সারাদেশের ন্যায় চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জেও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য লাগামহীন হয়ে পড়েছে। এতে করে নিম্ন আয়ের মানুষ দিশেহারা হলেও প্রশাসন নিরব ভূমিকায় থাকায় জনসাধারনের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
শীতকালীন সবজির পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। দোকানে মূল্যতালিকা টানানোর কথা থাকলেও ব্যবসায়ীরা তা ঠিকমত মানছেন না। ফলে প্রতিদিনই দামের পার্থক্য দেখতে হয় সাধারণ ক্রেতাদের।
২০ ফেব্রুয়ারী রোববার সকালে ফরিদগঞ্জ সদর বাজারের ঘুরে দেখা যায়, ‘খোলা সয়াবিন তেল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা, বোতলজাত তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ থেকে ১৮৫ টাকায়। নির্ধারিত দামের চেয়েও বেশিতে বিক্রি হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে ক্রেতাদের। পাঁচ লিটারের বোতল কিনতে দিতে হচ্ছে ৮১০ থেকে ৮৩০ টাকা। এ দিকে এক বছরে ভোজ্য তেলের দাম দ্বিগুনের বেশি বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্রেতারা বলছে মনিটিরিং ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিনিয়ত ব্যবসায়ীরা কৃত্তিম ভাবে তাদের মতো করে বেশি দামে বিক্রি করছে ‘
মোতালেব নামের অটোরিক্সা চালক চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘দিনে যে কয় টাকা ইনকাম হয়, তা দিয়ে তেল,ডাল, পিঁয়াজ-রসুন কিনতেই শেষ। সয়াবিন তেলের দাম ১৮৫ টাকা। এক কেজি তেল কিনলে দেখা যাই অন্য বাজার করতে গেলে টাকা প্রায় শেষ হয়ে যায়। এখন সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে তেলের। আমরা যারা কাজ করে খাই, দিনে আর কই টাকা ইনকাম হয়।
আকলিমা বেগম, তাছলিমা বেগম ও রাজিয়া সুলতানা নামের একাধিক গৃহিণী বলেন, ‘সব কিছুরই দাম বেড়েছে, এখন তো আমাদের মতো গরিবের মরন। আমাদের মতো গরিবের মানুষের করার কিছুই নেই। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যেও পাশাপাশি সকল প্রকার কাচাঁ বাজারের দামও অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, ‘মৌসুমেও অনেক সবজি বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি ৬০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, পেঁয়াজ ৫০ টাকা, টমেটো ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। দুদিন আগেও যা ছিল ২৫-৩০ টাকা কেজি। পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১০ টাকা। বেগুন বেড়েছে ২০ টাকা। তবে নতুন আলুর দাম স্থিতিশীল রয়েছে।
ফরিদগঞ্জ সদর কাঁচাবাজারে আসা ক্রেতা নূরুল ইসলাম চাঁদপুর বলেন, ‘শীতকালীন শাক-সবজির দাম ১০-২০ টাকা বেড়েছে। গরিব মানুষের কিনার ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। মুরগি কিনতে গেলাম ১৬০ টাকা কেজি, সেখানেও দেখি চড়া দাম। এখন ডিম আর কিছু সবজি কিনে নিয়ে বাসায় যাচ্ছি।
রুপসা কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ী রিপন চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘প্রতিদিন বাড়ছে শাকসবজির দাম। আমরা বেশি দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করছি। এ কারণে ক্রেতাদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয় প্রতিনিয়ত।’
খাজুরিয়া বাজারের ব্যবসায়ী আজাদ বলেন,‘তেলের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। আমরা পাইকারি ভাবে ১৮০ টাকা কেজি ধরে সয়াবিন তেল বিক্রি করছি। সীমিত লাভে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছি। মসুর ডালও দুদিনে ১০ টাকা বেড়েছে।’
ফরিদগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আজিজুননাহার চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘বাজার সহনশীল করার লক্ষ্যে আমরা বাজার তদারকি শুরু করব। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। বাজার মূল্যের চেয়ে বেশি দামে তেল বিক্রি করা যাবে না। প্রতিটি দোকানে মূল্যতালিকা টানাতে হবে।’
প্রতিবেদক: শিমুল হাছান, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২