চাঁদপুর

দু’পথশিশুর দায়িত্ব নিলেন চাঁদপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চাঁদপুর ।

চাঁদপুরে কুড়িয়ে পাওয়া দুই পথশিশুর অভিভাবকের দায়িত্ব নিলেন সিনিয়র জুডিশিয়্যাল ম্যাজিস্ট্রেট মো. শওকত হোসাইন। ১২ বছর বয়সী শামীম ও তার ছোট ভাই ৯ বছর বয়সী সবুজের দায়িত্ব নেন তিনি।

হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ বুধবার (১২ আগস্ট) বিকেলে আদালতে এ দু’শিশুকে উপস্থিত করলে শিশু আইন-২০১৩ এর ধারার তাদের বৈধ অভিভাবকের কাছে ফেরত দিতে হয়। এমনকি পিতা-মাতার অবর্তমানে বর্ধিত পরিবারের কাছে ফেরত দিতে হয়। বর্ধিত পরিবারের অনুপস্থিতিতে কোন উপযুক্ত ব্যক্তির কাছে রাখা যেতে পারে। এমন কোন ব্যক্তি পাওয়া না গেলে তখনই সরকারি কোন প্রতিষ্ঠানে প্রেরণ করা যায়।

এরই আলোকে সিনিয়র জুডিশিয়্যাল ম্যাজিস্ট্রেট মো. শওকত হোসাইন নিজে একজন উপযুক্ত ব্যক্তি হিসেবে তাদের দায়িত্বগ্রহণে আগ্রহ প্রকাশ করেন। শামীম ও সবুজ দু’ভাই তার আগ্রহে সাড়া দিলে ম্যাজিস্ট্রেট নিজ দায়িত্বে তাদের নিয়ে যান।

শিশুরা জানায়, তারা ৩ ভাই ছিল। ঢাকা গুলিস্তানের পাশে একটি বস্তিতে বাস করতো। বছর তিনেক আগে হঠাৎ একদিন তাদের মা ছোট ভাইকে নিয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। তার মাসখানেক পর বাবা মারা যায়। কখনো দাদা বা নানার বাড়ি যায়নি তারা। তবে বাবার কাছে শুনেছিল দাদার বাড়ি মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুরে। আর নানার বাড়ি শরীয়তপুর জেলায়।

তাদের বাবা ঢাকায় ফেরি করে মাছ বিক্রি করতো। মা নিরুদ্দেশ ও বাবা মারা যাবার পর সোহেল নামে এক চাচা বাসার মালামাল নিয়ে চলে যায়। কিন্তু তাদের নেয়নি সে।

পরে সদরঘাটে পানির বোতল কুড়িয়ে মসজিদের টেপ থেকে পানি ভরে বিক্রি করে, ফুটপাতের দোকান থেকে খাবার কিনে খেতো এবং রাতে দু’ভাই বিভিন্ন লঞ্চে ঘুমাতো। এভাবেই গত তিন বছর সদরঘাটে কাটিয়েছে তারা।

কোনদিন তারা পোলাও খায়নি। গায়ের পোশাক ছাড়া তাদের আর কিছুই নেই। কয়েকদিন আগে তারা লঞ্চে করে চাঁদপুর চলে আসে এবং ট্রেনে করে হাজীগঞ্জ চলে যায়। হাজীগঞ্জের বাসিন্দা ‘বাচ্চু মিয়া’ তাদের উদ্দেশ্যহীন ঘোরাফেরা করতে দেখে নিজ হেফাজতে হাজীগঞ্জ থানায় সোপর্দ করেন। পরে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ তাদের আদালতে উপস্থাপন করে।

Share