বিশেষ সংবাদ

দেশে ফিরছেন কি প্রধান বিচারপতি!

প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা আগামী ১০ নভেম্বর পর্যন্ত ছুটিতে রয়েছেন। ছুটি শেষে তিনি দেশে ফিরবেন কি না তা নিয়ে রাজনীতি ও আইন অঙ্গনে নানা গুঞ্জন রয়েছে।

কেউ কেউ বলছেন, যেহেতু তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মসহ ১১টি গুরুতর অভিযোগ উঠেছে সেহেতু তিনি সহসাই দেশে ফিরছেন না।

আবার অনেকেই বলছেন, অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগের পূর্বে এক খোলা চিঠিতে প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন “আমি অসুস্থ নই। আমি চলে যাচ্ছি, পালিয়েও যাচ্ছি না। আমি আবার ফিরে আসব।” তবে তিনি কবে ফিরে আসবেন সেটা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না।

এ ব্যাপারে নিশ্চুপ সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের কর্মকর্তারাও। তবে একটি সূত্র জানায়, প্রধান বিচারপতি সিনহা দেশে ফিরছেন না। আর তিনি যদি দেশে ফিরে আসেন তাহলে তার পক্ষে বিচারকার্যে এজলাসে বসা সম্ভব নয়।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের আইন সম্পাদক ও বার কাউন্সিল ফিন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শম রেজাউল করিম বলেন, প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার স্বচ্ছতা, নৈতিকতা এবং অপরাপর গুরুতর অভিযোগের প্রসঙ্গ তুলে আপিল বিভাগের পাঁচজন বিচারকই তার সঙ্গে এজলাসে বসে বিচার কাজ পরিচালনা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। এ কারণে প্রধান বিচারপতি হিসাবে তার দায়িত্বে ফিরে আসা ও বিচার কাজে অংশগ্রহণ বাস্তবতার নিরিখে কোনভাবেই সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, আইনজীবীদের আন্দোলনের মুখে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে অতীতে সাবেক প্রধান বিচারপতি এফকে মুনিমও ওই পদে বহাল থাকলেও প্রধান বিচারপতির কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারেননি।

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম রবিবার (৫ নভেম্বর) সাংবাদিকদের বলেন, আমি আগেও বলেছিলাম প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার দায়িত্ব গ্রহণ সুদূর পরাহত। আজকেও তাই বলছি। কারণ অন্য বিচারপতিরা যদি উনার সঙ্গে না বসতে চান তাহলে তিনি কিভাবে বিচার করবেন?

গত ৩ অক্টোবর এক মাসের ছুটিতে যান প্রধান বিচারপতি সিনহা। মেয়াদ শেষ না হতেই গত ১০ অক্টোবর ছুটির মেয়াদ বর্ধিত করে রাষ্ট্রপতিকে চিঠি দেন প্রধান বিচারপতি। ওইদিনই সুপ্রিম কোর্ট থেকে একটি চিঠি আইন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয়।

ওই চিঠিতে বলা হয়, বিচারপতি সিনহা দীর্ঘদিন বিচার কাজে থাকায় এবং অবসরগ্রহণের তারিখ নিকটবর্তী হওয়ায় মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত মর্মে অবগত করেছেন। মানসিক অবসাদ দূর করার জন্য প্রধান বিচারপতি অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য গমণ ও অবস্থান করতে চান।

এরপরই ১২ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়। ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, প্রধান বিচারপতি বর্ধিত ছুটিকালীন বিদেশে অবস্থানকালে ২ নভেম্বর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত অথবা পুনরায় স্বীয় কার্যভার গ্রহন না করা পর্যন্ত বিচারপতি ওয়াহ্হাব মিঞা প্রধান বিচারপতির কার্যভার পালনের দায়িত্ব চালিয়ে যাবেন।

সুপ্রিম কোর্টের একজন সাবেক রেজিস্ট্রার বলেন, প্রজ্ঞাপনেই বলা হয়েছে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত বা পুনরায় স্বীয় কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত প্রধান বিচারপতির কার্যভার পালন করবেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি। আর দেশে ফিরে আসলেও যেহেতু তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগ উঠেছে সেহেতু প্রধান বিচারপতির পদে তার প্রশাসনিক ও বিচারিক দায়িত্ব পালন প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

এ অবস্থায় প্রধান বিচারপতি হিসেবে তার দায়িত্ব পালনের অভিপ্রায়ও সমীচীন হবে না। (সূত্র : ইত্তেফাক)

নিউজ ডেস্ক
: আপআপডেট, বাংলাদেশ ১২ : ১৫ পিএম, ৬ নভেম্বর, ২০১৭ সোমবার
এইউ

Share