Home / কৃষি ও গবাদি / দু’মন্ত্রীকে আদালতের জরিমানা : মন্ত্রিত্ব না থাকা নিয়ে গুঞ্জন
দু’মন্ত্রীকে আদালতের জরিমানা : মন্ত্রিত্ব না থাকা নিয়ে গুঞ্জন

দু’মন্ত্রীকে আদালতের জরিমানা : মন্ত্রিত্ব না থাকা নিয়ে গুঞ্জন

আদালত অবমাননায় খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের নিশঃর্ত আবেদন খারিজ করে দিয়ে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

জরিমানার টাকা ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতাল ও কিডনি হাসপাতালে জমা দিতে বলেছেন আদালত। জমা না দিলে সাত দিন বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে এই দুই মন্ত্রী।

রোববার (২৭ মার্চ) শুনানি শেষে এ আদেশ দেন প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা। এসময় দুই মন্ত্রীও আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

আজ (রোববার) সকাল ৯টা ২৭ মিনিটে এজলাসে বসেন আদালত। সকাল ৯টার আগেই আদালতে উপস্থিত হন দুই মন্ত্রী। এরপর প্রায় ৩০ মিনিট মনোযোগ দিয়ে দুপক্ষেরই যুক্তিতর্ক শোনেন আদালত। এরপর এজলাস ছেড়ে ভেতরে গিয়ে পরামর্শ করে এসে এ রায় ঘোষণা করেন।

এর আগে সকাল ৮টা ৩৭ মিনিটে আদালত অবমাননার অভিযোগের ওপর শুনানিতে অংশ নিতে আদালতে হাজির হন এই দুই মন্ত্রী। সুপ্রিম কোর্টের মূল গেট দিয়ে এই দুই মন্ত্রী নিজস্ব প্রটৌকল নিয়ে প্রবেশ করেন। এসময় তাদের গাড়ি বহরে প্রায় সাত-আটটি গাড়ি দেখা গেছে।

অবশ্য তারা আগেই আইনজীবীর মাধ্যমে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে আদালতে আবেদন করেছেন। সে আবেদনে সন্তুষ্ট নয় আপিল বিভাগ। আজ (রোববার) আবারো এই দুই মন্ত্রীকে ব্যাখা দিতে হবে। এজন্য আপিল বিভাগ দুই মন্ত্রীর আইনজীবীদের আদালতে আসার সময় ভালো করে প্রস্তুতি নিয়ে আসতে বলেছেন।

খাদ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পরপরই মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক প্রধান বিচারপতির মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানান। যেটি গণমাধ্যমে এসেছিল।

প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে এই দুই মন্ত্রীর বক্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে তুমুল আলোচনার জন্ম দেয়। মীর কাসেমের আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন মন্ত্রীদের বক্তব্যকে ‘ঔদ্ধত্যপূর্ণ’ আখ্যায়িত করে বলেন, ‘এটা বিচার বিভাগের ওপর এক ধরনের নগ্ন হস্তক্ষেপ।’

দুই মন্ত্রীর এ ধরনের মন্তব্য এড়ানোর পাশাপাশি সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছিলেন, ‘বিতর্কিত বক্তব্যে যুদ্ধাপরাধের বিচারই প্রশ্নবিদ্ধ হবে।’

এরপর ৮ মার্চ মীর কাসেমের আপিলের চূড়ান্ত রায় ঘোষণার আগে প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা আপিল বিভাগের সব বিচারককে নিয়ে বৈঠকে বসে দুই মন্ত্রীকে তলব করেন। এবং তাদের দেয়া বক্তব্যের ব্যাখাও চান আপিল বিভাগ। ওই বক্তব্যের কারণে তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার কার্যক্রম কেন শুরু করা হবে না- তা ১৪ মার্চের মধ্যে জানাতে বলা হয়। সেই সঙ্গে দুই মন্ত্রীকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।

এদিকে মীর কাসেম আলীর আপিল মামলার রায়ে ট্রাইব্যুনালের দেয়া ফাঁসির রায়ই বহাল রাখা হয়েছে। আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী ১৪ মার্চ সকালে আদালতে হাজির হন। অন্যদিকে বিদেশ সফরে থাকা খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের আইনজীবী আদালতে হাজির হওয়ার বিষয়ে সময়ের আবেদন করেন।

এরপর আপিল বিভাগ দুই মন্ত্রীর হাজিরার জন্য ২০ মার্চ নতুন দিন ধার্য করে। ২০ মার্চ তারা দু’জনই আদালতে উপস্থিত হয়ে আইনজীবীদের মাধ্যমে তাদের দেয়া বক্তব্যের জবাব দেন। জবাবে সন্তুষ্ট না হয়ে আদালত আজ (২৭ মার্চ) দুই মন্ত্রীকে পুনরায় ব্যাখা পেশ করার আদেশ দিয়েছিলেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আজ আদালতে আসেন দুই মন্ত্রী।

এদিকে আদালত অবমাননার দায়ে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক দণ্ডিত হওয়ায় তাদের মন্ত্রিত্ব থাকছে কিনা, কিংবা মন্ত্রিত্বের শপথ ভঙ্গ হয়েছে কিনা তা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর গুঞ্জন।

তাদের মন্ত্রিত্ব থাকবে কিনা এমন প্রশ্নে বার কাউন্সিলের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং কামরুল ইসলামের আইনজীবী বাসেত মজুমদার বলেন, ‘তাদের মন্ত্রীত্বের শপথ ভঙ্গ হয়েছে কিনা সেটি আদালত এখনো ক্লিয়ার করেনি। পূর্ণাঙ্গ রায় বের হওয়ার আগে এ ব্যাপারে মন্তব্য করা যাচ্ছে না।’

এ প্রসঙ্গে আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘আদালত তাদের কনভিক্টেড বলেছেন, কিন্তু পুর্ণাঙ্গ রায়ের আগে এ বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না।’

এ বিষয়ে মোজাম্মেল হকের আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিকুল হকও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। ফলে বিষয়টি নিয়ে আইনি ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে, যা হয়তো কাটবে পূর্ণাঙ্গ রায়েই। (বাংলামেইল)

নিউজ ডেস্ক : আপডেট ০৪:০৯ পিএম, ২৭ মার্চ ২০১৭, রোববার
ডিএইচ