সারাদেশ

বছরের শুরুতেই চাল ও ডিমের দামে অস্থিরতা

বেশ কিছুদিন স্থিতিশীল ছিল দেশের পণ্যবাজার। চাল, সবজি, পেঁয়াজ, তেল থেকে শুরু করে নিত্যপণ্যের দামে সেই স্থিতিশীলতা ভাঙতে শুরু করেছে। নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহ যেতে না যেতেই স্থিতিশীল পণ্যের বাজারে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছে। আমনের ভরা মৌসুমেও দাম বাড়ছে চালের। অস্থিরতা শুরু হয়েছে ডিমের বাজারেও।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সদ্যঃসমাপ্ত একাদশ জাতীয় নির্বাচনের সময় পরিবহন সংকট তৈরি হয়েছিল, যে কারণে এই দাম বেড়েছে। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি চালের দাম দুই থেকে চার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এর মধ্যে সরু চালের দাম বেড়েছে সবচেয়ে বেশি।

ঢাকা ও ঢাকার বাইরের চালের পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মিলপর্যায়ে সরু চালের দাম (মিনিকেট-নাজিরশাইল) বেড়েছে প্রতি বস্তায় (৫০ কেজি) ২০০ টাকা পর্যন্ত। মোটা চালের দাম বেড়েছে বস্তায় ৫০ থেকে ১০০ টাকা। পাইকারিতে সরু চালের দাম কেজিতে চার টাকা বাড়লেও মোটা চালের দাম দু-এক টাকা বেড়েছে।

বাবুবাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমনের যে ধান এসেছে সেটার মধ্যে মোটা চালের জাত বেশি। এ কারণে মোটা চালের দাম কম বেড়েছে। জোগানেরসংকটে নয়, মিলপর্যায়ে মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি পরিবহন ভাড়া বেড়ে গেছে, যে কারণে দাম বেড়েছে।’

অন্যদিকে সরকারিভাবে চাল সংগ্রহ করাটাও দাম বৃদ্ধির একটি কারণ বলে জানান তিনি। সরকার ৩৬ টাকা কেজি দরে চাল সংগ্রহ করছে, যার প্রভাব পড়েছে বাজারে। কারণ আগে মোটা চাল বিক্রি হচ্ছিল ৩৭ থেকে ৩৮ টাকায়, যা এখন ৩৮ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মিলপর্যায়ে প্রতি বস্তা মিনিকেট চালের দাম বেড়েছে সর্বোচ্চ ২০০ টাকা। এর প্রভাবে খুচরা বাজারে ভালো মানের সরু চাল কেজিপ্রতি ৫৬-৬২ টাকায়, মাঝারি বিভিন্ন চাল ৪৮-৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মোটা স্বর্ণা চাল ৩৮-৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

কারওয়ান বাজারের আল্লাহর দান চালের আড়তের বিক্রেতা আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘মিলে চালের দাম বেড়েছে, যে কারণে আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’

নওগাঁর ধান-চাল আড়তদার সমিতির সভাপতি নিরদ বরণ সাহা বলেন, ‘বাজারে কিংবা মোকামে ধান-চালের সংকট নেই। তবে মিলাররা বেশ কিছুদিন ধরে লোকসানে চাল বিক্রি করছিল। এখন দাম বাড়ানো না হলে মিলারদের উৎপাদন খরচ তোলা সম্ভব হবে না। ফলে বাধ্য হয়ে চালের দাম বাড়ানো হয়েছে।’

চালের পাশাপাশি আবারও অস্থির হয়ে উঠেছে ডিমের বাজার। গত বছরের ডিসেম্বর মাসজুড়ে ডিমের বাজার স্থিতিশীল থাকলেও দু-তিন দিন ধরে হঠাৎ করে বাড়তি ডিমের বাজার। রাজধানীতে প্রতি হালি ফার্মের মুরগির ডিম বর্তমানে ৩৫-৩৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কয়েক দিন আগেও প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হয়েছে ৯৫ টাকায়, যা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১০৫ টাকায়।

ডিমের দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি হানিফ মিয়া বলেন, ‘শীতের কারণে চাহিদা বাড়লেও উৎপাদন বাড়েনি, যে কারণে দাম বেড়েছে।’ (কালের কণ্ঠ)

বার্তা কক্ষ
৫ জানুয়ারি,২০১৯

Share