দেশে-বিদেশে সবাইকে চাকরি দেওয়া সম্ভব নয় : শিক্ষামন্ত্রী

দেশে-বিদেশে সবাইকে চাকরি দেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে অ্যাকাডেমিক ও ফিজিক্যাল মাস্টার প্ল্যানের সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, ‘আমাদেরকে আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। কে হাস-মুরগি পালবে আর কে ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট হবে সেটা ভিন্ন কথা। কিন্তু অন্ট্রাপ্রেনারশিপ স্কিল শিখতেই হবে। সেজন্যই আমি মনে করি ভাষা, আইসিটি, সফটস্কিল এবং অন্ট্রাপ্রেনারশিপ এবং মূল্যবোধ- প্রতিটি শিক্ষার্থীর অবশ্য অবশ্য শেখা দরকার।’

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘দেশের উচ্চশিক্ষায় গুণগত মান নিশ্চিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তারা এরই মধ্যে অ্যাকাডেমিক ও ফিজিক্যাল মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করেছেন। এটি বর্তমান সময়ের চাহিদার আলোকে প্রণয়ন করা হয়েছে। এর ফলে উচ্চশিক্ষায় ব্যাপক পরিবর্তন নিশ্চিত হবে। আউটকাম বেইজড এডুকেশনকে মাথায় রেখে দেশে-বিদেশে জব মার্কেট বিশ্লেষণ করেই এই অ্যাকাডেমিক ও ফিজিক্যাল মাস্টার প্ল্যান করা হয়েছে। বর্তমান সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ভাষা আমাদের জানতেই হবে। সেটি বাংলা এবং ইংরেজি-দুটোই। আইসিটি দক্ষতা এখন লিটারেসির পার্ট হয়ে গেছে। আইসিটি না জানলে ইললিটারেট থেকে যাব। ভাষা, আইসিটি, সফট স্কিল এবং অন্ট্রাপ্রেনারশিপ-এগুলো এখন সবাইকে জানতে হবে। কমিউনিকেশন স্কিল, ক্রিটিক্যাল থিংকিং স্কিল- এগুলো জানতেই হবে। বিদেশে সফ্ট স্কিল স্কুল কলেজ থেকেই শেখানো হয়। আমাদের এখানে শেখানো হয় না।’

তিনি আরও বলেন, ‘সব মিলিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এখন স্ট্যাবল অবস্থানে আছে। বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রবল সম্ভাবনা নিয়ে এগোচ্ছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশি মনোযোগ দেওয়ার কারণ হচ্ছে- উচ্চশিক্ষার ৭০ শতাংশ এই বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গুণগত মান উন্নয়ন হলে সারা দেশের উচ্চশিক্ষায় ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। তৃণমূল পর্যায়ের শিক্ষার্থীর জীবনে পরিবর্তন আসবে। সেই জন্যই আমি মনে করি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবর্তন বেশি জরুরি এবং তারা সেটি অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে দক্ষতার সঙ্গে করছেন।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় গুরুত্বপূর্ণ মতামত দেন- বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ, সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. আবদুল মমিন চৌধুরী, সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. মোফাখ্খারুল ইসলাম, সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. দুর্গাদাস ভট্টাচার্য, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আনোয়ার হোসেন, এফবিসিসিআইয়ের প্রতিনিধি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. মুনাজ আহমেদ নূর, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. নিজামউদ্দিন আহমেদ, ট্রেজারার প্রফেসর আবদুস সালাম হাওলাদার প্রমুখ।

ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের অ্যাকাডেমিক মাস্টার প্ল্যানটা খুবই জরুরি। তবে এটি হতে হবে বাস্তবতার নিরিখে যেন বিষয়গুলো সহজে ইমপ্লিমেন্টেশন করা যায়। এর পাশাপাশি ফিজিক্যাল মাস্টার প্ল্যানও দরকার। তবে সেটি যেন ওপেন স্পেস নষ্ট করে না হয়। ফিজিক্যাল মাস্টার প্ল্যানে সবুজ এবং ব্রিদিং স্পেস থাকতে হবে। কারণ নিঃশ্বাস তো নিতে হবে।’

বার্তা কক্ষ, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

Share