প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমানে বাংলাদেশের শতকরা ৯৮ ভাগ মানুষ নিরাপদ পানি পাচ্ছে। জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের সব মানুষের জন্য নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করা হবে।
শনিবার (২৯ জুলাই) রাজধানীতে শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী পানি সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এই মন্তব্য করেন।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত এই সম্মেলনে কয়েকটি দেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘ মেয়াদী সমন্বিত পানি ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনায় আগামী একশ বছর-মেয়াদী ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান-২১০০’ নামে একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। যাতে একশ বছরে পানির প্রাপ্যতা, তার ব্যবহার এবং প্রতিবেশগত বিষয়সমূহ বিবেচনায় রাখা হয়েছে।
এ পরিকল্পনায় ভূ-প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য ও পানির বৈশিষ্টের ভিন্নতা বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশকে ছয়টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এতে সমতল, পাহাড় ও উপকূলীয় এলাকাকে ভিন্ন ভিন্ন পরিকল্পনার আওতায় নেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর্সেনিক ও লবণাক্ততা, ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর হ্রাস, ভূ-উপরিস্থ পানি সংরক্ষণের অপ্রতুলতা, পানির অপচয় এবং শিল্প বর্জ্যসহ নানা কারণে পানি দূষণ, বাংলাদেশে পানির ব্যবহার ও ব্যবস্থাপনায় মূল সমস্যা। তিনি আরো বলেন, এসব সমস্যা মোকাবিলা করতে আমরা স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘ-মেয়াদী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছি।
জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে পানি ব্যবস্থাপনায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন বিষয়ে পৃথক তহবিল গঠনের দাবির কথা আবারো উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গোটা বিশ্বে এ মুহূর্তে ২৪০ কোটি মানুষ স্যানিটেশন সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এছাড়া নিরাপদ পানির অভাবে পৃথিবীতে বছরে ১০ লাখ মানুষ মারা যান, যাদের অধিকাংশই শিশু। প্রতিদিন গড়ে বিশ্বে এক হাজার শিশু বিশুদ্ধ পানির অভাবে প্রাণ হারায়।
পৃথিবীর শতকরা ৯০ ভাগ বিপর্যয়ের জন্য পানিকে দায়ী করে শেখ হাসিনা বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে মৃত্যুর শতকরা ৭০ ভাগই সংঘটিত হয় বন্যা এবং অন্যান্য পানি-সংক্রান্ত দুর্যোগে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশুদ্ধ খাবার পানি শুধু আমাদের বেঁচে থাকার জন্যই নয়, সব প্রাণিকূলেরও বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য। তিনি আরো বলেন, বিশ্বে শতকরা ১ ভাগেরও কম পানিসম্পদ পান করার জন্য নিরাপদ বলে বিবেচনা করা হয়। ফলে এখন পর্যন্ত বিশ্বের প্রায় ১০০ কোটি মানুষের সুপেয় পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা যায়নি।
তিনি বলেন, বিশ্বের প্রায় একশ’ সাত কোটিরও বেশি মানুষ নদী অববাহিকায় বসবাস করে।
নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ ১: ৫০ পিএম, ২৯ জুলাই ২০১৭, শুক্রবার
ডিএইচ