বাংলাদেশে এইডস সচেতনতা এবং স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সাহায্য গত কয়েক বছরে অনেকটাই কমে এসেছে। আগে বছরে বৈদেশিক সাহায্য পাওয়া যেত ১৪ মিলিয়ন ডলার, এখন দুই বছরে পাওয়া যাচ্ছে ১২ মিলিয়ন ডলার। বৈদেশিক সহায়তা কমে যাওয়ায় এইডস সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়তে পারে।
গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে স্বাস্থ্য ও পরিবার মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন। এ সময় মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বিমান কুমার সাহা ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এইচআইভি মোকাবেলায় নানা বাধার কথা তুলে ধরেন।
এদিকে বেসরকারি সংস্থা কেয়ার বাংলাদেশ-এর স্বাস্থ্য বিষয়ক পরিচালক ড. জাহাঙ্গির হোসাইন জানিয়েছেন, এইচআইভি প্রতিরোধে ২০১৪ এবং ২০১৫ সালের জন্য গ্লোবাল ফান্ডের অনুদানের পরিমাণ ছিল ২২ মিলিয়ন ডলার। ২০১৬ এবং ২০১৭ সালের জন্য যা কমে এসেছে ১২ মিলিয়ন ডলারে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে এইডস সংক্রমণের হার এবং আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা কম হওয়ার কারণেই আন্তর্জাতিক অনুদানের পরিমাণ কমছে।
সরকারি হিসেবে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে বর্তমানে এইচআইভি আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা জনসংখ্যার এক শতাংশের কম। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এদেশে এখনও ব্যাপকভাবে এইডসের ঝুঁকি রয়েছে। তা সত্ত্বেও দেশে এখন এ বিষয়ক সচেতনতা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। বেসরকারি ক্লিনিকের পাশাপাশি সরকারি উদ্যোগে ১২টি সরকারি হাসপাতালে এখন এইডস পরীক্ষা করা যায়।
আজ বিশ্ব এইডস দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে দিবসটি পালন করা হচ্ছে। বিশ্ব এইডস দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পৃথক বাণী দিয়েছেন।
এদিকে বিশ্ব এইডস দিবসে সরকারি ও বেসরকারিভাবে বিভিন্ন কর্মসূচির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। র্যালি, আলোচনাসভা ছাড়াও স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সংবাদপত্রে প্রকাশ করা হয়েছে বিশেষ ক্রোড়পত্র। মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন এনজিওর পাশাপাশি বিএসএমএমইউও র্যালির আয়োজন করেছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে সরকারি হিসাবে এইচআইভি পজিটিভ ৩ হাজার ২৪১ জন। তবে ইউএনএইডসের এর তথ্য অনুযায়ী এ সংখ্যা ৯ হাজার ৫০০। ১৯৮৯ সালে দেশে প্রথম এইচআইভি ধরা পড়ে। এ পর্যন্ত এ রোগে মারা গেছে ৪৭০ জন। আরও ১৩০০ জন এইডসে ভুগছে। সরকার এনজিওর মাধ্যমে ৭টি কেন্দ্রে বিনামূল্যে এইডসের ওষুধ সরবরাহ করছে। বিনামূল্যে এইডসের টেস্ট হচ্ছে অন্তত ১২টি সরকারি হাসপাতালে।
এ বছরের এইডস দিবসের প্রতিপাদ্য ‘এইচআইভি সংক্রমণ ও এইডস মৃত্যু : নয় একটিও আর, বৈষম্যহীন পৃথিবী গড়ব সবাই, এই আমাদের অঙ্গীকার’।
এইডস প্রতিরোধে ১৯৮৮ সাল থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থ্যার উদ্যোগে আজকের দিনটি বিশ্ব এইডস দিবস হিসেবে গুরুত্ব সহকারে উদযাপিত হয়ে আসছে।
নিউজ ডেস্ক ।। আপডেট : ০৩:০৪ পিএম, ০৪ ডিসেম্বর ২০১৫, শুক্রবার
ডিএইচ