রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘দেশপ্রেম, সামাজিক দায়িত্ববোধ ও পেশাদারিত্বের মাধ্যমে সমৃদ্ধ দেশ গঠনে শিক্ষার্থীদের অবদান রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, দেশপ্রেম ও ত্যাগী মনোভাব ছাড়া ত্রিশ লাখ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত এ মাতৃভূমির সমৃদ্ধি সম্ভব নয়।’
গতকাল মঙ্গলবার ‘বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি’র (বিইউবিটি) তৃতীয় সমাবর্তনে সভাপতির ভাষণে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন। বিকেলে রাজধানীর ‘ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা’য় হয় এ সমাবর্তন।
বিইউবিটি আচার্য ও রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘এটি নিশ্চিত করতে হবে যে বাংলাদেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের কোনো ঠাঁই নেই।’
মুক্তবাজার অর্থনীতির তীব্র প্রতিযোগিতার কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছাতে জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি তথ্য-প্রযুক্তির সার্থক ব্যবহারেও শিক্ষার্থীদের পারদর্শী হতে হবে।’ তিনি দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা করতে বিজনেস এডুকেশনের সঙ্গে তথ্য-প্রযুক্তি যুক্ত করার পরামর্শ দেন।
দেশের অর্থনীতিতে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ সম্পর্কে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বেরসকারি খাতের অংশগ্রহণের ফলে কর্মসংস্থানের নতুন নতুন সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। পাশাপাশি দক্ষ জনবলের চাহিদা বাড়ছে ব্যবসা ও প্রযুক্তিতে।’ তিনি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাঠক্রম ও পাঠদান পদ্ধতি যুগোপযোগী করার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘প্রবৃদ্ধি, মাথাপিছু আয়, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পল্লী অবকাঠামো, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ, তথ্য ও তথ্য-প্রযুক্তি, ব্যবসা-বাণিজ্য, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, নারীর ক্ষমতায়ন, যুব ও ক্রীড়া, সামাজিক নিরাপত্তা, বহুমুখী পদ্মা সেতু নির্মাণ, ব্যাংক, ইনস্যুরেন্স ও আর্থিক খাতের বিকাশসহ বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশ প্রশংসনীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে।’
রাষ্ট্রপতি নতুন গ্র্যাজুয়েটদের বিবেকবান নাগরিক হিসেবে সত্য ও ন্যায়কে সমুন্নত রাখার আহ্বান জানান। আহ্বান জানান ডিগ্রির মর্যাদা, ব্যক্তিগত সম্মানবোধ ও নৈতিকতাকে ভূলুণ্ঠিত না করারও। তিনি গ্র্যাজুয়েটদের বলেন, ‘অসত্যের কাছে আপস করবে না। পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকো না কেন, দেশ ও জনগণের কথা ভুলবে না।’
ভাষণের শুরুতে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি।
এবার সমাবর্তন বক্তা ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘একবিংশ শতাব্দীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকায় একটি আমূল পরিবর্তন এসেছে। পাশ্চাত্যের অনেক পণ্ডিত মনে করেন, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান দায়িত্ব বৈশ্বিক কর্মী সৃষ্টি করা, নতুন জ্ঞান সৃষ্টিতে নিয়োজিত না থাকা। আমি এই ধারণাকে পুরোপুরি সমর্থন করি না। আমি মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান দায়িত্ব নতুন জ্ঞান সৃষ্টির পাশাপাশি বৈশ্বিক কর্মী সৃষ্টি করা।’
চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান, বিইউবিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এ এফ এম সারোয়ার কামাল ও উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আবু সালেহ বক্তব্য দেন।
(বাসস)
নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১০: ৪৫ এ.এম, ১৪ ফেব্রুয়ারি২০১৮,রোববার ।
এএস.