিক্ষাবোর্ড বাংলাদেশের সভাপতিকে কমিটির সদস্য করা হয়েছে।

কমিটির কার্যপরিধিতে বলা হয়েছে—কওমি মাদ্রাসাসহ ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য যুগোপযোগী কার্যকর ও সরকারের নিবন্ধনের আওতায় আনার লক্ষ্যে সমন্বিত একটি খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। কওমি মাদ্রাসা সংক্রান্ত আলাদাভাবে পরিচালিত ৬টি বোর্ডকে সমন্বয় করে একটি কওমি বোর্ড গঠনের প্রস্তাব প্রস্তুত করে কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব বরাবর সুপারিশ পেশ করতে করতে হবে।

আসন্ন বাজেটে ৯ম পে-স্কেলসহ ৭ দফা দাবি

এর আগে গত ৩ মে কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার প্রশ্নে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছিলেন, “নিয়ন্ত্রণ অবশ্যই করতে হবে। বেকার না তৈরি করে শিক্ষার্থীদের নিষ্কৃতি দিতে কওমি মাদ্রাসাকে মূল ধারায় নিয়ে আসা প্রয়োজন। এখানে শিক্ষার্থীদের স্বার্থটিই বড়। তবে সরকারের সিদ্ধান্ত যাতে ‘ব্যাক ফায়ার’না হয় সে জন্য রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে হবে।”

সংশোধিত শিক্ষাক্রমের আওতায় ২০২৩ সাল থেকে এসএসসি ও সমমান পর্যন্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সমন্বিত শিক্ষা ব্যবস্থায় নেওয়া হবে। সমন্বিত শিক্ষা কার্যক্রমে মানবিক বিজ্ঞান ও বাণিজ্য বিষয় আলাদা থাকবে না। দেশের সব শিক্ষার্থীকেই একই ধরনের শিক্ষাক্রমে লেখাপড়া করতে হবে। তবে মৌলিক বিষয় বাধ্যতামূলক রেখে শিক্ষার্থীদের বিষয় বাছাইয়ের সুযোগ রাখা হবে সমন্বিত শিক্ষা ব্যবস্থায়। এই ব্যবস্থাকে এক ধরনের একমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা বলেও মনে করছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সমন্বিত ওই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ গত ২১ জুন ১৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাদ্রাসা) কমিটির আহ্বায়ক এবং কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের পরিদর্শককে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কওমিসহ সব ধরনের ধর্মীয় শিক্ষা সংশ্লিষ্ট প্রধানদের সদস্য করে শক্তিশালী কমিটি গঠন করা হয়।

অন্যদিকে গত ১১ এপ্রিল দেশের সব জেলা প্রশাসকদের কাছ থেকে কওমি ও আলেয়া মাদ্রাসাসহ সব মাদ্রাসার তথ্য তথ্য চায় কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ। নির্ধারিত ছকে জেলার নাম মাদ্রাসার সংখ্যা, শিক্ষক, ছাত্র, ছাত্রীর সংখ্যা জানতে চাওয়া হয়। কওমি আলিয়া ও অন্যান্যা মাদ্রাসার তথ্য আলদাভাবে চাওয়া হয়েছিল।

ঢাকা ব্যুরো চীফ, ২৪ জুন ২০২১

Share