Home / চাঁদপুর / চাঁদপুরে সীমিত সময়ের জন্যে দোকান-মার্কেট খুললেও নেই ক্রেতা
দোকান-মার্কেট

চাঁদপুরে সীমিত সময়ের জন্যে দোকান-মার্কেট খুললেও নেই ক্রেতা

অবশেষে দুই সপ্তাহের লকডাউন শেষে ঈদ উপলক্ষে দোকান ও শপিং মল সীমিত সময়ের জন্য খোলার অনুমতি দিয়েছে সরকার। তবে এ ক্ষেত্রে মানতে হবে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা। সে সব ব্যবস্থা পালনের কথা চিন্তা করে ২৫ এপ্রিল রবিবার থেকে অধিকাংশ চাঁদপুরে দোকান-শপিং মল খুলেছে ব্যাবসায়ীরা।

তবে ঈদের আগে যে রকম ক্রেতা সমাগম মার্কেটে দেখা যাওয়ার কথা, তার ছিটেফোঁটাও নেই। এতে করে চাঁদপুরের এসব ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ীদের মাঝে এক প্রকার হতাশা আর দুশ্চিন্তা বিরাজ করছে।

রোববার সকাল থেকে চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন মার্কেটে, শপিং ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি বিপনীবিতানে প্রবেশ পথে রাখা হয়েছে জীবাণুনাশক স্প্রে, যাতে জুতা জীবাণুমুক্ত করে প্রবেশ করা যায়। এছাড়া কর্মচারিদের হাতে রয়েছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার। প্রতিটি বিপনীবিতানের বাহারি পোশাক সাজিয়ে রাখার কাজ করছে দোকানিরা। তবে এতোসব আয়োজন থাকলেও যাদের জন্যে আয়োজন সেই ক্রেতাদের দেখা নেই।

চাঁদপুর শহরের অন্যতম পরিচ্ছন্ন শপিং সেন্টার হাকিম প্লাজার থ্রী পিস ও শাড়ির দোকান প্রজাপতি’র প্রপাইটর এমএ কিরণ জানান,’অনেক দিন পর দোকান খুলেছি। ক্রেতাদের যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানে প্রবেশ করে সে ব্যবস্থা আমরা করেছি। তবে ক্রেতা নেই বললেই চলে। দীর্ঘদিন দোকান বন্ধ থাকায় আমরা নানা দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। একদিকে দোকান ভাড়া, কর্মচারির বেতন, অন্যান্য খরচ নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় আছি। বছরে এই একটি মাস আমরা অপেক্ষায় থাকি, কিন্তু এবারও করোনার কারনে আমরা সব দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হলাম।

এ মার্কেটের কুয়াশা শটিং সেন্টারের পরিচালক ও চাঁদপুর বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি মো.আব্দুল মোতালেব মিলন জানান,’ক্রেতারা যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং সুরক্ষাসামগ্রী ব্যবহার করে মার্কেটে প্রবেশ করেন, সেই ব্যবস্থা আমরা নিশ্চিত করেছি। এছাড়া ক্রেতারা যাতে সামাজিক দূরত্ব মেনে কেনাকাটা করেন, এ বিষয়ে প্রত্যেক দোকান মালিককে বলা হয়েছে। তাছাড়া সীমিত আকারে ক্রেতা প্রবেশের সুযোগ রেখেছি। একসঙ্গে অনেক ক্রেতা ঢুকতে দিচ্ছি না। কিন্তু ক্রেতা খুব একটা নেই আজকে।’

তিনি আরো জানান, মানুষের হাতে টাকা পয়সা নেই। গত ১১দিন লকডাউন থাকায় মানুষের ইনকামও বন্ধ ছিলো। মানুষজন জমানো টাকা আর ধার-দেনা করে খেয়ে বেঁচে ছিলো। সে ঘাটতি পুষিয়ে উঠতে তাদের কষ্ট হবে। তাই এবছর আশানুরুপ বিক্রি হবে কি না তা নিয়ে সঙ্কায় আছি।

চাঁদপুর শহরের সবচেয়ে বড় মার্কেটে রেলওয়ে হকার্স মার্কেট ব্যাবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাকির মৃধা বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আমরা ক্রেতাদের জন্য ব্যবস্থা রেখেছি। মাস্ক পরা অবস্থায় ক্রেতাদের প্রবেশ করতে দিচ্ছি। তবে আজ সকালে মার্কেট খোলার পর এখন পর্যন্ত তেমন ক্রেতা আসেনি। ১১দিন মার্কেট বন্ধ ছিলো। এখন কাঙ্ক্ষিত ক্রেতার দেখা নেই। এ অবস্থায় একদিকে ঢাকার পাইকারি ব্যাবসায়ীদের বাকিতে মাল কেনার টাকা, সমিতি বা এনজিও থেকে ঋণ করার টাকা কোথা থেকে জোগান দিবে তা নিয়ে মার্কেটের অধিকাংশ দোকানদার চিন্তিত।

রেলওয়ে হকার্স মার্কেট থেকে বের হওয়ার এক পুরুষ ক্রেতার সাথে কথা হলে তিনি চাঁদপুর টাইমসকে জানান, অনেক দিন পর মার্কেট খুলেছে। তাই বাচ্চাদের জন্যে কিছু প্রয়োজনীয় পোশাক কিনলাম। দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকায় এবছর ঈদের শপিং করা হবে কি না তা নিয়ে সংশয়ে আছি।

এদিকে একই চিত্র দেখা গেছে শহরের মীর শপিং কমপ্লেক্স, সেবা সিটি সেন্টার, ফয়সাল শপিং সেন্টার, আহমেদ শপিং সেন্টার, শেখ ম্যানসনসহ সকল মার্কেটে। প্রতিটি মার্কেটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নানা আয়োজন আর বাহারী পোশাকের সমারোহ থাকলেও ক্রেতার উপস্থিতি তেমন একটা দেখা যায়নি।

প্রতিবেদকঃআশিক বিন রহিম,২৬ এপ্রিল ২০২১