সারাদেশ

স্ত্রীর পাশে সমাহিত হলেন দেওয়ানবাগীর পীর

রাজধানীর আরামবাগে অবস্থিত দেওয়ানবাগী পীর সৈয়দ মাহবুবে খোদার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের পেছনে বাবে মদিনা দেওয়ানবাগ শরিফে তার স্ত্রীর পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।

এর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে আরামবাগে দেওয়ানবাগীর আঁখড়া বাবে রহমতে তার নামাজে জানাজা হয়। জানাজার পর বীরমুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।

গত সোমবার ভোর ৬টা ৪৮ মিনিটে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান দেওয়ানবাগী পীর। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭০ বছর।

মঙ্গলবার সকাল থেকেই ভক্ত ও মুরিদ ভিড় জমান আরামবাগ দরবারে। দুপুর আড়াইটার দিকে আরামবাগ দরবারের পাশের সড়কে জানাজা হয়। এতে তার ভক্তরা অংশ নেন। জানাজার আগে পীর দেওয়ানবাগীর ওছিয়ত অনুযায়ী ছেলেদেরকে তার দরবারের ইমাম করার ঘোষণা দেওয়া হয়।

সেখানেই তাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। এ সময় জেলা প্রশাসক (ডিসি) শহীদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। এরপর দেওয়ানবাগীর লাশ একটি ফুল সজ্জিত ট্রাকে মতিঝিলের বাবে মদিনায় নিয়ে যাওয়া হয়।

দেওয়ানবাগ শরিফের গণমাধ্যম সমন্বয়কারী সৈয়দ মেহেদী হাসান বলেন, ওনার (দেওয়ানবাগী) চার ছেলেকে দরবার শরিফের ইমাম করা হয়েছে। তবে মেজ ছেলে সৈয়দ ইমাম ড. আফছান কুদরত-ই খুদার নেতৃত্বে তারা চলবেন। তার জানাজায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুরিদরা এসেছেন। ওনার স্ত্রী ২০০৯ সালে মারা যান। তাকে বাবে মদিনায় দাফন করা হয়, ওছিয়ত অনুযায়ী তাকে (দেওয়ানবাগী) তার স্ত্রীর পাশে দাফন করা হয়েছে। তিনি বীরমুক্তিযোদ্ধা হওয়ায় জানাজার পর জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়েছে।

১৯৪৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম সৈয়দ আবদুর রশিদ সরদার। মা সৈয়দা জোবেদা খাতুন। ছয় ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। নিজ এলাকার তালশহর কারিমিয়া আলিয়া মাদরাসা থেকে ফাজিল পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধে দেওয়ানবাগী পীর ৩ নম্বর প্লাটুন কমান্ডার হিসেবে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করেন। যুদ্ধ শেষে তিনি সেনাবাহিনীর ১৬ বেঙ্গল রেজিমেন্টে রিলিজিয়াস টিচার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তিনি মোট ১১টি দরবার ও শতাধিক খানকাহ প্রতিষ্ঠা করেন। অর্জন করেন বিপুল পরিমাণ সম্পদ।

ঢাকা ব্যুরো চীফ,২৯ ডিসেম্বর ২০২০

Share