সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মেধাবী ছাত্রী সুমি। পারিবারিক সমস্যা থাকার কারণে ৯ম শ্রেণিতেই বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয় তাকে। বিদেশ ফেরত ভালো পাত্র জেনে পরিবারের অভিভাবকরা বিয়ে দিয়ে দেন সুমিকে। কিন্তু কয়েক মাসের মাথায় এক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায় সুমির বর।
একদিকে পড়ালেখা বন্ধ অন্যদিকে শিশু বয়সেই বিধবা হওয়া। সুমির চোখে মুখে তখন শুধুই অন্ধকার। বাবার বাড়িতে চলে আসলেও উভয় পরিবারের সম্মতিতে আবারো বিয়ে হয় ঐ একই পরিবারের ছোট ছেলে ( সুমির দেবর) সঙ্গে। দুই মাসের মাথায় সে সংসারও ভেঙে যায়। ভেজা চোখ নিয়ে বাবার বাড়িতে আবারো ফিরে আসতে হয় তাকে। সেই থেকে জীবনযুদ্ধ মেধাবী সুমির। সময়ের ব্যবধানে বাল্যবিয়ের পিঁড়িতে বসা স্বামী হারা সুমি বন্ধ হয়ে যাওয়া পড়ালেখাটা আবারো শুরু করে।
জেএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়া সুমি ছিন্ন হওয়া সংসার জীবন ত্যাগ করে এবার এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে তাক লাগিয়েছে সবাইকে। একটা অভাবী সংসারের মেধাবী মেয়ে সুমির গল্পটা সত্যিই আলাদা যা অন্যকেও আলোকিত করতে পারে। ধানগড়া সদর মহিলা কলেজের মেধাবী মুখ এখন সুমি।
এবার এইচএসসি পরীক্ষায় পৌর এলাকায় ৩ জন জিপিএ-৫ এর মধ্যে সুমি একজন। অভাবী সংসারে বাবা মায়ের কাজের সঙ্গে হাত রেখে সুমি তার স্বপ্নের দিকে এগিয়ে চলছে। বাবা আবদুল্লাহ্ চপ বিক্রেতা ভাই মুদি দোকানি। সংসারের সদস্য সংখ্যা ৬ জন। প্রাইভেট পড়তে না পারলেও সুমি মানবিক বিভাগ থেকে মেধার স্বাক্ষর রেখেছে। উজ্জ্বল করেছে বাবা মায়ের স্বপ্ন। তার এই কৃতিত্বের জন্য বাবা-মা আর শিক্ষকদের সহযোগিতার কথা বারবার স্মরণ করেন।
সুমি বলেন, সামনের দিনগুলোতে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে বাবার কষ্টের সংসারের হাল ধরতে চান। সেই সঙ্গে দেশ সেবায় অভাবীদের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। তার বাবা আবদুল্লাহ্ বলেন, বাল্যবিয়ে দিয়ে আমি আমার মেয়েকে যে ক্ষতি করেছি তা হয়তো তাকে আমি ফিরিয়ে দিতে পারবো না। তবে তার কৃতিত্ব আমাকে আপ্লুত করেছে।
ধানগড়া মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা রুবাই বলেন, ‘সুমি ছোটকাল থেকেই মেধাবী। তার ফলাফলে আমরা খুবই আনন্দিত।’
নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ ২: ০০ পিএম, ৫ আগস্ট ২০১৭, শনিবার
ডিএইচ